Bangladesh: ‘৯০ শতাংশ মুসলমানের বাংলাদেশ কেন হবে ধর্মনিরপেক্ষ?’

Bangladesh secular: হাসিনা জমানার অবসানের পর, কট্টরপন্থী সংগঠনগুলির পক্ষ থেকে দাবি উঠেছিল বাংলাদেশকে মুসলিম দেশ হিসেবে ঘোষণা করার। তবে, তাদের সেই দাবিতে জোর ছিল না। তবে এবার, খোদ সেই দেশের অ্যাটর্নি জেনারেলই বাংলাদেশের সংবিধান থেকে 'ধর্মনিরপেক্ষ' শব্দটি বাদ দেওয়ার দাবি জানালেন।

Bangladesh: '৯০ শতাংশ মুসলমানের বাংলাদেশ কেন হবে ধর্মনিরপেক্ষ?'
Image Credit source: Getty Images and AP
Follow Us:
| Updated on: Nov 14, 2024 | 8:46 PM

ঢাকা: শেখ হাসিনা জমানার অবসানের পর, জামাতে ইসলামি দলের নেতা থেকে শুরু করে অন্যান্য কট্টরপন্থী সংগঠনগুলির পক্ষ থেকে দাবি উঠেছিল বাংলাদেশকে মুসলিম দেশ হিসেবে ঘোষণা করার। তবে, তাদের সেই দাবিতে জোর ছিল না। তবে এবার, খোদ সেই দেশের অ্যাটর্নি জেনারেলই বাংলাদেশের সংবিধান থেকে ‘ধর্মনিরপেক্ষ’ শব্দটি বাদ দেওয়ার দাবি জানালেন। অ্যাটর্নি জেনারেল মহম্মদ আসাদুজ্জামানের যুক্তি, দেশের জনসংখ্যার ৯০ শতাংশ মুসলিম। তাই, বাংলাদেশকে মুসলিম দেশ হিসেবেই ঘোষণা করা উচিত। শুধু তাই নয়, শেখ মুজিবুর রহমানের ‘জাতির জনক’ খেতাবও কেড়ে নেওয়া উচিত বলে জানিয়েছেন, বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আইনি আধিকারিকষ

বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর), বাংলাদেশের সংবিধানের ১৫তম সংশোধনীর বৈধতা নিয়ে এক শুনানি ছিল বিচারপতি ফারাহ মাহবুব এবং দেবাশীষ রায়চৌধুরীর বেঞ্চে। সেকানেই অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, “আগে আল্লার উপর অবিচল আস্থা ও বিশ্বাস ছিল। আমি চাই এটা আগের অবস্থায় ফিরে যাক। ২-এর ক অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, রাষ্ট্র সকল ধর্ম পালনে সমান অধিকার ও সমতা নিশ্চিত করবে। আবার ৯ নম্বর ধারায় ‘বাঙালি জাতীয়তাবাদ’-এর কথা বলা হয়েছে। এটা পরস্পরবিরোধী।”

অনুচ্ছেদ ৭-এর ক এবং ৭-এর খ নিয়েও আপত্তি জানান অ্যাটর্নি জেনারেল মহম্মদ আসাদুজ্জামান। বাংলাদেশের এই দুটি সংশোধনীতে বলা হয়েছিল, গণতন্ত্রকে বিপর্যস্ত করতে পারে, সংবিধানে এমন কোনও সংশোধন বা পরিবর্তন নিষিদ্ধ। অ্যাটর্নি জেনারেল দাবি করেন, এইগুলি সংশোধনীগুলির ফলে সংস্কারের পথ আটকে গিয়েছে। রাজনৈতিক ক্ষমতাকে সুসংহত হয়েছে এবং আখেরে দুর্বল হয়েছে গণতন্ত্র। আসাদুজ্জামান বলেন, “স্বৈরাচারী শাসনকে দীর্ঘায়িত করার জন্য এটা করা হয়েছে। এটা আইনের শাসনের পরিপন্থী।”

তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা অপসারণেরও নিন্দা করেন আসাদুজ্জামান। আগে বাংলাদেশে নির্বাচনের সময় তদারকি করত এই তত্ত্বাবধায়ক সরকার। হাসিনা ক্ষমতায় এসে এই ব্যবস্থা বাতিল করেছিলেন। আসাদুজ্জামান জানান, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার বিলুপ্তি বাংলাদেশের নাগরিকদের মৌলিক অধিকারকে খর্ব করেছে। গণতন্ত্রের উপর জনগণের আস্থা নষ্ট হয়েছে এবং দেশের গণতান্ত্রিক ভিত্তি দুর্বল হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, শেখ মুজিবুর রহমানকে “জাতির জনক” হিসেবে চিহ্নিত করা, দেশে বিভেদ এনেছে এবং দেশের মানুষের বাক স্বাধীনতাকে খর্ব করেছে। তিনি বলেন, “শেখ মুজিবের অবদানকে অবশ্যই সম্মান জানাতে হবে। কিন্তু, তা আইনিভাবে কার্যকর করা দেশে বিভাজন তৈরি করেছে।” ১৫তম সংশোধনী বাতিলের আহ্বান জানিয়ে আসাদুজ্জামান যুক্তি দেন, এটা বাংলাদেশের স্বাধীনতার উত্তরাধিকারকে ব্যাহত করে এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনা এবং ১৯৯০-এর গণতান্ত্রিক বিদ্রোহের পরিপন্থী।