Imran Khan: মাঝপথেই প্যাভিলিয়নে ফিরলেন ইমরান, নতুন সরকারের সামনে অপেক্ষা করছে কোন কোন বাউন্সার?
Imran Khan: ইমরানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনার অন্যতম কারণই ছিল অর্থনীতির বেহাল দশা। বর্তমানে পাকিস্তানের ঘাড়ে ১৩ হাজার কোটি ডলারের বিদেশি ঋণ রয়েছে।
ইসলামাবাদ: শেষ বল অবধি খেলবেন বলেছিলেন, কিন্তু ইনিংস শেষের আগেই প্যাভিলিয়নে ফিরতে হল ইমরান খানকে (Imran Khan)। মাত্র ১৮ বছর বয়সে শুরু করেছিলেন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের কেরিয়ার। বিশ্বকাপও জয় করে এনেছিলেন। কিন্তু হঠাৎই ক্রিকেটের কেরিয়ার ছেড়ে পা রেখেছিলেন রাজনীতির ময়দানে। দেশের প্রধানমন্ত্রীর গদিতেও বসেছিলেন, কিন্তু বেশিদিন টিকতে পারলেন না। আস্থাভোটে (Trust Vote) হেরে গদি ছাড়তে হল তাঁকে। আগামিকাল, সোমবারই পাকিস্তানের (Pakistan) নতুন প্রধানমন্ত্রীকে বেছে নেওয়া হবে। তবে ক্ষমতা বদল হলেই কি বদলে যাবে দেশের পরিস্থিতি? রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের দাবি, নয়া সরকারের সামনে পথ অতটা প্রশস্ত নয়। একাধিক চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হবে তাদের।
প্রায় এক মাস ধরেই চরমে উঠেছিল পাকিস্তানের অন্তর্কলহ। প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিরুদ্ধে উঠেছিল দুর্নীতি সহ একাধিক অভিযোগ। তিনি দেশের অর্থনীতি থেকে বিদেশনীতি, কিছুই সামলাতে পারছেন না। এরপরই তাঁর বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনে বিরোধীরা। ইমরানের নিজস্ব দল, পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের একাধিক সদস্যও তাঁর বিরুদ্ধেই সুর চড়ান। আস্থা ভোট হবে কিনা, তা নিয়ে বিগত এক সপ্তাহ ধরে টানাপোড়েন, নাটক চলার পর অবশেষে শনিবার পাকিস্তানের জাতীয় সংসদে মধ্যরাতে ভোটাভুটি শুরু হয়। ৩৪২ সদস্যের পাক সংসদে ইমরানের গদি বাঁচানোর জন্য প্রয়োজন ছিল ১৭২টি ভোটের, কিন্তু ইমরানের বিরুদ্ধেই ভোট দেন ১৭৪ জন।
ইমরান গদিচ্যুত হওয়ার পর বিরোধীরা উল্লাস শুরু করলেও, তাদের এই আনন্দ কতদিন স্থায়ী হবে, তা নিশ্চিতভাবে বলা যাচ্ছে না। সোমবারই পাকিস্তানের জাতীয় সংসদে অধিবেশন বসবে, সেখানেই বেছে নেওয়া হবে নতুন প্রধানমন্ত্রীকে। আপাতত পাকিস্তান মুসলিম লিগ নওয়াজের প্রধান নেতা শাহবাজ শরিফের নামই প্রধানমন্ত্রী হিসাবে উঠে আসছে।
যেই-ই পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হোন না কেন, তার সামনে বেশ কয়েকটি চ্যালেঞ্জ অপেক্ষা করছে। একদিকে যেমন দেশের ঘাড়ে ঋণের বোঝা রয়েছে, তেমনই রয়েছে মুদ্রাস্ফীতির চাপ। বিদেশনীতি নিয়েও যথেষ্ট চাপে রয়েছে পাকিস্তান।
কী কী চ্যালেঞ্জ অপেক্ষা করছে?
অর্থনীতির বেহাল দশা:
ইমরানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনার অন্যতম কারণই ছিল অর্থনীতির বেহাল দশা। বর্তমানে পাকিস্তানের ঘাড়ে ১৩ হাজার কোটি ডলারের বিদেশি ঋণ রয়েছে। দেশের মুদ্রাস্ফীতিও ১২ শতাংশ ছাড়িয়েছে। দেশের মুদ্রার দাম ডলার প্রতি ১৯০ টাকায় নেমে এসেছে। বিগত তিন বছর ধরেই দেশের অর্থনীতি এভাবেই থমকে রয়েছে। করোনাকালে তৈরি হয়েছে আরও আর্থিক মন্দা।
জঙ্গি সমস্যা:
তালিবান আফগানিস্তানের দখল নেওয়ার পরই পাকিস্তানেও মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে পাকিস্তান তালিবান। ক্ষমতায় থাকাকালীন ইমরান খান একাধিকবার এই জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করলেও, গত বছরই তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তানের সঙ্গে আলোচনা বিফল হয় এবং শান্তিচুক্তি ভেঙে যায়। নতুন প্রধানমন্ত্রী যিনিই হবেন, তাঁর কাছে অন্যতম চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে জঙ্গিদমন। অন্যদিকে, বালুচিস্তানের বিচ্ছিন্নতাবাদীরাও আরও বড় অর্থনীতির দাবি করেছে।
বিদেশনীতি ও সম্পর্ক:
গদিচ্যুত হওয়ার আগেই ইমরান খান দাবি করেছিলেন, তাঁকে ক্ষমতা থেকে সরানোর জন্য বিদেশি শক্তি চক্রান্ত করছে। সরাসরি আমেরিকার নামও নেন তিনি। যদিও আমেরিকার তরফে এই দাবি খারিজ করে দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে ইমরান গদিচ্যুত হয়েছেন, এবার আমেরিকা সহ পশ্চিমী দেশগুলির সঙ্গে সম্পর্ক ভাল করার দায় থাকবে নতুন প্রধানমন্ত্রী ও সরকারের উপরই। কারণ পাকিস্তানের অন্যতম অস্ত্র সরবরাহকারী আমেরিকাই।
সম্প্রতিই রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের সময়ই মস্কোর সফরে গিয়েছিলেন ইমরান খান। বেজিংয়ের শীতকালিন অলিম্পিকও অন্যান্য দেশ বয়কট করলেও ইমরান খান সেই অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন। এর জেরে পশ্চিমী দেশগুলির সঙ্গে আরও সম্পর্ক খারাপ হয়েছে আমেরিকার।
আরও পড়ুন: Shehbaz Sharif: ‘কারোর উপর প্রতিশোধ নেব না’, ইমরান ‘আউট’ হতেই ‘সুইং’ শাহবাজের