Basirhat: ঘড়িতে রাত ১২ টা, পাত্রীর কপালে সিঁদুর পরানোর কয়েক মুহূর্ত বাকি, হঠাৎ আসরে হাজির পুলিশ
Child Marriage Act: বয়স কত জিজ্ঞেস করতেই ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেল পাত্রপক্ষ। সোজা থানায় নিয়ে গেল পুলিশ।
বসিরহাট: বিয়ে করছেন। ভালোও বাসেন দু’জন দু’জনকে। এ পর্যন্ত তো সব ঠিকই ছবি। বাড়ির অমতেও নয়, সবার আশীর্বাদ নিয়েই চলছিল বিয়ে। কণের (Bride) পরণে বেনারসী। পাত্রের (Groom) মাথায় টোপস। বিয়ের আয়োজন একেবারে সম্পূর্ণ। সকাল থেকে আচার অনুষ্ঠানও হয়েছে নিয়ম মেনেই। পাত্রীর কপালে সিঁদুর পরানোর রীতিটুকুই শুধু বাকি। আচমকা বিয়ের (Wedding) আসরে হাজির পুলিশ। পাত্র, পাত্রের বাবা সবাইকে সোজা ভ্যানে টেনে তোলে পুলিশ (Police)। নিয়ে যায় থানায়। হবু বউয়ের বয়স কত? এমন প্রশ্নে উত্তর নেই পাত্রের। তিনি নাকি জানেন না যাঁকে বিয়ে করতে চলেছেন তাঁর বয়স ঠিক কত!
বসিরহাট মহকুমার হাসনাবাদ থানার টাকি পুরসভার ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের বিনোদ কলোনির ঘটনা। বছর ১৬-র নাবালিকাকেই বসানো হয়েছিল বিয়ের পিঁড়িতে। ২০২১-এই মাধ্যমিক উত্তীর্ণ হয় ওই ছাত্রী। ওই নাবালিকার সঙ্গে বিয়ে হচ্ছিল বছর ২৪-এর বাবুসোনা মন্ডলের। পেশায় ইঁট ভাটার শ্রমিক বাবুসোনা। তাঁর বাড়ি ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের বিনোদ কলোনিতে। ওই যুবকের সঙ্গে ছাত্রীর বিয়ে হচ্ছিল শুক্রবার গভীর রাতে।
শাস্ত্র মতে সকাল থেকে গায়ে হলুদ, মেহেন্দি ও গঙ্গা বরণের অনুষ্ঠান শেষ হয়েছে সকালেই। অন্যদিকে প্যান্ডেল, আলোর ব্যবস্থাও হয়েছে। ভুরিভোজের জন্য ছিল সাদা ভাত, মুড়োঘন্ট, বেগুনি, মাংস, চাটনি, পাপড়, দই ও রসগোল্লা। সে সব আয়োজনও তখন শেষ। ঘড়ির কাঁটা যখন ঠিক ১২টা, বিয়ের পিঁড়িতে উঠেছে নাবালিকা ও ওই যুবক। শুভদৃষ্টি, মালাবদল, হস্তবন্ধনও শেষ হয়েছে। পুরোহিত সিঁদুর দান করার জন্য চূড়ান্ত প্রস্তুতি সেরে ফেলেছেন। নাবালিকার কপালে সিঁদুর ওঠার আগেই বিয়ের আসরে হাজির হাসনাবাদ থানার পুলিশ আধিকারিকরা।
বিয়ের আসরে পুলিশের প্রশ্ন, ‘বয়স কতো?’ তখনই বেরিয়ে এল ঝুলি থেকে বিড়াল। নাবালিকার বয়স আসলে ১৬। বিয়ে দেওয়া যাবে না। আইনি জালে আটকে গেল বিয়ে। পাত্রীর বাবা সহ পাত্র-পাত্রীকে আটক করে পুলিশ থানায় নিয়ে যায়। পাশাপাশি পাত্রীর বাবা অজিত সরকারের কাছ থেকে মুচলেকা নেওয়া হয়, মেয়ে প্রাপ্তবয়স্ক না হওয়া পর্যন্ত তিনি বিয়ে না দেন। পাশাপাশি তার পড়াশোনার সবরকম ব্যবস্থা করা হবে বলে প্রশাসনের তরফ থেকে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।
পাত্রীর বাবার দাবি, তাঁর মেয়ের বিয়ের দেওয়ার মতো সামর্থ্য নেই। পড়াশোনা করানোর মতো আর্থিক অবস্থাও নেই। এই ক্ষেত্রে নিজেরাই একে অপরকে পছন্দ করে বিয়ে করছিল। অজিত বাবুর দাবি, তিনি চেয়েছিলেন নিখরচায় মেয়ের বিয়েটা হয়ে যাক। তবে এ দিনের ঘটনার পর আপাতত তিনি বিয়ে দেবেন না বলে জানিয়েছেন। সরকারি প্রকল্প কন্যাশ্রী বা রূপশ্রী-র সুবিধা পাওয়া সত্ত্বেও কেন এখনও এ ভাবে নাবালিকাকে বিয়ে দেওয়া হচ্ছে, তা নিয়েই আরও একবার প্রশ্ন চিহ্ন উঠে গেল।
আরও পড়ুন: Covid 19: হাত কেটে বাদ দিতে হয় করোনা আক্রান্তের, ৫ লক্ষ ক্ষতিপূরণের নির্দেশ হাসপাতালকে