Rishi Sunak: ‘এক যুবতীর গল্প…’, উলটপুরাণ! ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী হতে গিয়ে ভারতকে আঁকড়ে ধরলেন ঋষি সুনাক

Rishi Sunak Indian Roots: শুক্রবার (৮ জুলাই) আনুষ্ঠানিকভাবে নতুন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসেবে নিজের নাম ঘোষণা করলেন ঋষি সুনাক। নিজের ভারতীয় শিকড়ের কাহিনি বলে ব্রিটিশদের সমর্থন চাইলেন তিনি।

Rishi Sunak: 'এক যুবতীর গল্প…',  উলটপুরাণ! ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী হতে গিয়ে ভারতকে আঁকড়ে ধরলেন ঋষি সুনাক
শুধু ভারতীয় বংশোদ্ভূত নন, ভারতের জামাইও বটে
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jul 09, 2022 | 9:10 AM

লন্ডন: গত মঙ্গলবার ব্রিটেনের চ্যান্সেলর বা অর্থমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন ঋষি সুনাক। তার সেই পদত্যাগের সূত্র ধরে ঘটনাক্রম যেই পথে এগিয়েছে, তাতে ইস্তফা দিতে বাধ্য হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। জনসনের উত্তরসূরি হিসেবে তারপর থেকেই শোনা যাচ্ছিল ঋষি সুনাকেরই নাম। পরবর্তী ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী হিসাবে বুকিরা সবথেকে বেশি বাজি ধরেছে তাঁরই উপর। তাদের হিসাবে সুনাকের দর এখন ৪/১। সব জল্পনার অবসান ঘটিয়ে, শুক্রবার (৮ জুলাই) আনুষ্ঠানিকভাবে নতুন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসেবে নিজের নাম সগর্বে ঘোষণা করেছেন। আর সেই সময় তাঁর কণ্ঠে শোনা গেল শিকড়ের টান, ভারতীয় এক যুবতীর গল্প শোনালেন তিনি।

ভারতকে ব্রিটিশরা ২০০ বছর ধরে শাসন করেছিল। ভারতের স্বাধীনতা প্রাপ্তির ৭৫তম বর্ষে ইতিহাসের এক অদ্ভুত উলটপুরাণ ঘটতে চলেছে। ব্রিটিশ বুকি এবং সংবাদমাধ্যগুলির পূর্বাভাস মানলে, যুক্তরাজ্যের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হতে চলেছেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ রাজনীতিবিদ ঋষি সুনাক। এদিন, টুইটারে তিনি একটি ভিডিয়ো প্রকাশ করে ব্রিটিশ জনগণকে জানালেন, তিনি কনজারভেটিভ পার্টির পরবর্তী নেতা তথা তাঁদের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হওয়ার জন্য প্রার্থী হয়েছেন। আরও আশ্চর্যের বিষয়, ব্রিটিশ জনতার মন পেতে তিনি তুলে ধরলেন তাঁর ভারতীয় শিকড়ের কথা।

টুইটারে প্রকাশ করা ভিডিয়োতে ঋষি সুনাক বলেন, ‘আমি আপনাদের এক যুবতীর গল্প বলি। যিনি প্রায় এক যুগ আগে, তাঁর পরিবারের ভালবাসাকে সম্বল করে এক উন্নত জীবনের আশায় বিমানে চড়েছিলেন। তরুণীটি ব্রিটেনে এসেছিলেন। তিনি এখানে চাকরি পেয়েছিলেন। কিন্তু স্বামী-সন্তান নিয়ে সংসার পাতার মতো পর্যাপ্ত অর্থ সঞ্চয় করতে তাঁর প্রায় আট বছর সময় লেগে গিয়েছিল।’ এই যুবতী আর কেউ নন, তিনি ঋষি সুনাকের ঠাকুমা। ভারত থেকে বহু বছর আগে তিনি যুক্তরাজ্যে পাড়ি দিয়েছিলেন।

সুনাক বলেন, ‘সেই সন্তানদের একজন ছিলেন আমার মা। তিনি কঠোর অধ্যয়ন করে ফার্মাসিস্ট হওয়ার যোগ্যতা অর্জন করেছিলেন। তারপর, আমার বাবার সঙ্গে তাঁর দেখা হয়েছিল। সাউদাম্পটনে তাঁরা সংসার পেতেছিলেন। তবে, সেখানেই তাঁদের গল্প শেষ হয়ে যায়নি। কারণ, সেখান থেকে শুরু হয়েছিল আমার গল্প। আমার পরিবার আমাকে স্বপ্ন দেখার সুযোগ দিয়েছে। লক্ষ লক্ষ মানুষকে উন্নত জীবনযাপনের সুযোগ দিয়েছে ব্রিটেন। আমি কনজারভেটিভ পার্টির পরবর্তী নেতা এবং আপনার প্রধানমন্ত্রী হওয়ার জন্য প্রার্থী হয়েছি। আসুন আস্থা ফিরিয়ে আনি। অর্থনীতিকে ঢেলে সাজাই। দেশকে ফের ঐক্যবদ্ধ করি।’

এই ভিডিয়ো প্রকাশের মাধ্যমেই ঋষি সুনাক, প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হওয়ার জন্য প্রচার অভিযান শুরু করলেন। এই ভিডিয়ো প্রকাশের মাধ্যমেই ঋষি সুনাক, প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হওয়ার জন্য প্রচার অভিযান শুরু করলেন। স্লোগান, ‘রেডি ফর ঋষি’! সেই সঙ্গে, তাঁর পারিবারিক ছবি দেখিয়ে নিজের ভারতীয় শিকড়কে ব্রিটিশ জনগণের সামনে তুলে ধরলেন। তবে, শুধু যুক্তরাজ্যের প্রথম ব্রিটিশ ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী হওয়াটই তাঁর লক্ষ্য বলে মানতে চাননি সুনাক। ৪২-বছর-বয়সী রিচমন্ডের সাংসদ বলেছেন, ‘ব্রিটিশ-ভারতীয়েই যাতে কাহিনি শেষ না হয়, তা আমাদের নিশ্চিত করতে হবে। আমরা আরও অনেক কিছু অর্জন করতে পারি। আরো অনেক কিছু করার আছে। ভবিষ্যতের নিয়ে আমি সত্যিই উত্তেজিত।’

কোভিড মহামারির সময়ে একাধিক মিনি-বাজেট পেশ করে একদিকে নিজের দক্ষতার প্রমাণ রেখেছেন, অন্যদিকে, ব্রিটিশ জনতার মধ্য়ে বেড়েছে তাঁর জনপ্রিয়তা। তবে, সম্প্রতি কিছু বিষয়ে তিনি কর বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। তাতে যুক্তরাজ্যেবাসীর জীবনযাত্রার ব্যয় আরও বেড়েছে। ফলে কিছুটা হলেও টাল খেয়েছে তাঁর লোকপ্রিয়তা। শেষ পর্যন্ত ইনফোসিস সংস্থার কর্ণধার নারায়ণ মূর্তির জামাই ১০ নম্বর ডাউনিং স্ট্রিটের নতুন বাসিন্দা হতে পারবেন কি না, তা জানার জন্য সেপ্টেম্বর পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হতে পারে। ওই সময়ই কনজারভেটিভ পার্টির নতুন নেতা বাছা হতে পারে।