Pakistan: বাতিল ঔপনিবেশিক যুগের ‘রাষ্ট্রদ্রোহ আইন’, ভারতকে পিছনে ফেলল পাকিস্তান

Pakistan sedition law: বৃহস্পতিবার (৩০ মার্চ), এক ঐতিহাসিক রায় দিল লাহোর হাইকোর্ট। বাতিল হল পাকিস্তানি দণ্ডবিধির ১২৪-এর ক ধারা বা রাষ্ট্রদ্রোহ আইন।

Pakistan: বাতিল ঔপনিবেশিক যুগের 'রাষ্ট্রদ্রোহ আইন', ভারতকে পিছনে ফেলল পাকিস্তান
লাহোর হাই কোর্ট (ফাইল ছবি)
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Mar 30, 2023 | 11:31 PM

লাহোর: পাকিস্তানে আর কাউকে রাষ্ট্রদ্রোহ আইনে দোষী সাব্যস্ত করা যাবে না। ভারত এখনও পর্যন্ত ব্রিটিশ আমলের এই আইন বাতিল করতে না পারলেও, পাকিস্তান তা করে দেখাল। বৃহস্পতিবার (৩০ মার্চ), এক ঐতিহাসিক রায় দিল লাহোর হাইকোর্ট। বাতিল হল পাকিস্তানি দণ্ডবিধির ১২৪-এর ক ধারা। এই ধারায় রাষ্ট্রদ্রোহিতাকে অপরাধ বলে গণ্য করা হত। বিচারপতি শাহিদ করিমের একক-বিচারপতির বেঞ্চ জানিয়েছে, ১২৪-এর ক ধারা পাকিস্তানের সংবিধানের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ। এই আইন পাকিস্তানি সংবিধানের অনুচ্ছেদ ১৯-এ যে বাক ও মত প্রকাশের স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছে, তা লঙ্ঘন করে।

কী এই রাষ্ট্রদ্রোহ আইন?

বস্তুত, পাকিস্তান এবং ভারতের রাষ্ট্রদ্রোহিতার আইনে কোনও ফারাক নেই। আসলে এটি ব্রিটিশ ঔপনিবেশিকদের তৈরি আইন, যা দুই দেশই স্বাধীনতার পর থেকে এতদিন পর্যন্ত বহাল রেখেছিল। এই আইনে বলা হয়েছে, কেউ যদি কথিত বা লিখিত শব্দ বা চিহ্ন দ্বারা বা দৃশ্যমান উপস্থাপনা দ্বারা কিংবা অন্য কোনও উপায়ে, বিধি দ্বারা প্রতিষ্ঠিত যুক্তরাষ্ট্রীয় বা প্রাদেশিক সরকারের বিরুদ্ধে ঘৃণা বা অবমাননা সৃষ্টি করে বা সৃষ্টির চেষ্টা করে, অথবা অসন্তোষ তৈরির চেষ্টা করে, তাহলে তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হবে। তার সঙ্গে জরিমানাও যোগ করা যেতে পারে। জরিমানা না দিতে পারলে কারাদণ্ড আরও তিন বছর পর্যন্ত বাড়তে পারে।

কেন বাতিল রাষ্ট্রদ্রোহ আইন?

লাহোর হাইকোর্টে এই রাষ্ট্রদ্রোহ আইন বাতিল করার জন্য একগুচ্ছ আবেদন জমা পড়েছিল। সেই আবেদনগুলিতে বলা হয়েছিল, পাকিস্তানে এই আইনের অপব্যবহার করা হচ্ছে। ক্ষমতাসীন দল তাদের বিরোধীদের শায়েস্তা করতে অন্যায্যভাবে এই আইনকে ব্যবহার করছে। আবেদনে আরও বলা হয়েছিল, এই আইন পাকিস্তানি সংবিধানের অনেকগুলি অনুচ্ছেদ লঙ্ঘনকারী। এর মধ্যে রয়েছে অনুচ্ছেদ ১৪ (মর্যাদার অধিকার), ১৫ (চলাচলের স্বাধীনতা), ১৬ (সমাবেশের স্বাধীনতা), ১৭ (সংগঠনের স্বাধীনতা), ১৯ (বাক স্বাধীনতা), ১৯-এর ক (তথ্যের অধিকার)।

ভারতে রাষ্ট্রদ্রোহ আইনের কী অবস্থা?

ভারতেও গত কয়েক বছর ধরে রাষ্ট্রদ্রোহ আইন বাতিল করা নিয়ে তর্ক-বিতর্ক চলছে। ভারতীয় দণ্ডবিধির ১২৪-এর ক ধারা বা রাষ্ট্রদ্রোহ আইনের সমতুল্য বিধানটি অবিকল এক। ভারতে এখনও আইনটি বাতিল না হলেও সুপ্রিম কোর্টের অন্তর্বর্তী রায়ে আপাতত নিষ্ক্রিয় রয়েছে। ২০২২-এর মে মাসে, কেন্দ্রীয় সরকার, শীর্ষ আদাল হলফনামা দাখিল করে জানিয়েছিল, এই আইনটি সরকার ফের যাচাই ও পুনর্বিবেচনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এরপরই সুপ্রিম কোর্ট তার অন্তর্বর্তীকালীন রায়ে বলেছিল, সরকারের আইনটি পর্যালোচনা করা শেষ না হওয়া পর্যন্ত ভারতীয় দণ্ডবিধির ১২৪-এর ক ধারা স্থগিত রাখা হবে। একইসঙ্গে এই আইনের অধীনস্ত সমস্ত মুলতুবি থাকা মামলার তদন্ত বা কোনও কঠোর পদক্ষেপ না করার নির্দেশ দিয়েছিল আদালত। এই ধরনের মামলা আছে যাদের নামে, তাদের আদালতের দ্বারস্থ হওয়ার অধিকারও দিয়েছে আদালত। সেই সঙ্গে বলেছে মামলাগুলির দ্রুত নিষ্পত্তি করতে হবে। ভারতের আগেই এই ঔপনিবেশিক চিহ্ন মুছে ফেলল পাকিস্তান।