TMC Win: ফের ফেল ‘নন্দকুমার মডেল’, ‘রাম-বাম’ জোট রুখে বড় জয় তৃণমূলের

TMC Win : খারুই গঠরাতে বিজেপির সঙ্গে জোটের খবর সামনে আসার পর কড়া অবস্থান নিতে দেখা গিয়েছিল জেলা সিপিএম নেতৃত্বকে। সংগঠনের গঠনতন্ত্রের ১৯১৩ ধারা অনুযায়ী জোটে সামিল দলীয় সদস্যদের বহিষ্কারও করা।

TMC Win: ফের ফেল ‘নন্দকুমার মডেল’, ‘রাম-বাম’ জোট রুখে বড় জয় তৃণমূলের
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Dec 04, 2022 | 6:50 PM

খারুই: তৃণমূলকে হারাতে নন্দকুমার মডেলে জোট বেঁধেছিল বিরোধীরা। তমলুকের শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লকের খারুই গঠরাতে সমবায় সমিতির নির্বাচনে জোট বেঁধেই লড়াইয়ের ময়দানে নেমেছিল বাম-বিজেপি (Left-BJP)। তবে কাজে দিল না সেই লড়াই। ধরাশায়ী হল ‘রাম-বাম’ জোট। বিকালে ভোটের ফল বেরতেই মুখ থেকে মিলিয়ে গেল স্বস্তির হাসি। জয়ের উল্লাসে মাতোয়ারা হল ঘাসফুল শিবির। ৪৩ আসনের খারুই সমবায়ে ৩৯টিতে জয়ী হয়েছেন তৃণমূল (Trinamool Congress) সমর্থিত প্রার্থীরা। ৪টিতে জয়ী হয়েছে জোটের প্রার্থীরা। কিছুদিন আগে একই ছবি দেখতে পাওয়া গিয়েছিল মহিষাদলের সমবায় সমিতির নির্বাচনে। সেখানে তৃণমূলকে হারাতে জোট বেঁধে লড়ে বাম-বিজেপি। কিন্তু, শেষ হাসি হাসে ঘাস শিবিরই। পঞ্চায়েত ভোটের আগে একের পর এক সমবায়ে লাগাতার জয়ে ঘাসফুল শিবিরের কর্মীরা নতুন করে অক্সিজেন পাবে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ মহলের একটা বড় অংশ। 

নন্দকুমার মডেল কী?

মহিষাদলে সমবায় সমিতি নির্বাচনের সময় ৭৬ আসনে  ১টি আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আগেই জিতেছিল ঘাসফুল শিবির। বাকি ৭৫টি আসনের মধ্যে ৬৯টি আসনে জেতে তৃণমূল। ৭টি আসনে জয়ী হয় বিরোধী বাম-বিজেপি জোট। যদিও, এই জোট তৈরি হয়েছিল ‘নন্দকুমার মডেল’ দেখে। যেখানে ৬৩টি আসনের সব কটিতেই জয় পেয়েছিল বাম-বিজেপি জোটের সমবায় বাঁচাও কমিটি। উল্লেখ্য, এই নির্বাচনে তৃণমূল কোনও আসনেই প্রার্থী দেয়নি। 

