Raiganj Sand Smuggling: দিবারাত্র ‘বালি চুরি’! ভিটে হারা হওয়ার আশঙ্কায় কয়েক হাজার গ্রামবাসী, পুলিশ শুধু ‘দেখেই যাচ্ছে’

North Dinajpur Sand Smuggling: হেমতাবাদ বিধানসভার, রায়গঞ্জ ব্লকের জগদীশপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের খাঁড়ি জগদীশপুর ও খাঁড়ি গোপালপুর গ্রামের বাসিন্দাদের কার্যত রাতের ঘুম উড়েছে বালি মাফিয়াদের দৌরাত্ম্যে।

Raiganj Sand Smuggling: দিবারাত্র 'বালি চুরি'! ভিটে হারা হওয়ার আশঙ্কায় কয়েক হাজার গ্রামবাসী, পুলিশ শুধু 'দেখেই যাচ্ছে'
নদীর তীরে বালি চুরি (নিজস্ব চিত্র)
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Nov 29, 2021 | 10:34 AM

উত্তর দিনাজপুর: দিনে দুপুরে নদী পাড় থেকে চলছে বালি চুরি। নদীর গতিপথ পরিবর্তনে বড়সড় বিপর্যয়ের আশঙ্কা। নদীর বুকে চলে যেতে পারে গোটা গ্রাম। বালি মাফিয়াদের দৌরাত্ম্যে আতঙ্ক গ্রামে। নদীর প্রশাসনের দুয়ারে কড়া নেড়েও সুরাহা মেলেনি, এমনই অভিযোগ এলাকার বাসিন্দাদের। করণদিঘি ব্লক সীমান্তের রায়গঞ্জ ব্লকের দুর্বিষহ চিত্র। ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস শাসক দলের স্থানীয় বিধায়কের।

হেমতাবাদ বিধানসভার, রায়গঞ্জ ব্লকের জগদীশপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের খাঁড়ি জগদীশপুর ও খাঁড়ি গোপালপুর গ্রামের বাসিন্দাদের কার্যত রাতের ঘুম উড়েছে বালি মাফিয়াদের দৌরাত্ম্যে। নাগর নদীর ধার ঘেঁষে বালি তোলার কাজ চলছে জোর কদমে। হাইড্রোলিক মেশিন, জেসিবি, কেটারপিলার, দিয়ে ডাম্পারে চাপিয়ে চালান হচ্ছে নদীর বালি। সারা দিনরাত চলছে এই অবৈধ কারবার। শ’য়ে শ’য়ে ডাম্পারে করে পাচার হচ্ছে নদীর বালি, অভিযোগ স্থানীয়দেরই।

এভাবে নদীপাড় থেকে বালি তুলে নেওয়ায় নদী নতুন গতিপথ নিলে ভেসে যাবে গ্রামের বিস্তীর্ণ এলাকা। ভিটে হারা হবেন কয়েকশো গ্রামবাসী। কিন্তু প্রতিবাদ জানাতে গেলেই বালি মাফিয়াদের হুমকির মুখে পড়তে হচ্ছে বলে অভিযোগ গ্রামবাসীদের। তাদের একাংশের দাবি, ভিটে মাটি বাঁচাতে তাঁরা স্থানীয় ব্লক মহকুমা ভূমি সংস্কার আধিকারিকের কাছে লিখিতভাবে অভিযোগ জানান। একাধিকবার পুলিশ ও প্রশাসনের দরজায় কড়া নেড়েও আখেড়ে প্রশাসনের কোনও তৎপরতা এখনও দেখা যায়নি। পুলিশে ফোন করলেও আশ্বাস ছাড়া আর কিছুই মেলেনি। আসলে প্রশাসন এ ব্যাপারে ভ্রূক্ষেপহীন বলেই দাবি নাগর পাড়ের বাসিন্দাদের।

বস্তুত, নাগর নদীর ওপাড়ে বসতি প্রায় নেই বললেই চলে, বর্ষাকাল ছাড়া অন্য সময়ে শুধু ধু ধু বালির চর। আবার বর্ষায় সেই নাগরই দু-কূল ছাপিয়ে প্লাবিত করে। কিন্তু নদীর বাঁক থেকে বালি তুলে নিলে নদী তার পরিবর্তন করতে পারে, নদীর স্রোত এপাড়ে ধাক্কা দিলে খাঁড়ি জগদীশপুর ও খাঁড়ি গোপালপুর দু’গ্রামের বিস্তীর্ণ এলাকা চলে যাবে নাগরের বুকে। এমনই আশঙ্কা করছেন এই দুই গ্রামের বাসিন্দারা।

আবার বালি মাফিয়ারা এতটাই প্রভাবশালী যে সেখানে প্রবেশেও প্রাণ সংশয়ের আশঙ্কার কথা জানাচ্ছেন বাসিন্দারাই। কিন্তু কেন? যেখানে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী স্বয়ং প্রশাসনকে নদীর মাটি বা বালি চুরি রুখতে নজরদারির নির্দেশ দিয়েছেন! সেখানে গ্রামবাসীরা বারবার প্রশাসনের দ্বারস্থ হলেও কেন কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না? নদী গতিপথ পরিবর্তন করলে তাতে যে বড়সড় প্রাকৃতিক বিপর্যয় অবশ্যম্ভাবী বলে দাবী স্থানীয়দের।

যদিও রায়গঞ্জ ব্লকের, হেমতাবাদ বিধানসভার অধীন এই এলাকার বিধায়ক অবশ্য বিষয়টি খতিয়ে দেখে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। এখন প্রশাসন কী পদক্ষেপ নেয় তাই দেখার।

মূল অভিযোগকারী মহম্মদ রোহুল বক্তব্য, “আমার বাড়ির পাশেই নাগর নদীর পাশেই। আমি বারণ করতে গেছিলাম। জল এখন ধাক্কা মারছে আমার বাড়িতে। তখন আমাকে ওরা বলে, তোর মাটি তো কাটছি না, বেশি বললে গাড়ির নীচে ফেলে দেব। আমি প্রশাসনের কাছে গেছিলাম। চিঠিও দিয়েছি। কিন্তু কোনও পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। থানায় বলেছি। থানাও দেখেনি। এখনও পর্যন্ত পুলিশ আসেনি।”

TV9 বাংলার প্রতিনিধির সামনে বসেই পুলিশকে একবার ফোন করেন মহম্মদ রোহুল। পুলিশ বলল, “দেখছি, দেখছি…” অভিযোগকারীর বক্তব্য, পুলিশ প্রথম থেকেই ব্যাপারটা এইভাবে ‘দেখছে।’

বিধায়ক সত্যজিত্ বর্মন বলেন, “আমার কাছে এখনও পর্যন্ত এরকম কোনও অভিযোগ এসে পৌঁছয়নি। তবে বালি কাটা হলে, সেটা তো ঠিক নয়। প্রশাসনকে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলছি।”

আরও পড়ুন: Jagdeep Dhankhar tweeted on Nadia Accident: মৃত্যুমিছিলে ‘গভীর শোকাহত’, মমতা-সরকারকে সড়ক-নিরাপত্তায় নজর দিতে ‘পরামর্শ’ ধনখড়ের

আরও পড়ুন: Suvendu Adhikari on Nadia Road Accident: ‘পরিবহণ মন্ত্রী ভোটে ব্যস্ত, সিভিক তোলা আদায়কেই প্রাথমিক কাজ মনে করে’