Susanta Ghosh: মঞ্চে ‘সুশান্ত দা’, বৃষ্টি মাথায় নিয়েই ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে ভাষণ শুনলেন বাম-কর্মীরা

Paschim Medinipur: পশ্চিম মেদিনীপুরের চন্দ্রকোনার ডিঙ্গাল গ্রাম। এক সময় বাম দুর্গ হিসেবে পরিচিত ছিল। ২০১১ সালের পালা বদলের পর থেকে যখন সুবজ ঝড় উঠেছিল তখন কর্মসূচি বন্ধ ছিল।

Susanta Ghosh: মঞ্চে 'সুশান্ত দা', বৃষ্টি মাথায় নিয়েই ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে ভাষণ শুনলেন বাম-কর্মীরা
বৃষ্টির মধ্যেই মঞ্চে তখন সুশান্ত ঘোষ (নিজস্ব ছবি)
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jun 18, 2022 | 8:31 PM

পশ্চিম মেদিনীপুর: জেলায়-জেলায় শুরু হয়েছে বর্ষার বৃষ্টি। সেই বৃষ্টিকে মাথায় রেখেই চলল বামেদের সভা। দীর্ঘ ১১ বছর পর প্রচণ্ড বৃষ্টির মধ্যে ভিজে, ছাতা মাথায় এক ঘণ্টা ধরে নেতার বক্তব্য শুনলেন বাম কর্মী-সমর্থকরা।

পশ্চিম মেদিনীপুরের চন্দ্রকোনার ডিঙ্গাল গ্রাম। এক সময় বাম দুর্গ হিসেবে পরিচিত ছিল। ২০১১ সালের পালা বদলের পর থেকে যখন সুবজ ঝড় উঠেছিল তখন কর্মসূচি বন্ধ হয়। অবশেষে দীর্ঘ ১১ বছর পর এই ডিঙ্গাল এলাকায় জনসভা করলেন সিপিএমের জেলা সম্পাদক সুশান্ত ঘোষ ।

মেদিনীপুর জেলার চন্দ্রকোনা ১নম্বর ব্লকের ডিঙ্গাল এলাকায় ক্ষীরপাই এরিয়া কমিটির উদ্যোগে এই জনসভার আয়োজন করা হয়। এ দিন, জনসভার শুরুর থেকেই ঝমঝমিয়ে নামে বৃষ্টি। সেই বৃষ্টিকে উপেক্ষা করেই বাম কর্মী সমর্থকরা শুনলেন নেতার বক্তব্য। প্রায় এক ঘণ্টা ধরে ভিজে, ছাতা নিয়ে সুশান্ত ঘোষের বক্তব্য শুনলেন।

এ দিনের প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে অনেক নেতাকর্মী উপস্থিত থাকলেও শুধুমাত্র একজনই বক্তা, তিনি সুশান্ত ঘোষ। সভা থেকে গ্রামের স্থানীয় সমস্যা থেকে শুরু করে কেন্দ্র-রাজ্যের দুর্নীতির একাধিক বিষয়ে সুর চড়িয়েছেন এই বাম নেতা।

সংবাদ মাধ্যমের কাছে বাম আমলের ভাইরাল হওয়া চিরকুটকে ঘিরে যে শোরগোল শুরু হয়েছে, সেই বিষয়েও সংবাদমাধ্যমের কাছে মুখ খোলেন সুশান্ত। তিনি বলেন, ‘সাংসদ, বিধায়ক বা জনপ্রতিনিধি আর সেই জন্যই তাদের কাছে কাকেউ পাঠালে চিঠি লেখে সুপারিশ করতে হয়। রাজ্য শাসকদলের যে দুর্নীতি তার সঙ্গে এই চিরকুটের কোনও সামঞ্জস্যতা নেই। দুর্নীতি সেটাই, যদি কোনও শাসক দলের নেতা সরকারি প্রতিনিধিকে চিঠি লিখে সুপারিশ করে। তাই এটা কোনও দুর্নীতির পর্যায়ে পড়েই না। নিজেদের দুর্নীতিকে ঢাকতে যারা এই ধরনের বিষয় প্রচার করছে তারা মূর্খ ছাড়া অন্য কিছু নয়।’

বস্তুত, নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগ দীর্ঘদিনের। মামলা-মোকদ্দমাও চলছিল অনেক দিন ধরেই। কিন্তু অতি সম্প্রতি মন্ত্রী পরেশ অধিকারীর মেয়ের নিয়োগে বেনিয়মের অভিযোগ ওঠায় নতুন করে শুরু হয়েছে চর্চা। এসএসসি থেকে প্রাথমিক, নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে কার্যত উত্তাল রাজ্য-রাজনীতি। এরই মধ্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল বাম আমলের একটি চিঠি। গ্রুপ ডি পদে চাকরি দেওয়ার জন্য আবেদন জানানো হয়েছে ওই চিঠিতে। যদিও ভাইরাল হওয়া চিঠির সত্যতা যাচাই করেনি Tv9 বাংলা, তবে এই চিঠিকে হাতিয়ার করে বামেদের বিরুদ্ধে তোপ দাগতে শুরু করেছে শাসক দল।

ভাইরাল হয়েছে সিপিএমের লেটার হেডে লেখা একটি চিঠি, যেটি আসলে চাকরির সুপারিশ। চিঠিটি দেখা বোঝা যাচ্ছে, সেটি ২০০৮ সালের ২৭ ডিসেম্বর লেখা হয়েছিল। ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি (মার্কসবাদী) পাচরা লোকাল কমিটির প্যাডে লেখা সেই চিঠি। বাম নেতা খগেন্দ্রনাথ মাহাতকে চিঠিটি লেখা হয়েছে।

চিঠিতে লেখা রয়েছে, ‘আমি শ্রী মোহিতলাল হাজরা, গ্রাম পালজাগুল, পোস্ট জাগুল।’ নিজেকে দুঃস্থ পরিবারের সন্তান ও বামপন্থী বলে পরিচয় দিয়েছেন চিঠির প্রেরক। তিনি জানিয়েছেন দীর্ঘদিন ধরে বামপন্থী আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত তিনি। কারও চাকরির সুপারিশের কথা বলে তিনি লিখছেন, ‘একে আপনার কাছে পাঠালাম। ধেড়ুয়া অঞ্চল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের গ্রুপ ডি পদে যে লোক নেওয়া হবে, সেই বিষয়ে যাতে একে নেওয়া যায় তার জন্য যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণে অনুরোধ করছি। পরে আপনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে নেব।’

কার চাকরির জন্য সুপারিশ করছেন, তা বোঝা না গেলেও এটুকু স্পষ্ট যে, চাকরি যাতে দেওয়া যায়, সেই জন্যই বাম নেতাকে চিঠি লিখেছেন তিনি। ২০০৮ সাল অর্থাৎ তখনও রাজ্যে ক্ষমতায় বামেরা। সেই সময়েই ওই চিঠি লেখা হয়েছিল বলে দাবি শাসক দলের। এদিন এই চিঠি নিয়েই মুখ খোলেন বাম এই নেতা।