Bangladesh: মানবাধিকারের কথার ছলে মানব পাচার! রাষ্ট্রপুঞ্জের আমন্ত্রণপত্র বাগিয়েও হল না শেষ রক্ষা

Bangladeshi fake Human rights NGO: ‘প্রোটেকশন ফর লিগ্যাল অ্যান্ড হিউম্যান রাইটস ফাউন্ডেশন’ নামের একটি সংস্থা খুলে মানব পাচার করত বাংলাদেশের এক জালিয়াত চক্র। মার্কিন দূতাবাসের তদন্তে তাদের কারসাজি ধরা পড়ে গেল।

Bangladesh: মানবাধিকারের কথার ছলে মানব পাচার! রাষ্ট্রপুঞ্জের আমন্ত্রণপত্র বাগিয়েও হল না শেষ রক্ষা
ঢাকার মার্কিন দূতাবাস
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: May 31, 2023 | 1:33 PM

ঢাকা: ‘প্রোটেকশন ফর লিগ্যাল অ্যান্ড হিউম্যান রাইটস ফাউন্ডেশন’ নামের একটি সংস্থা খুলেছিল তারা। দাবি করেছিল, মানবাধিকার নিয়ে কাজ করে সংস্থাটি। এমনকি, রাষ্ট্রপুঞ্জের অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিষদের সম্মেলনে যোগ দেওয়ার আমন্ত্রণপত্রও পেয়ে গিয়েছিল। কিন্তু, সমস্যা হল মার্কিন দূবাস থেকে ভিসা করাতে গিয়েই। সেখানে নিজেদের সংস্থাকে রাষ্ট্রপুঞ্জের কনসালটেটিভ বা উপদেষ্টা বলে জাহির করেছিল তারা। কিন্তু, মার্কিন দূতাবাসের কর্তাদের কেমন সন্দেহ হয়েছিল। তদন্ত করতেই বেরিয়ে পড়ে জালিয়াতি। জানা যায়, কোনও মানবাধিকার নিয়ে কাজ নয়, আসলে রাষ্ট্রপুঞ্জের আমন্ত্রণপত্র বাগিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে মানব পাচার করাই ছিল তাঁদের আসল উদ্দেশ্য। এই ঘটনায় ওই জালিয়াত চক্রের ভুয়ো সংস্থার চেয়ারম্যান এবং সিইও-সহ মোট পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছে বাংলাদেশ পুলিশ। জানা গিয়েছে অর্থের বিনিময়ে বাংলাদেশ থেকে আমেরিকা ও ইউরোপের বিভিন্ন দেশে মানুষ পাচার করত তারা।

বাংলাদেশি সংবাদমাধ্যম ‘প্রথম আলো’র প্রতিবেদন অনুযায়ী, দীর্ঘদিন ধরে এই জালিয়াত চক্র কাজ করে গেলেও, এতদিন কেউ টেরটিও পায়নি। কিন্তু গত ২৬ এপ্রিল ঢাকায় মার্কিন দূতাবাসের ভিসার জন্য সাক্ষাৎকার দিতে গিয়েই সমস্যায় পড়ে তারা। সংস্থার পক্ষ থেকে তিন ব্যক্তি গিয়েছিল মার্কিন দূতাবাসে। ভিসার সাক্ষাৎকারের তাদের জবাবে অসঙ্গতি লক্ষ্য করেন কর্তারা। এরপরই সংস্থাটি সম্পর্কে খোঁজখবর নেওয়া শুরু করে দূতাবাস। বাংলাদেশের নথিভুক্ত এনজিওগুলির তালিকায় সংস্থাটির কোনও সন্ধান পাওয়া যায়নি। তারা ওয়েবসাইটে নিউইয়র্কে তাদের কার্যালয় আছে বলে যে ঠিকানা দিয়েছিল, তারও কোনও অস্তিত্বই নেই। এরপর, ২১ মে ওই তিনজন ফের ভিসার জন্য আবার মার্কিন দূতাবাসে আসামাত্র তাদের আটক করে দূতাবাসের কর্তারা। পরে তাদের বাংলাদেশ পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। পুলিশি জেরায় মানব পাচারের বিষয়টি জানা যায়। ওই তিনজনের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে পরে জালিয়াত চক্রটির দুই মাথাকেও গ্রেফতার করা হয়। এই ঘটনার বিষয়ে মার্কিন দূতাবাসের পক্ষ থেকে একটি মামলা করা হয়েছে।

বাংলাদেশ পুলিশ জানিয়েছে, ২০১৯ সালে একটি মানবাধিকার সংগঠন হিসেবে ‘প্রোটেকশন ফর লিগ্যাল অ্যান্ড হিউম্যান রাইটস ফাউন্ডেশন’ প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল। ঢাকার পল্টন এলাকায় খোলা হয়েছিল কার্যালয়। অনেকেই তাঁদের সমস্যা নিয়ে আসতেন সংস্থাটিতে। তাদের মধ্যে অর্থনৈতিকভাবে সচ্ছল ব্যক্তিদের নিশানা করত জালিয়াতরা। তাঁদের মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, ইটালি, অস্ট্রেলিয়ায় মতো দেশে পাঠানোর প্রলোভন দেখানো হত। এরপর ওই ব্যক্তিদের ভুয়ো মানবিধাকার সংস্থাটির বিভিন্ন কর্তাব্যক্তি সাজিয়ে রাষ্ট্রপুঞ্জের বিভিন্ন সংস্থার সম্মেলনে পাঠানো হত। সেই মর্মে বিভিন্ন দেশের ভিসা পেতে অসুবিধা হত না। ভিসার মেয়াদ শেষ হলেও অবৈধভাবে বিদেশেই থেকে গিয়েছেন ওই ব্যক্তিরা। এর জন্য প্রত্যেকের কাছ থেকে ১০ থেকে ১২ লক্ষ টাকা করে নেওয়া হয়েছিল।