Patharpratima: ৮ জন নয়, ঢোলাহাটে বিস্ফোরণে মৃত্যু হতে পারত ১৮ টা বাচ্চার! ভয়ঙ্কর বর্ণনা দিল কোচিং ক্লাসের শিক্ষক
Patharpratima: ন্ততপক্ষে ২২ জন বাচ্চা পড়ছিল সেই কোচিংয়ে। কোচিং ক্লাসের শিক্ষকের কথায় উঠে এল সেই মুহূর্তের ভয়ঙ্কর বর্ণনা। চোখের সামনে নিজের বৌদি-৬ মাসের ভাইঝিকে পুড়তে দেখেছে সে। আর চন্দ্রকান্তের ৯ বছরের ছেলে, সেও এসেছিল এই যুবকের কাছে পড়তে। পড়া শেষ করে সবে বাড়ি ফিরেছিল, ঝলসে যায় সে-ও।

পাথরপ্রতিমা: ৮ জনের মৃত্যু হয়েছে, সংখ্যাটা ১৮ও হতে পারত। ঢোলাহাটের বাজি কারখানার মালিক চন্দ্রকান্ত বণিকের দূর সম্পর্কের ভাই। পাশের বাড়িতেই থাকেন। তিনি গ্রামে কোচিং ক্লাস চালাতেন। চন্দ্রকান্তের বাড়ির পাশে সোমবার রাতেও চলছিল কোচিং। অন্ততপক্ষে ২২ জন বাচ্চা পড়ছিল সেই কোচিংয়ে। কোচিং ক্লাসের শিক্ষকের কথায় উঠে এল সেই মুহূর্তের ভয়ঙ্কর বর্ণনা। চোখের সামনে নিজের বৌদি-৬ মাসের ভাইঝিকে পুড়তে দেখেছে সে। আর চন্দ্রকান্তের ৯ বছরের ছেলে, সেও এসেছিল এই যুবকের কাছে পড়তে। পড়া শেষ করে সবে বাড়ি ফিরেছিল, ঝলসে যায় সে-ও।
কোচিং ক্লাসের শিক্ষক বলেন, “সন্ধ্যায় ২২ জনের ওপরে ব্যাচ ছিল। আমি সাড়ে আটটায় ছুটি দিয়েছি। কিন্তু কাল কেকেআর-এর ম্যাচ দেখছিলাম। তাই আমি ৮.২০তেই বাচ্চাগুলোকে ছেড়ে দিই। উঠোনে পড়াচ্ছিলাম। আমি ফোনটা হাতে নিয়ে বারান্দায় এসে বসি। হঠাৎ একটা আওয়াজ। দেখি সেল ফেটেছে। আমি গিয়ে দেখলাম, চন্দ্রকান্ত দার বাড়িতে আগুন জ্বলছে। আমি উঠোনে দাঁড়িয়ে দেখি, আমার বৌদি আর ভাইঝি অলরেডি পুড়ছে। বউদি আমাকে হাত নাড়িয়ে বলছিল, যে ভাই ভিতরে আসিস না। সাড়ে ছ’মাসের বাচ্চাটা ছিল কোলে।”
চন্দ্রকান্তের ছেলেও এই শিক্ষকের কাছে পড়তে এসেছিল। পড়ে সে সবে বাড়ি ঢুকছিল। তার কথা বলতে গিয়ে গলা কেঁপে উঠল এই যুবকের। তিনি বলেন, “চন্দ্রকান্তদার ছেলেও সবে টিউশন পড়ে বাড়ি ফিরেছে। ও ওপরের দিকে উঠছিল, আর দেখছে মা পুড়ছে। ওখান থেকে আমাকে বলছিল, কাকা মাকে একটু বাঁচাও। সে সময়ে চন্দ্রকান্ত দা বাইরে থেকে ছুটে ভিতরের দিকে ঢুকছে।” যুবক বললেন, “বউদি-ভাইঝিকে তো ধরতে পারিনি। তবে ভাইপোকে হয়তো বাঁচাতে পারতাম। ওকে আমি ছুঁয়েওছি। যদি ধরে বাইরে নিয়ে আসতাম, ওকে বাঁচাতে পারতাম। সন্ধ্যার কিছুটা আগে বাচ্চাটাকে কোলে করে নিয়ে এসেছিলাম। তারপর পড়াতে বসাব বলে আমি ওর মায়ের কাছে দিয়ে আসি। ”
ঢোলাহাটের বিস্ফোরণের ঘটনায় ১১ জনের একটি পরিবারের ৮ জনেরই মৃত্যু হয়েছে। দুই ভাই চন্দ্রকান্ত ও তুষারকান্তি বণিক ও তাঁদের বৃদ্ধা মা জীবিত। চন্দ্রকান্তকে আটক করেছে পুলিশ। তুষারকান্তি পলাতক। তাঁর খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ। ঘটনায় খুনের চেষ্টা-সহ ৭টি ধারায় মামলা রুজু হয়েছে।





