বড়দিনে প্রাক্কালে সেজে উঠছে আসানসোলের স্যাক্রেড হার্ট ক্যাথেড্রাল। প্রায় দেড়শো বছরের পুরানো এই গির্জায় শুরু হয়েছে প্রার্থনা ও ক্যারল। ক্যারল অর্থাৎ বড়দিনের আগমনী গান শুরু হয়েছে পাড়ায় পাড়ায়। গির্জাতেই তাই সাজো সাজো রব। কেক, পিকনিক আর নতুন বছরের আগমনীর উচ্ছ্বাসে আমোদিত এখন আসানসোল। আলো ঝলমলে গোশালা, ক্রিসমাস ট্রি, স্লেজ় গাড়ি, জিঙ্গল বেলে সেজে উঠেছে চার্চগুলি।
শুধু নিজেদের মধ্যে আমোদ প্রমোদ নয়, দুঃস্থদের শীতবস্ত্র প্রদান, ও ঢালাও খাওয়ানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। বড়দিনের শেষ একদিন আগে বেগুনি রঙের মোমবাতি জ্বালানো হয় এই গির্জায়। আর বড়দিনের আগের চারটে দিন চার রঙের মোমবাতি জ্বালানো হয়। চারটি ভিন্ন রঙের মোমবাতির জন্য রয়েছে আলাদা বার্তা। ওইদিন থেকেই শুরু হয়েছে বড়দিনের আগমনী গান।
খ্রিস্ট ধর্মের প্রচারে দেড়শো বছর আগে বেলজিয়াম থেকে এসেছিলেন এক পরিব্রাজক। রেলের কাছ থেকে খানিকটা জমি নিয়ে ১৮৭৬ সালে আসানসোলে একটি গির্জা গড়ে তোলেন তিনি। শুধু এই খনি-শিল্পাঞ্চলের প্রথমই নয়, জেলার অন্যতম প্রাচীন গির্জা এই স্যাক্রেড হার্ট ক্যাথেড্রাল।
অপরদিকে, আসানসোল রামকৃষ্ণ মিশনে পালিত হল ভগবান যীশু খ্রীষ্টের জন্মদিন। বড়দিনের পূর্ব সন্ধ্যায় আসানসোল রামকৃষ্ণ মিশনের মূল মন্দিরে সন্ধ্যারতির পর যীশুর জন্মদিনের আয়োজন করা হয়।
ভগবান যীশুর জীবনী আলোচনা ও বাণী পাঠ চলে। পাশাপাশি পরিবেশিত হয় গান।
কথিত আছে, ঊনবিংশ শতকের একেবারে শেষদিকে রামকৃষ্ণদেবের প্রয়াণের পর স্বামী বিবেকানন্দ তাঁর কয়েকজন গুরুভাইয়ের সঙ্গে হুগলির আটপুরে প্রেমানন্দ মহারাজ বা বাবুরাম মহারাজের বাড়িতে যান। সেখানে এক সন্ধ্যায় মহারাজের বাড়ির বাগানে ধুনো জ্বালিয়ে যীশুর বাণী এবং জীবনী শোনান তিনি।
ঘটনাচক্রে সেদিনটি ছিল বড়দিনের আগের দিন বা ‘ক্রিসমাস ইভ’। পরে বেলুড় মঠ স্থাপিত হলে বড়দিনের আগের সন্ধ্যায় যীশুর পুজো করার রীতি বজায় রাখে বেলুড় মঠ।
এদিন সেই রীতি বজায় রেখে আসানসোল রামকৃষ্ণ মিশনে পালিত হল যীশুর জন্মদিন। বহু ভক্তের সমাবেশ হয়।