Rahul Gandhi: বিদেশের মাটিতে রাহুলের মন্তব্যে উত্তাপ ছড়াল সংসদেও, ক্ষমা চাওয়ার দাবি বিজেপির
Rahul Gandhi: কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে রাহুলের মন্তব্য নিয়ে সোমবার উত্তাল সংসদ। রাহুলকে ক্ষমা চাইতে হবে, এই দাবিতে অনড় বিজেপি।
নয়া দিল্লি: কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে ভারতের গণতান্ত্রিক অবস্থা নিয়ে জ্বালাময়ী বক্তব্য রেখেছিলেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী (Rahul Gandhi)। ভারতে কোনও গণতন্ত্র নেই বলে দাবি করেন তিনি। পরে ব্রিটিশ পার্লামেন্টে গিয়েও বলেছিলেন, লোকসভায় কোনও কিছু বলতে গেলে মাইক বন্ধ করে দেওয়া হয়। বিদেশের মাটিতে রাহুলের এহেন মন্তব্যে ভারতের মর্যাদা ও গণতান্ত্রিক ছবি নষ্ট হয়েছে বলে মনে করছে একাধিক মহল। আর রাহুলের এই মন্তব্যের জন্য ক্ষমা চাওয়ার দাবিও জানায় বিজেপি। পাল্টা কংগ্রেসের অভিযোগ, আদানি-হিন্ডেনবার্দ ইস্যু থেকে নজর সরানোর জন্য উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে এটা করছে বিজেপি। আর রাহুল-বিজেপির এই দ্বন্দ্বে বাজেট অধিবেশনের দ্বিতীয় পর্বের সংসদের অধিবেশন কার্যত ভন্ডুল হল সোমবার।
দ্বিতীয় দফার বাজেট অধিবেশন শুরু হল আজ থেকে। আর এই অধিবেশনে বিজেপিকে কীভাবে কোণঠাসা করা যায় তার ব্লু প্রিন্ট তৈরিও করে বিরোধীদলগুলি। এদিকে বিরোধীদের পাল্টা আক্রমণেরও ঘুটি সাজাচ্ছিল কেন্দ্র। সকালেই বৈঠকে বসে বিজেপির প্রথম সারির নেতারা। বৈঠকে ছিলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, রাজনাথ সিং এবং পীযূষ গয়াল, প্রহ্লাদ যোশী, অনুরাগ ঠাকুরের মতো অন্যান্য কেন্দ্রীয় নেতারা। এই বৈঠকেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, সাংসদরা দুই কক্ষেই রাহুলের মন্তব্যের তীব্র বিরোধিতা করবেন। আজ অধিবেশনের শুরুতে সাংসদরা জড়ো হওয়ার পরই প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং রাহুল গান্ধীর মন্তব্যের তীব্র নিন্দা করেন। তিনি বলেন, প্রাক্তন কংগ্রেস প্রধানের উচিত ক্ষমা চাওয়া। এদিকে রাজ্যসভায় সুর চড়িয়েছিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পীযূষ গয়াল। তিনি বলেন, বিদেশের মাটিতে দাঁড়িয়ে একজন বর্ষীয়ান নেতার ভারতীয় গণতন্ত্রের অপমান করা খুব নিন্দাজনক।
এদিকে কংগ্রেসের বক্তব্য, বিদেশের মাটিতে পূর্ববর্তী সরকারকে তো প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও অপমান করেছেন। সংসদেই মোদী সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন বিরোধী সাংসদরা। এই হই হট্টগোলের মধ্যে লোকসভা মুলতুবি হয়ে যায়। এদিন সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে কংগ্রেস প্রেসিডেন্ট মল্লিকার্জুন খাড়্গে বলেন, “যাঁরা গণতন্ত্রের ধ্বংস করছে গণতন্ত্র রক্ষার বুলি আবার তাঁদের মুখেই।”এদিকে কংগ্রেসকে সমর্থন জানিয়েছে আম আদমি পার্টি ও কে চন্দ্রশেখরের বিআরএস। তবে এক্ষেত্রে নিজেদের শতকোটি দূরে রেখেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৃণমূল কংগ্রেস।
এদিকে খাড়্গে জানিয়েছেন, বিজেপি যতই আদানি-হিন্ডেনাবার্গ ইস্যু থেকে নজর ঘোরানোর চেষ্টা করুক না কেন এই ইস্যুতে জেপিসি গঠনের দাবিতে অনড় থাকবে বিরোধী দলগুলি। লোকসভায় রাজনাথ ও প্রহ্লাদ যোশীর মন্তব্য নিয়ে কংগ্রেসের দলনেতা অধীর চৌধুরী লোকসভার স্পিকারকে চিঠি লিখেছেন। সেখানে তিনি উল্লেখ করেছেন, “আজ দুই মাননীয় মন্ত্রী আমাদের নেতার বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন মন্তব্য করেছেন। পূর্ব বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়নি এবং কংগ্রেসের সাংসদদের কোনও সুযোগ দেওয়া হয়নি।” এর পাশাপাশি স্পিকারের কাছে তিনি রাজনাথ সিং ও প্রহ্লাদ যোশীর বিবৃতিটি বাদ দেওয়ার অনুরোধ জানান। এদিকে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার অপব্যবহারের বিরোধিতায় প্রতিবাদ-বিক্ষোভের কথা বলেন বিআরএস। এইসব ইস্যু নিয়েই সোমবার সংসদ চত্বরে উত্তাপ বজায় ছিল।