ফিরতে চাইছে না দেশে, ভিসার মেয়াদ বাড়ানোর জন্য আকুল আর্তি JNU-এর আফগানি ছাত্রদের
Afghanistan: রবিবারই আফগানিস্তান দখল করে তালিবানরা। কথা চলছিল শান্তিপূর্ণভাবেই আফগান প্রশাসন তালিবানের হাতে ক্ষমতা তুলে দেবে। তারই মাঝে খবর আসে, আত্মসমর্পণ এড়াতে দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন প্রেসিডেন্ট আসরাফ ঘানি।
নয়া দিল্লি: দেশ দখল করে নিয়েছে সন্ত্রাসী তালিবানরা। দেশের প্রধানমন্ত্রীও পিছু হঠেছেন। যে সেনারা বুক দিয়ে আগলে রাখে মাতৃভূমি, তারাও বাধ্য হয়ে নতজানু অশুভ শক্তির কাছে। পরদেশে বসে সেসবই অনবরত ভেবে চলেছেন জালালউদ্দিন, তহমিরারা। ওঁরা দিল্লির জওহরলাল নেহরু ইউনিভার্সিটির পড়ুয়া। বাড়ি আফগানিস্তান। ভারতে থেকে লেখাপড়া করেন। দেশের যা পরিস্থিতি তাতে এখনই সেখানে ফিরতেও চাইছেন না তাঁরা। সূত্রের খবর, ভিসা বাড়ানোর চেষ্টা শুরু করে দিয়েছেন ইতিমধ্যেই।
বেশির ভাগ পড়ুয়ারই স্টুডেন্ট ভিসা শেষ হয়ে যাচ্ছে ডিসেম্বরে। মেরে কেটে হাতে আর চারটে মাস। এদিকে আফগানিস্তানের যা পরিস্থিতি তাতে এখন কোনও ভাবেই দেশেও ফিরতে পারবেন না তাঁরা। পরিবার পরিজন কোথায় থাকবেন, তাই-ই তো এখনও নিশ্চিত নয়। তাই এই পড়ুয়ারা চাইছেন নতুন কোনও কোর্সে ভর্তি হয়ে যদি ভিসাটা বাড়ানো যায়।
জেএনইউয়ের ছাত্র জালালউদ্দিন। আফগানিস্তানের এই তরুণ জেএনইউয়ে পড়াশোনা করেন। সংবাদসংস্থা এএনআইকে জালালউদ্দিন জানিয়েছেন, “পরিস্থিতি খুবই কঠিন। আশা করি প্রশাসন তা বুঝবে। আমার ভিসার মেয়াদ বাড়ানোর আবেদনটা অন্তত গ্রহণ করবে। জেএনইউয়ে পিএইচডি করা খুবই খরচ সাপেক্ষ। বিশেষ করে যাঁরা বাইরের দেশ থেকে আসে। সকলের পরিবারও তো স্বচ্ছল নয়। আমি জানি না আমি কী করব!”
Delhi | Afghan students of Jawaharlal Nehru University (JNU) want their stay in India extended
My visa will expire next month. My request is to extend my visa for the long term. I don’t have any option. Other students from Afghan also facing the same problem: Jalal-ud-din pic.twitter.com/MScQYdIUZy
— ANI (@ANI) August 15, 2021
“I’m part of a minority community in Afghanistan. I am from Bamyan province. It was the most peaceful & safe province. Today I heard that they (Taliban) took control of my province. I am worried about the future of minorities and women,” Ali Asghar, a student of JNU pic.twitter.com/dVjlxWXgNY
— ANI (@ANI) August 15, 2021
সফিক সুলতান ইন্টারন্যাশনাল রিলেশনস অ্যান্ড এরিয়া স্টাডিজ নিয়ে পড়াশোনা করেন জেএনইউয়ে। জানালেন, “৩১ ডিসেম্বর আমার ভিসা শেষ হয়ে যাবে। পড়াশোনা করতে আসার আগে আমি একজন সরকারি কর্মী ছিলাম। আমি জানতাম, ফিরে গেলে ওরা আমাকে আবারও চাকরিতে নিয়ে নেবে। এদিকে আমার মা বাবা যেখানে থাকেন সেই জায়গা এখন তালিবানের দখলে। ওদের সঙ্গে গত দেড় সপ্তাহ হয়ে গেল যোগাযোগই করতে পারছি না। আমি কার কাছে সাহায্য চাইব সেটাই তো বুঝতে পারছি না।”
আফগান ছাত্র আলি আসগরেরও একই অবস্থা। আলির কথায়, “এক সপ্তাহ আগে বাবার সঙ্গে কথা হয়েছিল। বলেছিল, আমাদের বাড়ির এলাকা তালিবানের দখলে চলে গিয়েছে। ওরা পালিয়ে অন্য জায়গায় গিয়েছে। ওরা বলছে, এখন যেন আমি বাড়ি না ফিরি। কিন্তু ফরেন স্টুডেন্টদের জন্য এখানে এত বেতন, বাড়ির সমর্থন ছাড়া তো সে খরচ টানতেও পারব না। এদিকে এখন পরিবারও অথৈ জলে।”
রবিবারই আফগানিস্তান দখল করে তালিবানরা। কথা চলছিল শান্তিপূর্ণভাবেই আফগান প্রশাসন তালিবানের হাতে ক্ষমতা তুলে দেবে। তারই মাঝে খবর আসে, আত্মসমর্পণ এড়াতে দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন প্রেসিডেন্ট আসরাফ ঘানি। টোলো নিউজ নামক একটি সংবাদ মাধ্যমের তরফে জানানো হয়েছে, আফগানিস্তান প্রশাসন ও তালিবানদের মধ্যে ক্ষমতা হস্তান্তরের কথা চললেও সরকার পতনের পরই পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে চলে গিয়েছেন আসরাফ ঘানি। এখন আফগানিস্তানে তালিবান-রাজ। আরও পড়ুন: দু’দিন ধরে খাওয়া নেই, কোলের শিশু রাস্তার ধারে প্লাস্টিকে শোওয়ানো! এ এক অন্য যন্ত্রণার আফগানিস্তান