দেশের কথা ভেবে সাংসদের নিদান, ‘দু’জনেই রোজগেরে হলে বিয়ে করা যাবে না! কারণ…’

Working Couple : যে পুরুষরা বিভিন্ন ক্ষেত্রে কর্মরত, তাঁরা চান কোনও রোজগেরে মহিলাকে বিয়ে করতে। আবার যে মহিলা কাজ করেন, নিয়মিত মাসহারা পান, তিনিও চাইবেন কোনও কর্মরত পুরুষকেই বিয়ে করতে। আর যদি এই ট্রেন্ড চলতে থাকে, তাহলে নাকি কোনওদিনই দেশের বেকার সমস্যার সমাধান হবে না। মত, বাংলাদেশের সাংসদের।

দেশের কথা ভেবে সাংসদের নিদান, 'দু'জনেই রোজগেরে হলে বিয়ে করা যাবে না! কারণ...'
প্রতীকী ছবি
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Sep 05, 2021 | 6:57 PM

ঢাকা : স্বামী – স্ত্রী দু’জনেই রোজগেরে হলে নাকি দেশের বেকার সমস্যা কোনওদিন দূর হবে না। অতএব চালাও কাঁচি ! যাঁরা দু’জনেই কর্মরত, এমন কোনও যুগলের আর বিয়ে করতে দেওয়া যাবে না। এমনই যুক্তি খাঁড়া করলেন বাংলাদেশের এক সাংসদ। বাংলাদেশের সংসদ ভবনে অধিবেশন চলাকালীন সে-দেশের বেকারত্ব নিয়ে বক্তব্য রাখছিলেন নির্দল সাংসদ রেজ়াউল করিম। তখনই এমন উদ্ভট মন্তব্য করে বসেন সাংসদ।

রেজ়াউল করিমের আজব যুক্তি, যে পুরুষরা বিভিন্ন ক্ষেত্রে কর্মরত, তাঁরা চান কোনও রোজগেরে মহিলাকে বিয়ে করতে। আবার যে মহিলা কাজ করেন, নিয়মিত মাসহারা পান, তিনিও চাইবেন কোনও কর্মরত পুরুষকেই বিয়ে করতে। আর যদি এই ট্রেন্ড চলতে থাকে, তাহলে নাকি কোনওদিনই দেশের বেকার সমস্যার সমাধান হবে না। সাংসদের এও মনে করেন, কর্মরত দম্পতিদের সন্তানরা অধিকাংশ সময়ে বাড়ি পরিচারক – পরিচারিকাদের হেনস্থার শিকার হয়। সুতরাং, বেকার সমস্যা দূর করতে হলে এবং শিশুদের উপর অত্যাচার কমাতে হলে, রোজগেরে যুগলদের বিয়ে করতে দেওয়া উচিত নয়।

সাংসদের এই আজব যুক্তি শোনা মাত্রই হাসির রোল ওঠে অধিবেশন কক্ষে। সমালোচনাও করেন অনেকে। ঠাট্টা করতে ছাড়েননি বাংলাদেশের আইনমন্ত্রী আনিসুল হকও। তিনি তামাশা করে সাংসদের এ হেন বক্তব্যকে ‘বাক স্বাধীনতার বহিঃপ্রকাশ’ হিসেবে দেখছেন। তবে এই ধরনের যুক্তি যে একেবারেই অসাংবিধানিক, তাও স্পষ্ট করেন দেন আইনমন্ত্রী। বলেন, “এই প্রস্তাব যদি আমি গ্রহণ করি তাহলে আমি সংসদের বাইরে দু’পা ফেলতে পারব না। এটি সম্পূর্ণ অসাংবিধানিক।” কিছুটা ঠাট্টার সুরে আইনমন্ত্রী বলেন, এই প্রস্তাব গ্রহণ করে একজন জনপ্রতিনিধি হিসেবে তিনি কখনোই নিজের ‘কেরিয়ারকে’ প্রশ্নচিহ্নের মুখে ফেলতে চান না।

আনিসুল হকের সাফ বক্তব্য, “যেহেতু আমাদের প্রত্যেকের বাক-স্বাধীনতা রয়েছে, তিনি (রেজ়াউল করিম) নিজের খুশি মতো যা ইচ্ছা বলতেই পারেন। তিনি তাঁর বাক-স্বাধীনতার সুযোগ নিচ্ছেন।”

উল্লেখ্য, রেজাউল করিম ২০১৮ সালেই প্রথমবার বাংলাদেশের সংসদ ভবনে পা রাখেন। সাংসদ হিসেবে এখনও পাঁচ বছর পূরণ না হলেও এর আগেও একাধিকবার খবরের শিরোনামে জায়গা করে নিয়েছেন তিনি। আর প্রতিবারই কিছু না কিছু বিতর্ক জড়িয়েছে তাঁর নামের সঙ্গে। বাংলাদেশে একের পর এক ধর্ষণের ঘটনার জন্য গতবছর তিনি দায়ি করেছিলেন নারীকেন্দ্রিক প্রচার অভিযানগুলিকে। সেই মন্তব্যেও চারিদিকে সমালোচনার ঝড় উঠেছিল। একবার তো সাংসদ নিজের ফেসবুক প্রোফাইলে পিস্তল হাতে ছবিও পোস্ট করে ফেলেছিলেন। এমনই একাধিক বিতর্কে নাম জড়িয়ে রয়েছে বাংলাদেশের সাংসদ রেজাউল করিমের।

সাংসদের এবারের মন্তব্যের জেরেও ঢাকায় বেশ সমালোচনার ঝড় উঠেছে। তবে কর্মরত যুগলদের জন্য আপাতত শান্তি, যে সাংসদের এমন আজব দাবিকে মান্যতা দিচ্ছে না বাংলাদেশ সরকার। আরও পড়ুন : করোনায় দোসর ডেঙ্গু ! দুশ্চিন্তা বাড়ছে ঢাকায়