WEF report: আপনার চাকরি খাবে না তো আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স? ভয়ঙ্কর ইঙ্গিত ইকোনমিক ফোরামের
WEF report: আগামী ৫ বছরে বিশ্বের কর্মজগতে বড় পরিবর্তন ঘটতে চলেছে বলে, পূর্বাভাস দিল 'ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম'। সোমবার (১ মে), কর্মজগতের ভবিষ্যত বিষয়ে জেনেভায় একটি বিশেষ রিপোর্ট প্রকাশ করল ফোরাম। তাদের সমীক্ষা অনুযায়ী, ২০২৭ সালের মধ্যে এআই, ডিজিটাইজেশন, গ্রিন এনার্জির মতো অর্থনৈতিক উন্নয়নের জেরে, বিশ্বের সমস্ত কাজের অন্তত এক চতুর্থাংশের প্রকৃতিতে বড় বদল আসবে।
জেনেভা: চলতি দশকের শুরুতেই কোভিড-১৯ মহামারি এবং অটোমেশনের দ্বৈত প্রভাবে কপাল পুড়েছে কর্মীদের। যত দিন যাচ্ছে, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স, অর্থাৎ, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মতো প্রযুক্তির চাপে ক্রমেই কমছে হচ্ছে কেরানি ধরনের পেশা। একই সময়ে বাড়ছে, সাইবার সিকিওরিটি স্পেশালিস্টদের মতো প্রযুক্তিবিদদের চাহিদা। এই অবস্থায় আগামী ৫ বছরে বিশ্বের কর্মজগতে বড় পরিবর্তন ঘটতে চলেছে বলে, পূর্বাভাস দিল ‘ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম’। সোমবার (১ মে), কর্মজগতের ভবিষ্যত বিষয়ে জেনেভায় একটি বিশেষ রিপোর্ট প্রকাশ করল ফোরাম। তাদের সমীক্ষা অনুযায়ী, ২০২৭ সালের মধ্যে এআই, ডিজিটাইজেশন, গ্রিন এনার্জির মতো অর্থনৈতিক উন্নয়নের জেরে, বিশ্বের সমস্ত কাজের অন্তত এক চতুর্থাংশের প্রকৃতিতে বড় বদল আসবে। বিশ্বের ৮০০টি সংস্থায় সমীক্ষা চালিয়ে এবং ৬৭ কোটি ৩০ লক্ষ কাজের ডাটাসিট ব্যবহার করে এই রিপোর্ট তৈরি করেছে ইকোনমিক ফোরাম।
প্রযুক্তিবিদদের পোয়াবারো
ইকোনমিক ফোরামের রিপোর্ট অনুযায়ী, প্রযুক্তির ব্যবহার একই সঙ্গে নতুন পেশা তৈরি করছে, আবার পুরোনো পেশা ধ্বংসও করছে। রিপোর্টে বলা হয়েছে, ২০২৭ সালের মধ্যে ৬ কোটি ৯০ লক্ষ নতুন কর্মসংস্থান তৈরি হবে। আর একই সময়ে ৮ কোটি ৩০ লক্ষ কাজ হারিয়ে যাবে। সব মিলিয়ে ১ কোটি ৪০ লক্ষ কাজ কমবে। বিশ্বের সামগ্রিক কর্মশক্তির ২ শতাংশ কাজ হারাবেন। রিপোর্টে বলা হয়েছে, সবার আগে হারিয়ে যাবে সচিব বা কেরানির পদগুলি। যেমন ব্যাঙ্কের ক্যাশিয়ারের কাজ স্বয়ংক্রিয় যন্ত্র দিয়েই করা যাবে। আর এআই মেশিন লার্নিং স্পেশালিস্ট এবং সাইবার সিকিওরিটি বিশেষজ্ঞদের মতো পদের চাহিদা বাড়বে।
কর্মসংস্থান বাড়ছে এই এই ক্ষেত্রে
গুটেনবার্গের ছাপাখানা থেকে শুরু করে, বিশ্ব একের পর এক বিপ্লবের সাক্ষী হয়েছে। এর মধ্যে বেশ কয়েকটি যেমন নতুন কাজের সুযোগ তৈরি করেছে, তেমনই বেশ কয়েকটি ক্ষেত্রে কাজ হারিয়েছে মানুষ। বর্তমানে চলছে প্রযুক্তির বিপ্লব। আর প্রযুক্তির যত উন্নয়ন ঘটছে, ততই কিছু মানবকেন্দ্রীক পেশা হারিয়ে যাবে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার এই যুগে সারা বিশ্বের অন্তত ৩০ কোটি পেশা যন্ত্রের মাধ্যমে করা হবে। একই সময়ে ডিজিটাল কমার্সের ক্ষেত্রে ২০ লক্ষ নতুন কাজ তৈরি হবে। স্থিতিশীলতা বিশেষজ্ঞ এবং পরিবেশগত সুরক্ষা পেশাদারদের জগতে কর্মসংস্থান বাড়বে যথাক্রমে ৩৩ শতাংশ এবং ৩৪ শতাংশ। শিক্ষা ক্ষেত্রে কর্মসংস্থান বাড়বে ১০ শতাংশ। আর বিশ্বে কৃষিজীবীদের জন্য তৈরি হবে অতিরিক্ত চল্লিশ লক্ষ চাকরি। বিশেষ করে মেশিন অপারেটর, গ্রেডার এবং সর্টারের চাহিদা ১৫ থেকে ৩০ শতাংশ বৃদ্ধি হবে বলে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।
উজ্জ্বল সম্ভাবনা ভারতের
এই অবস্থায়, আগামী ৫ বছরে কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে বিশ্বের মধ্যে ভারতের সম্ভাবনাই সবথেকে উজ্জ্বল বলে মনে করা হচ্ছে। বিশ্বে যখন ২৩ শতাংশ পেশায় বড় বদল আসতে চলেছে, সেই সময়ে ভারতে ২২ শতাংশ চাকরির পরিবর্তন হবে বলে আশা করছেন নিয়োগকর্তারা। ডেটা বিশ্লেষক এবং বিজ্ঞানীদের পাশাপাশি, এআই এবং মেশিন লার্নিং বিশেষজ্ঞরা সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবেন বলে মনে করা হচ্ছে। ভারতের কর্পোরেট সেক্টর কর্মসংস্থান তৈরি এবং তা বজায় রাখার বিষয়ে আত্মবিশ্বাসী। তবে, আগামী পাঁচ বছরে মেধার অভাব দেখা যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। বর্তমানে মাত্র অর্ধেক শতাংশ কর্মী উপযুক্ত প্রশিক্ষণের সুযোগ পান। ২০২৭ সালের মধ্যে, কিন্তু দশজনের মধ্যে ছয়জন প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কর্মীর প্রয়োজন হবে।