Iran: এ যেন উলটপুরাণ! ফিফা বিশ্বকাপ থেকে ইরান ছিটকে যেতেই উদযাপনে মাতল গোটা দেশ

FIFA World Cup 2022: ইরানবাসীদের এই উদযাপন করা নিয়ে একাংশ সমালোচনা করলেও, তাদের তরফে জানানো হয়েছে, এই হার শুধুমাত্র ইরানের ফুটবল দলের নয়, বরং সরকারেরও। আর সেই কারণেই উদযাপন।

Iran: এ যেন উলটপুরাণ! ফিফা বিশ্বকাপ থেকে ইরান ছিটকে যেতেই উদযাপনে মাতল গোটা দেশ
ইরানের হারের পর দেশবাসীর উদযাপন। ছবি টুইটার
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Nov 30, 2022 | 2:45 PM

তেহরান: বিশ্বকাপে কোনও দল জয়ী হলে যেখানে আনন্দে মেতে উঠছে সেই দেশ, সেখানেই সম্পূর্ণ ভিন্ন চিত্র ধরা পড়ল ইরানে (Iran)। মঙ্গলবার রাতে ফিফা বিশ্বকাপে (FIFA World Cup 2022) ইরানের ফুটবল দল  (Iran Football Team) হেরে যেতেই সে দেশের বাসিন্দারা আনন্দে মেতে উঠল। রাস্তায় নেমে উল্লাস, বাজি পোড়াতে দেখা গেল। নিজের দেশের দলের হারে ইরানবাসীদের এই প্রতিক্রিয়ায় অবাক গোটা বিশ্ব। তবে সে দেশের বাসিন্দারা জানিয়েছেন, এই উদযাপনের পিছনে লুকিয়ে রয়েছে অনেক গভীর কারণ। বিগত কয়েক মাস ধরেই ইরানে যে হিজাব বিরোধী আন্দোলন (Hijab Protest) শুরু হয়েছে এবং তা দমন করতে সরকার যে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছে, তার বিরোধিতা করতেই এই উদযাপন।

সঠিকভাবে হিজাব না পরায় পুলিশের মারে মৃত্য়ু হয়েছিল মাহসা আমিনি নামক এক ২২ বছরের যুবতীর। এরপর থেকেই বিক্ষোভের আগুন জ্বলছে ইরানে। হিজাব পুড়িয়ে, চুল কেটে প্রতিবাদ প্রদর্শন করেন সে দেশের মহিলারা। পাশে দাঁড়ান পুরুষরাও। অন্যদিকে, বিক্ষোভকারীদের দমাতে কঠোর পদক্ষেপ করে ইরান সরকার। লাঠিচার্জ থেকে গ্রেফতার, গুলি চালানোর মতো ঘটনা প্রায় রোজই হচ্ছে। ইতিমধ্যেই পুলিশ ও নিরাপত্তাবাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে শতাধিক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে।

মঙ্গলবার রাতে ইরানের সঙ্গে ফুটবল ম্যাচ ছিল আমেরিকার। সেই ম্য়াচে হেরে যায় ইরান। আর এই হারের সঙ্গে সঙ্গেই বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে গেল চরম ইসলামপন্থী দেশ। এরপরই দেখা যায়, উদযাপনে মেতে উঠেছে ইরানবাসী। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া বিভিন্ন ছবি ও ভিডিয়োয় দেখা যায়, রাস্তায় নেমে উদযাপন করছেন ইরানের বাসিন্দারা। কোথাও বাঁশি বাজিয়ে, কোথাও আবার বাজি পুড়িয়ে, রাস্তায় নেচে উদযাপন করেন। মাহসা আমিনি, যার মৃত্যুতেই ইরানে আন্দোলন শুরু হয়েছিল, তার বাড়ি সাকেজ়েও বাজি পুড়িয়ে উদযাপন করা হয়।

ইরানবাসীদের এই উদযাপন করা নিয়ে একাংশ সমালোচনা করলেও, তাদের তরফে জানানো হয়েছে, এই হার শুধুমাত্র ইরানের ফুটবল দলের নয়, বরং সরকারেরও। আর সেই কারণেই উদযাপন। হিজাব বিরোধী  আন্দোলনের যেভাবে কণ্ঠরোধ করার চেষ্টা করা হচ্ছে, তার প্রতিবাদেই এই উদযাপন। এরসঙ্গে ইরানের ফুটবল দলের সঙ্গে কোনও শত্রুতা বা বিতৃষ্ণা নেই। ইরানের ফুটবল দলের মনোবল ভাঙারও চেষ্টা করা হয়নি এই উদযাপনের মধ্য দিয়ে।

গত সেপ্টেম্ববরে সঠিকভাবে হিজাব না পরার অপরাধে, পুলিশের মারে মৃত্য়ু হয়েছিল মাহসা আমিনির। এরপরই বিক্ষোভ শুরু হয় ইরানে। এখনও অবধি ৩০০ জন বিক্ষোভকারীর মৃত্যু হয়েছে।

প্রসঙ্গত, সম্প্রতি ইরানের ফুটবল দলও খেলার মাঠেই প্রতিবাদ প্রদর্শন করেছিল। গত ২২ নভেম্বর ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ম্যাচে ইরানের ফুটবলাররা জাতীয় সঙ্গীত গাননি।