Theft Case: ‘মজা এল’, চুরির পর গৃহকর্তাকে মেসেজ চোরের; কাণ্ড দেখে চোখ কপালে পুলিশের

Theft Case: পরিবারের দাবি, আলমারি থেকে ৮ হাজার টাকা নগদ এবং প্রায় ৬ লক্ষ টাকা মূল্যের গয়না চুরি গিয়েছে। পালানোর সময় সম্ভবত দু-একটা রুপোর গয়না পড়ে যায়।

Theft Case: 'মজা এল', চুরির পর গৃহকর্তাকে মেসেজ চোরের; কাণ্ড দেখে চোখ কপালে পুলিশের
অলংকরণ- TV9 বাংলা
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jan 30, 2023 | 8:07 PM

আসানসোল: ফাঁকা বাড়ি পেয়ে চোরেদের তাণ্ডব। সে আর এমন কী নতুন ঘটনা! কিন্তু সেই চুরির পর এমন সব ঘটনা ঘটছে, যা দেখে চক্ষু চড়কগাছ পুলিশকর্তাদের। তাঁরাও এমন ঘটনা আগে দেখেছেন বলে মনে করতে পারছেন না। মেসেজ পাঠাচ্ছেন ‘চোর’। তাও আবার প্রাইভেট নম্বর থেকে। নিজেকে নির্দ্বিধায় চোর বলে পরিচয় দিচ্ছেন সেই ব্য়ক্তি। তাঁর নম্বর ট্র্যাক করা যাবে না বলে চ্যালেঞ্জও ছুঁড়ে দিচ্ছেন তিনি। এমনই ঘটনা ঘটন আসানসোলের হীরাপুরে।

কী ভাবে হল চুরি?

আসানসোলের হীরাপুর থানার সূর্যনগর বাসস্ট্যান্ডের কাছে বাড়ি পরিবহন ব্যবসায়ী রাজেশ গুপ্তার। পরিবার নিয়ে সেখানেই থাকেন তিনি। ওই ব্যবসায়ী জানান, গত ২৪ জানুয়ারি ঘণ্টা দুয়েকের জন্য বাড়ি ফাঁকা ছিল। পরিবারের লোকেরা এক আত্মীয়ের বিয়ের অনুষ্ঠানে। দুপুর ১২ টা বারোটা নাগাদ গিয়ে দুপুর ২ টো নাগাদ ফিরে আসেন তাঁরা।

রাজেশ বাবুর বাবা প্রথম বাড়িতে ঢুকে দেখেন তিনটি ঘরে প্রবেশের জন্য পিছনের দরজাটি ভাঙা হয়েছে। সেখান দিয়ে চোরেরা একটি ঘরে ঢুকে আলমারিতে খোঁজ চালিয়েছে। পরিবারের দাবি, ওই আলমারি থেকে ৮ হাজার টাকা নগদ এবং প্রায় ৬ লক্ষ টাকা মূল্যের গয়না চুরি গিয়েছে। পালানোর সময় সম্ভবত দু-একটা রুপোর গয়না পড়ে যায়। যেগুলি বাড়ির লোকেরা পরে উদ্ধার করেন।

‘ভালই মাল পেয়েছি’, পরপর মেসেজ মালিকের ফোনে

চুরির দিন রাত ঠিক ৯ টা ৩ মিনিট থেকে ৯ টা ৬ মিনিটের মধ্যে পাঁচখানা মেসেজ আসে রাজেশ গুপ্ত নামে ওই ব্যবসায়ীর ফোনে। তাতে লেখা ছিল, ‘বেশ মজা পেলাম’। আবার শুক্রবার রাত ৭টা ৪ মিনিট থেকে ৭টা ৯ মিনিটের মধ্যে বেশ কয়েকটি মেসেজ আসে। প্রথম মেসেজে লেখা ছিল, ‘মজা এল চুরিটা করে।’ ৭ টা ৫ মিনিটে দ্বিতীয় মেসেজ, লেখা ছিল ‘ভালই মাল পেয়েছি, ছ লাখ টাকার।’ আর একটি মেসেজে লেখা ছিল, ‘তুই নম্বরটা ট্র্যাক করতে পারবি না।’ তারপরের মেসেজ লেখা, ‘আমি তোর পুরো অটোবায়োগ্রাফি জানি।’

শনিবার লিখিতভাবে অভিযোগ দায়ের হয় হীরাপুর থানা। ওসি প্রসেনজিৎ রায় নিজে ঘটনাস্থলে যান এবং তদন্ত শুরু করেন। এটা শুধু বাড়ির মালিক নয় খোদ পুলিশকেও চোর চ্যালেঞ্জ করেছে বলে মনে করছে পুলিশ। স্থানীয় নিমাই মুদি নামে এক বাসিন্দা জানিয়েছেন, তিনি চোরকে পালাতে দেখেছেন। তাঁকে ধরেও ফেলেছিলেন। ধস্তাধস্তি হওয়ার পর একটি বালা ও সোনার হার ফেলে পালিয়ে যায় চোর। পুলিশ ওই ব্যক্তিকেও জিজ্ঞাসা করছে।

কী এই ভার্চুয়াল মেসেজ?

সাইবার বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, একটি বিশেষ ধরনের অ্যাপ ডাউনলোড করে তার মাধ্যমে মেসেজ পাঠানো হয়। সেই মেসেজ কোন নমবার থেকে আসছে, তা সাধারণত ধরা যায় না। এ ক্ষেত্রে পুলিশ আসানসোলের সাইবার আধিকারিকদেরও ও হোয়াটসঅ্যাপ কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে চিঠি দিয়ে তদন্ত শুরু করেছে। বাড়ির বাসিন্দাদের সঙ্গেও কথা বলেছেন পুলিশ আধিকারিকরা। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, যে পরিবারে চুরি হয়েছে তাদের পরিচিত কোনও বাসিন্দা এই ধরনের অপরাধ করে থাকতে পারে। তবে এক আধিকারিক বলেন, ‘অতীতে কখনও চোরেদের এমন ভার্চুয়াল ফোন ব্যবহার করে মেসেজ পাঠানোর ঘটনা আমার জানা নেই।’