TMC Candidate Sharmila Sarkar: শোভন থেকে বেচারাম মান্না সকলেই যান তাঁর কাছে, ফোন করেন ‘পি কে সাহেবও’! জানেন তৃণমূল প্রার্থী শর্মিলা কাদের মনের চিকিৎসা করেন?
TMC Candidate Sharmila Sarkar: "আমরা ২-৩ দিন আগে থেকেই জানতে পারি। শোভন চট্টোপাধ্যায়, বেচারাম মান্না ওঁরা সবাই আমার মেয়ের ওখানে, জামাইয়ের ওখানে যান। আসলে ওঁদের হাউজ় ফিজিশিয়ন। শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় আমার বাড়িতে এসেছিলেন।"
কাটোয়া: লোকসভা নির্বাচনে পূর্ব বর্ধমান কেন্দ্রে তৃণমূল প্রার্থী নতুন মুখ। যাঁকে কোনওদিন দেখা যায়নি রাজনীতিতে। নাম শর্মিলা সরকার। পেশায় মনোরোগ চিকিৎসক। তাঁর বাড়ি কাটোয়ার অগ্রদ্বীপ গ্রামে হলেও তিনি কলকাতার দমদমের বাসিন্দা। যাঁকে নিয়েই এখন চর্চা পূর্ব বর্ধমানে। এই পূর্ব বর্ধমান কেন্দ্রে ২ বারের তৃণমূল সাংসদ রয়েছেন সুনীল মণ্ডল।এবারে রাজনৈতিক পরিচয়হীন ব্যক্তিত্বকে প্রার্থী করে চমক দিয়েছে তৃণমূল।
জানা গিয়েছে, চিকিৎসক তথা প্রার্থী শর্মিলা সরকারের কাছে শোভনদেব বা বেচারাম মান্না চিকিৎসার প্রয়োজনে যান। সেই সূত্রেই তৃণমূলের রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে সুসম্পর্ক তাঁর। অন্য দিকে এবারে পূর্ব বর্ধমান কেন্দ্রে ST সুনাম রয়েছে এমন প্রার্থীর খোঁজ চলছিল তৃণমূল দলে। মাত্র তিনদিন আগেই পূর্ব বর্ধমান কেন্দ্রের প্রার্থী পদের আবেদন আসে শর্মিলা সরকারের কাছে। তাঁর সঙ্গে কথাও হয় রাজ্য তৃণমূল নেতানেত্রীদের। এরপরে সম্মতি জানান শর্মিলা সরকার।
অগ্রদ্বীপে সাধারণ পরিবারে অভাব অনটনকে সঙ্গী করেই এক সময় দিন কেটেছে এই প্রার্থীর, তেমনই জানালেন এলাকার মানুষজন। তাঁদের কথায়, অভাব অনটন থাকলেও পড়াশোনায় মেধাবী ছিল শর্মিলা সরকার।তার পরিবারে সদস্য পঞ্চায়েতের প্রধান থাকলেও এই প্রার্থী কোনদিন রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না। এলাকার সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে এলাকার দলীয় নেতা কর্মীরা এবারের নির্বাচনে ঘরের মেয়ের বিপুল ভোটের ব্যবধানে জয় নিয়ে আশাবাদী।
স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, “ছোটবেলা থেকে দেখছি। পড়াশোনায় দুর্দান্ত। রাজনীতির আঙিনায় তাঁকে কখনও দেখিনি। তবে ওঁর পরিবারের অনেকেই রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। ভালো মেয়ে। ওঁ জিতলেই আমাদের নিশ্চয়ই ভাল হবে। আমরা খুবই আশাবাদী। স্বাস্থ্য পরিষেবার অত্যন্ত ভগ্ন অবস্থা। নিশ্চয়ই তার উন্নয়ন হবে।”
এলাকার এক প্রবীণ বলেন, “নতুন মুখ। নতুন তো সবাই হয়। তবে যোগ্যতাসম্পন্ন। আমার মনে হয়, আগের জনের থেকে বেশি কাজ হবে।”
শর্মিলা সরকারের মা বলেন, “আমরা ২-৩ দিন আগে থেকেই জানতে পারি। শোভন চট্টোপাধ্যায়, বেচারাম মান্না ওঁরা সবাই আমার মেয়ের ওখানে, জামাইয়ের ওখানে যান। আসলে ওঁদের হাউজ় ফিজিশিয়ন। শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় আমার বাড়িতে এসেছিলেন। আমার বাড়িতে থাকা-খাওয়াও করেছিলেন। এখান থেকেই প্রার্থীর নাম পাঠিয়েছিল, সেগুলো মনোনীত হয়নি।”
অত্যন্ত সাদাসিধে মানুষ তাঁর মেয়ের প্রার্থী হওয়া নিয়ে সবটাই বললেন। তিনি আরও বলেন, “আসলে চাকরি ছাড়তে হবে, তারওপর ও এখন অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর। প্রফেসরি পরীক্ষা দিয়েছিল, তার রেজাল্ট বেরোবে। তারজন্যই গড়িমসি করছিল। আর আমার জামাই ভীষণ ভীতু। রাজনীতির ধারে কাছে যান না। আমার মেয়েকে জামাই বলেছে, যদি তুমি পারো, তাহলে যাও। তারপর ওই পিকে সাহেব না কে আছে, ওঁ ফোন করেন। এই করতে ২-৩ দিন কেটে যায়। তারপর আমার মেয়ে না করে দেয়. জানিয়ে দেয় দাঁড়াবে না। তারপর আমার মেয়ের ননদ ফোন করে আমার জামাইকে। ও বোঝায়, বলে এত বড় প্ল্যাটফর্ম। নিজের দোড়গোড়ায় এসেছে এই সুযোগ। মেয়ের ইচ্ছা ছিল। আমি জামাইকে ফোন করলাম, বললাম যেটা বলার সেটা পরিষ্কার করে বলো। আমার জামাই বলে, আমি আপনার মেয়ের পাশে আছি। জামাই হ্যাঁ করাতেই মেয়ে রাজি হয়ে গেল।”