HS Result 2022: বাবা পরিযায়ী শ্রমিক, অভাবের সঙ্গে লড়েই উচ্চ মাধ্যমিকে ষষ্ঠ রায়গঞ্জের স্নেহা

Higher Secondary: স্নেহার বাবা বিমল দাস ভিন রাজ্যে শ্রমিকের কাজ করেন। লকডাউনে কাজ ছিল না বহুদিন। কোভিড অতিমারিতে অর্থনৈতিক অনটন চরমে উঠেছিল স্নেহার পরিবারের।

HS Result 2022: বাবা পরিযায়ী শ্রমিক, অভাবের সঙ্গে লড়েই উচ্চ মাধ্যমিকে ষষ্ঠ রায়গঞ্জের স্নেহা
রায়গঞ্জের স্নেহা
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jun 10, 2022 | 7:14 PM

রায়গঞ্জ: একাগ্রতা, ইচ্ছাশক্তি, জেদ। এই তিনে ভর করেই উচ্চ মাধ্যমিকে রাজ্যে ষষ্ঠ হয়েছেন পরিযায়ী শ্রমিকের মেয়ে স্নেহা দাস। সংসারে অভাব নিত্য দিনের ঘটনা। যদিও সেই অভাব স্নেহার লড়াইয়ে বাধা হতে পারেনি। অভাবের সঙ্গে লড়াই করে স্নেহার এই রেজাল্টে গর্বিত তাঁর স্কুলের শিক্ষক থেকে প্রতিবেশীরা। এলাকার ছোট ছেলেমেয়ের অনুপ্রেরণা জোগাবে স্নেহার এই লড়াই। রায়গঞ্জের দেবীনগরের মাড়াইকুড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের বাসিন্দা স্নেহা দাস। পডে়ন রায়গঞ্জের কৈলাশ চন্দ্র রাধারাণী বিদ্যাপীঠে। এ বারের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় ৪৯৩ নম্বর পেয়ে ষষ্ঠ স্থান অধিকার করেছেন তিনি। কলা বিভাগের ছাত্রী স্নেহার পছন্দের বিষয় অর্থশাস্ত্র। লেখাপড়ার প্রতি তাঁর ভালোবাসা ছোট থেকেই। তবে উচ্চ মাধ্যমিকে সাফল্য আসলেও তাঁর জীবনের লড়াইটা বড়ই কঠিন।

স্নেহার বাবা বিমল দাস ভিন রাজ্যে শ্রমিকের কাজ করেন। লকডাউনে কাজ ছিল না বহুদিন। কোভিড অতিমারিতে অর্থনৈতিক অনটন চরমে উঠেছিল স্নেহার পরিবারের। এখন অবশ্য ফের কাজে ফিরে গিয়েছেন স্নেহার বাবা। যদিও সংসার টানতে স্নেহার মা যান স্থানীয় ধানের মিলে দিনমজুরি করতে। প্রচুর পরিশ্রম করে যে টুকু অর্থ উপার্জন করে তা দিয়ে মেয়ের পড়াশোনা করানোর সমস্ত চেষ্টা চালিয়ে গিয়েছেন তিনি। সেই মেয়ে মেধাতালিকার ষষ্ঠ স্থানে। তা দেখে মায়ের মন অদ্ভুত আনন্দে ভরে গিয়েছে। স্নেহার মা বলেছেন, “আমাদের এত কষ্ট করতে হয়। কিন্তু মেয়ের রেজাল্ট সব পরিশ্রম, কষ্ট মিটিয়ে দিয়েছে।” মেয়ের এই সাফল্যের দিনে বাবা থাকতে না পারায় অবশ্য কিছুটা খারাপ স্নেহার পরিবারের। স্নেহা অবশ্য় এখানেই লড়াই থামাতে চান না। তাঁর কথায়, এখনও অনেক লড়াই বাকি। আইএএস ও আইপিএস হওয়া না পর্যন্ত নিজের লক্ষ্যে অটল থাকার কথা জানিয়েছেন তিনি।

অপরদিকে গ্রামের মেয়ের এই সাফল্যে উচ্ছ্বসিত গ্রামবাসীরাও। অভাব অনটনের সংসারে দুই মেয়েই যথেষ্টই মেধাবী বলে জানান তারা। ছোট মেয়ে স্নেহার সাফল্যে গর্বিত এলাকাবাসীরা জানিয়েছেন, মেধাবী স্নেহা এলাকার আর পাঁচটা পড়ুয়াদের উৎসাহ জোগাবে। অন্যদিকে এ ভাবে গ্রাম্য পরিবেশে আর্থিক অনটনের সংসারে মানুষ হয়েও স্নেহার লড়াই সমাজে নজির হয়ে থাকবে বলে মত তাঁর স্কুলের শিক্ষকদের। সংসারের আর্থিক অনটনের বাধা কাটিয়েও যে লক্ষ্যে পৌঁছনো যায়, নিজের অধ্যবসায় ও পরিশ্রম দিয়ে তা আরও একবার প্রমান করলেন স্নেহা।