তমলুকে তৃণমূল-বিজেপি সংঘর্ষ

খারুই গঠরাতে বিজেপির সঙ্গে জোটের খবর সামনে আসার পর কড়া অবস্থান নিতে দেখা গিয়েছিল জেলা সিপিএম নেতৃত্বকে। সংগঠনের গঠনতন্ত্রের ১৯১৩ ধারা অনুযায়ী জোটে সামিল দলীয় সদস্যদের বহিষ্কারও করা হয়। ৬ জন তৃণমূল কর্মীকে বহিষ্কার করা হয়। যদিও তারপরেও বিজেপিকে সঙ্গে নিয়েই ভোটে লড়েন ‘বাম’ প্রার্থীরা। ৪৩ টি আসনের মধ্যে ২৭ টি আসনে লড়েছে বিজেপি। ১৬ টি আসনে লড়ছে সিপিএম। প্রসঙ্গত, রবিবার  এই সমবায় সমিতির নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিজেপি-তৃৃণমূলের মধ্যে দফায় দফায় উত্তেজনা ছড়ায়। তৃণমূলের বিরুদ্ধে ভোটারদের ভোটদানে বাধা দেওয়ার অভিযোগ তুলেছে বিজেপি। পাল্টা বিজেপির বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগ তুলেছে তৃণমূল। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে লাঠিচার্জও করতে দেখা যায় পুলিশকে। এ ঘটনায় বিজেপির এক কর্মী আহতও হয়েছেন বলে জানা যায়। তবে বিকালে রেজাল্ট বের হতে দেখা যায়, তমলুকের খারুই সমবায় বিপুল ভোটে জিতে বোর্ড গঠন করতে চলেছে তৃণমূল। 

কেন ফেল করল ‘নন্দকুমার মডেল’? 

নন্দকুমারে সমবায় সমিতি নির্বাচনে তৃণমূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা না করার জেরেই বড় জয় পেয়েছিল বাম-বিজেপি জোট। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের মতে, নন্দকুমারে জয়ের থেকে শাসক দলকে রুখতে বাম-বিজেপি জোটের সমীকরণ অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ ছিল। রাজনৈতিক ময়দানে লড়াইয়ের বিকল্প পথ খুলে গিয়েছিল বলে মনে করা হয়। কিন্তু মহিষাদল এবং খারুই গঠরায় তৃণমূল সক্রিয় হতেই এই জোট সেভাবে দাঁড়াতে পারেনি। এমনকী মহিষাদলে জোটে দূরত্ব বজায় রেখেছিল সিপিআইএম। বিজেপির সঙ্গে জোটে ছিল শুধুমাত্র সিপিআই। খারুইয়েও সেই একই দৃশ্য দেখা গেল। জোটে নীচুতলার সিপিএম কর্মীরা এগিয়ে এলেও বাধা হয়ে দাঁড়ায় শীর্ষ নেতৃত্ব। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন, মহিষাদল এবং খারুইয়ে তৃণমূল যেখানে এত সক্রিয়, বাম-বিজেপি জোটের লড়াইয়ে স্বতঃস্ফূর্ততা লক্ষ্য করা যায়নি। 

কী বলছে বাম?

সিপিএম কর্মী বাসুদেব চট্টোপাধ্যায় বলেন, “আমাদের এখানে ৪৩টা আসন। তারমধ্যে তৃণমূল ৩৯টিতে জিতেছে। ৪টিতে বিরোধী জোট জিতেছে। আগের বছরও ভোট লুঠ হয়ে গিয়েছিল। ওরা ক্ষমতায় থাকবে বলে সমবায়ে অতিরিক্ত সদস্যপদ তৈরি করে। সে কারণেই ওদের জয়ের রাস্তা সহজ হয়েছে। আমরা প্রগতিশীল জোট করে লড়েছিলাম। ভোট লুঠ রুখতে মানুষ যেটা চেয়েছিল সেটাই আমরা করেছি। বহিষ্কার নিয়ে জেলা নেতৃত্ব যে সিদ্ধান্ত নিয়ে তা নিয়ে আমাদের কিছু বলার নেই।” 

কী বলছে ঘাসফুল শিবির? 

বড় জয়ের পর জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সহ-সভাপতি শরৎচন্দ্র মেটা বলেন, “বিজেপি-সিপিএম যে অশুভ আঁতাত করেছিল তাঁদের দিকে মানুষ তাকায়নি। ওরা আজ সকালেও ময়না থেকে কিছু বহিরাগত এনে গন্ডগোল পাকানোর চেষ্টা করেছিল। সেটা পুলিশ রুখে দিয়েছে। শান্তিপূর্ণভাবে ভোট হয়েছে। পঞ্চায়েত নির্বাচনে আমরা এখানের সব কটা আসনে জিতব।”