Pingali Venkayya: ভারতের জাতীয় পতাকার নকশা বানাতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান ছিল এই স্বাধীনতা সংগ্রামীর
সে সময় যে পতাকার নকশা জমা দিয়েছিলেন ভেঙ্কাইয়া তাতে ছিল ২টি রং। লাল ও সবুজ। গান্ধীজি সাদা রঙের একটি স্তর যোগ করতে অনুরোধ করেন। সেই মতো মধ্যে সাদা রেখে দুপাশে লাল ও সবুজ রং দিয়ে নকশা করা হয় পতাকার।
নয়াদিল্লি: তিরঙ্গা পতাকা বিশ্বের দরবার তুলে ধরে ভারতের পরিচয়। স্বাধীনতা প্রাপ্তির পর এই পতাকা ভারতের প্রতীক হিসাবে ব্যবহার করা হয়। এই পতাকা নকশার পিছনে যাঁর অবদান সবথেকে বেশি বলে মনে করা হয় তিনি হলেন পিঙ্গালি ভেঙ্কাইয়া। গান্ধীবাদী এই স্বাধীনতা সংগ্রামী ভারতের প্রতীক হিসাবে পতাকার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেছিলেন। সে কথা জানিয়েছিলেন মহাত্মা গান্ধীকে। সে সময় পতাকার নক্সাও করেছিলেন তিনি। তাঁর নকশা করা সেই পতাকায় সামান্য রদবদল ঘটিয়েই তৈরি হয়েছে ভারতের জাতীয় পতাকা।
১৮৭৮ সালের ২ অগস্ট অন্ধ্র প্রদেশের ভাটলাপেনুমারুতে এক তেলেগু ব্রাহ্মণ পরিবারে জন্মেছিলেন তিনি। তাঁর বয়স যখন ১৯ বছর তখন তিনি যোগ দিয়েছিলেন ব্রিটিশ ইন্ডিয়ান আর্মিতে। দক্ষিণ আফ্রিকায় বোয়ের যুদ্ধেও অংশ নিয়েছিলেন। যুদ্ধের সময় তিনি দেখেছিলেন, সেনায় কাজ করা ভারতীয়দের ব্রিটিশ ইউনিয়ক জ্যাকে স্যালুট ঠুকতে হয়। তখনই ভারতীয়দের জন্য পতাকার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেন তিনি। দক্ষিণ আফ্রিকাতেই মহাত্মা গান্ধীর সঙ্গে সখ্যতা গড়ে ওঠে তাঁর। এর পর ১৯০৬ সালে কলকাতায় অনুষ্ঠিত এআইসিসি-র বৈঠকে যোগ দিয়েছিলেন। সেখানে তিনি পতাকার নকশা তৈরির কথা বলেন। সেখানে নিজস্ব পতাকা তৈরির বিষয়টি নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সেই মতো পতাকার ২৫টি নকশা তৈরি করেছিলেন পিঙ্গালি। পরে গান্ধী একটি নকশা জমা দেওয়ার জন্য বলেন তাঁকে।
সে সময় যে পতাকার নকশা জমা দিয়েছিলেন ভেঙ্কাইয়া তাতে ছিল ২টি রং। লাল ও সবুজ। গান্ধীজি সাদা রঙের একটি স্তর যোগ করতে অনুরোধ করেন। সেই মতো মধ্যে সাদা রেখে দুপাশে লাল ও সবুজ রং দিয়ে নকশা করা হয় পতাকার। এর মধ্যে ছিল চরকার প্রতীক। সেই পতাকায় কংগ্রেসের বিভিন্ন বৈঠকে ব্যবহার করা হত। ১৯৪৭ সালের ২২ জুলাই তা কংগ্রেসের অফিসিয়াল প্রতীক হয়। ১৯৪৭ সালে এই পতাকাতেই কিছুটা পরিবর্তন এনে তৈরি হয় ভারতের জাতীয় পতাকা। লালের বদলে গেরুয়া এবং সাদার মধ্যে অশোকচক্র ঠাঁই পায় ভারতের পতাকায়।
আজীবন গান্ধীবাদী পিঙ্গলা ১৯৬৩ সালে মারা যান। তবে স্বাধীনতা সংগ্রামী ছাড়াও তিনি ছিলেন এক জন শিক্ষক ও লেখক। জিওলজি নিয়ে তিনি পড়েছিলেন মাদ্রাস প্রেসিডেন্সি কলেজে। জাপানি ভাষাতেও দক্ষ ছিলেন তিনি।