Tamluk: ‘পার্থ-ঘনিষ্ঠ’ পরিচয়ে টাকা তোলার অভিযোগ, রয়েছে পেল্লায় বাড়িও; বেপাত্তা তৃণমূল নেতার নামে হুলিয়া
Tamluk: অতনু গুছাইত কোলাঘাট পঞ্চায়েত সমিতির প্রাক্তন তৃণমূল কর্মাধ্যক্ষ। কোন মামলায় পুলিশ তাঁকে খুঁজছে, কোন মামলায় তাঁর নাম জড়িয়েছে, সেই সব বিষয়ে উল্লেখ করা আছে ওই নোটিসে।
তমলুক: তমলুক সিজিএম আদালতের নির্দেশ হাতে পেয়ে বুধবার কোলা গ্রামে অতনু গুছাইতের তালাবন্ধ প্রাসাদোপম বাড়িতে হুলিয়া জারির নোটিস সেঁটে দিল পুলিশ। নোটিস সাঁটানো হয়েছে এলাকার বিভিন্ন জনবহুল এলাকাতেও। প্রসঙ্গত, অতনু গুছাইত কোলাঘাট পঞ্চায়েত সমিতির প্রাক্তন তৃণমূল কর্মাধ্যক্ষ। কোন মামলায় পুলিশ তাঁকে খুঁজছে, কোন মামলায় তাঁর নাম জড়িয়েছে, সেই সব বিষয়ে উল্লেখ করা আছে ওই নোটিসে। বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার মধ্যে অতনুকে হাজিরা দিতে হবে আদালতে। তমলুকের মহকুমা পুলিশ আধিকারিক সাকিব আহমেদ বলেন, ‘আসামী ও তার পরিবারের কারোর খোঁজ না পেয়ে বাড়ির দেওয়ালে হুলিয়া নোটিশ সাঁটিয়ে দিয়ে এসেছে কোলাঘাট থানার পুলিশ। এরপর যদি অভিযুক্ত উপস্থিত না হয় তাহলে আদালতের নির্দেশে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
পুলিশের তথ্য বলছে, অতনুর বিরুদ্ধে চাকরি দেওয়া সহ আর্থিক প্রতারণার একাধিক অভিযোগ রয়েছে। তার মধ্যে কোলাঘাট থানার খাড়িশা গ্রামের বিমল প্রামাণিক নামে এক ব্যবসায়ী অতনুর বিরুদ্ধে ১৯ লক্ষ টাকা আর্থিক প্রতারণার অভিযোগ করেছিলেন ২০২১ সালের ৩১ জানুয়ারি। কিন্তু অভিযুক্তের বিরুদ্ধে কোলাঘাট থানার পুলিশ কোনও ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে আদালতের দ্বারস্থ হন প্রতারিত বিমল। এরপর তমলুক সিজিএম আদালতের নির্দেশে গতবছর ১৩ এপ্রিল তারিখে প্রতারণার মামলা দায়ের করে কোলাঘাট থানার পুলিশ। অভিযোগে বিমল জানিয়েছিলেন, তাঁর বড় মেয়ে ও শ্যালককে ৩ মাসের মধ্যে গ্রুপ-ডি’র চাকরি পাইয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ১৯ লক্ষ টাকা নিয়েছিল অতনু। পরবর্তীতে চাকরি না পেলে টাকা ফেরত চান বিমল।
বিমলের বক্তব্য, ৯ লক্ষ টাকা করে মোট ১৮ লক্ষ টাকার দু’টো চেক দেয় অতনু। কিন্তু সেই চেকগুলি বাউন্স করে যায়। এরপরই স্থানীয়দের মারফত অতনুর লোক ঠকানোর কারবার সম্পর্কে জানাতে পেরে প্রতারিত হয়েছেন বুঝে আইনের পথ অনুসরণ করেন বিমল। গত ২ নভেম্বর তমলুক আদালত অতনুর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে। কিন্তু তার হদিস পায়নি পুলিশ। স্বভাবতই এবার তাই হুলিয়া জারির নির্দেশ দিল আদালত।
স্থানীয় সূত্রের খবর, অতনু গুচ্ছাইত নিজেকে প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী ঘনিষ্ঠ বলে পরিচয় দিয়ে এলাকার বহু লোকের কাছ থেকে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার নামে প্রচুর টাকা নিয়েছে। কিন্তু চাকরি না মেলায় টাকার জন্য তাগাদা শুরু করেন প্রতারিত চাকরিপ্রার্থীরা। তাই গা ঢাকা দিয়েছে দীর্ঘদিন ধরে। প্রায় দু’বছরেরও বেশি সময় ধরে অতনুর বাড়ি তালা বন্ধ অবস্থায় পড়ে রয়েছে। সেই তালাবন্ধ বাড়ির সামনে প্রতারিত চাকরিপ্রার্থীদের অবস্থানে বসতেও দেখা গিয়েছিল। তবে কয়েক মাস আগে বাড়ি বিক্রির নামে প্রতারণার অভিযোগে অতনুর স্কুল শিক্ষিকা স্ত্রী মানসী গুছাইতকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
হুলিয়া জারির বিষয়ে তৃণমূলের জেলা সভাপতি সৌমেন মহাপাত্রর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে, তিনি বিচারাধীন বিষয়ের কারণে এই বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। যদিও জেলা বিজেপি সভাপতি তপন বন্দ্যোপাধ্যায় বলছেন, ‘মানুষের কাছ থেকে চাকরি দেওয়ার প্রলোভন দিয়ে যেভাবে টাকা নিয়েছে, একদিন এই ব্যক্তিদের জনগণের কাছে জবাব দিতে হবে। কান টানলেই মাথা আসবে।’