PM Narendra Modi: ‘তৃণমূলের জুলুমবাজির সাক্ষী গোটা দেশ’, পঞ্চায়েত নির্বাচনে হিংসা নিয়ে সরব মোদী

West Bengal Kshetriya Panchayati Raj Sammelan: শনিবার বিজেপির পূর্বাঞ্চলীয় পঞ্চায়েতী রাজ অনুষ্ঠানে ভিডিয়ো কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে অংশ নেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।

PM Narendra Modi: 'তৃণমূলের জুলুমবাজির সাক্ষী গোটা দেশ', পঞ্চায়েত নির্বাচনে হিংসা নিয়ে সরব মোদী
বিজেপির পঞ্চায়েতি রাজ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী মোদী।Image Credit source: ANI
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Aug 12, 2023 | 12:59 PM

নয়া দিল্লি:  ফের একবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নিশানায় ইন্ডিয়া জোট। শনিবার বিজেপির পশ্চিমবঙ্গ ক্ষেত্রীয় পঞ্চায়েতি রাজ সম্মেলনের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ভিডিয়ো কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে  এই অনুষ্ঠানে অংশ নেন তিনি। সেই অনুষ্ঠানেই তিনি বিরোধী জোটকে মণিপুর ইস্যু নিয়ে তীব্র আক্রমণ করেন। মণিপুরবাসীর সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করা হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি। একইসঙ্গে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসকেও আক্রমণ করেন তিনি।

  1. প্রতি সপ্তাহে আধিকারিকদের কাছ থেকে রিপোর্ট নেওয়া উচিত যে কোন প্রকল্পের কাজ কত দূর এগোল।
  2. আমরা গরিব জীবনযাপন করে এসেছি, তাই জানি গরিবির সমস্যার শিকড় কোথায়। সরকার ১৮ হাজার গ্রামে বিদ্যুৎ পৌঁছে দিয়েছে, এর মধ্যে ১৩ হাজার তো পূর্ব ভারতের। জলজীবন মিশনের মাধ্য়মে ঘরে ঘরে জল পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। মিজোরামে ৪ বছর আগেও মাত্র ৬ শতাংশ ঘরে কল দিয়ে জল আসত। আজ সেই সংখ্যা ৯০ শতাংশে পৌঁছেছে। পিএম আবাস যোজনাও গরিব মানুষের জীবনকে সহজ করতে অনেক সাহায্য করেছে। বিহারে ৫০ লক্ষেরও বেশি পাকা বাড়ি তৈরি হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গে এই সরকার কাজ করতে দেয় না, তাও ৪৫ লক্ষ বাড়ি তৈরি করেছি আমরা।
  3. বিগত ৫০ বছর ধরে আমরা একই স্লোগান শুনে আসছি। বিশেষ করে নির্বাচনের সময় তো এই স্লোগান আরও বেশি শোনা যায়, তা হল গরিবি হটাও। কিন্তু যারা এই স্লোগান দিয়েছেন, তারা কখনও গরিবদের পরোয়া করেননি, গরিবি হটাতেও পারেননি। প্রশ্নটা হল, যে কাজ ৫ দশকে হয়নি, তা বিজেপি সরকার এত কম সময়ে কী করে করল?
  4. বিগত ৫ বছরে সাড়ে ১৩ কোটি মানুষ দারিদ্র সীমা থেকে উঠে এসেছেন। এর জন্য় বিশেষ অবদান পূর্ব ভারতের রয়েছে। নাড্ডাজিও নিজের আস্থা প্রকাশ করেছেন। আপনাদের বলছি, নিজের অঞ্চলের সাধারণ মানুষের কাছে যান এবং উন্নয়নের খতিয়ান তুলে ধরুন।
  5. পূর্ব ভারতে বরাবর বিজেপির প্রাধান্য় রয়েছে। এই ক্ষেত্রের বসবাসকারীদের আকাক্ষ্মা পূরণ করা আমাদের দায়িত্ব। এই আকাক্ষ্মা প্রতিনিয়ত বেড়েই চলেছে। আমাদের দায়িত্বও বাড়ছে। সমস্ত খামতি পূরণের জন্য কাজ করছি আমরা।
  6. আমি নাড্ডাজি ও অন্যান্য নেতাদের অভিনন্দন জানাচ্ছি। পঞ্চায়েতের কাজের প্রশিক্ষণ চলছে। আমরা গেট-টুগেদারের জন্য় আসি না। নিরন্তর নতুন কিছু শিখতে আসি। আমার বিশ্বাস, আপনারা কাজের ধরন নিয়ে অনেক নতুন কিছু শিকতে পারবেন।
  7. বিজেপি জিতলে তাদের বিজয় মিছিল বের করতে দেওয়া হয় না। মিছিলে হামলা করা হয়। প্রাণঘাতি হামলা করা হয়। এটাই টিএমসির রাজনীতি। আদিবাসী ভাইবোনেদের কীভাবে প্রতারিত করা হচ্ছে, তা আমরা জানি। এরপরও বিজেপির কর্মীরা জয়ী হয়েছেন। তাদের আমি অভিনন্দন জানাচ্ছি।
  8. সদ্য পশ্চিমবঙ্গে পঞ্চায়েত নির্বাচন হয়েছে, এই নির্বাচনে তৃণমূল খুনের খেলা খেলেছে। গোটা দেশ তা দেখেছে। প্রথমে এদের কৌশল হল নির্বাচনের জন্য সময় না দেওয়া। দ্বিতীয়, বিজেপি বা কোনও বিরোধী দলকে মনোনয়ন পত্র জমা না দিতে পারেন, তার জন্য সবরকমের চেষ্টা চালানো। যদি কেউ বুদ্ধি করে মনোনয়ন জমাও দেন, তবে তাদের প্রচার করতে না দেওয়া, ভোটারদের ভয় দেখানো, বিজেপি কর্মীদের পরিবারকে বাড়ি থেকে বেরতে না দেওয়া। নির্বাচনেও কেবল ধাপ্পাবাজি হয়। ভুয়ো ভোট দেওয়া হয়। গুন্ডা ভাড়া করা হয় বুথ দখলের জন্য। ব্যালট নিয়ে পালিয়ে যাওয়া। গণনার সময় বাধা দেওয়া, বিজেপি কর্মীদের বসতে না দেওয়া। এত অত্য়াচারের পরও পশ্চিমবঙ্গের মানুষ বিজেপি কর্মীদের আশীর্বাদ করেছেন।
  9. বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গের বিজেপি কর্মীরা যেভাবে ভারতমাতার জন্য, রাজ্য়ের উন্নতির জন্য় সংঘর্ষ চালিয়ে যাচ্ছেন, তা এক প্রকারের সাধনা। নিজেদের তিলে তিলে জ্বালিয়ে পশ্চিমবঙ্গের হারানো গৌরব ফেরানোর চেষ্টা করছেন।
  10. জেলা পরিষদের অধ্যক্ষ রাজ্যের ক্য়াবিনেটের থেকেও বেশি ক্ষমতা রাখেন, অনেক কাজ করতে পারেন। বিজেপির কার্যকর্তা হিসাবে আপনারাও জেলায় জেলায় নিজের কাজ, ভাল ব্যবহার দিয়ে আপনারা সাধারণ মানুষের মন জিতছেন। সেই কারণে মানুষও আপনাদের উপরে বারংবার আস্থা প্রকাশ করছে। প্রয়োজন পড়লে বিজেপির কর্মীরা নিজেদের রক্ত দিয়ে লড়াই করেছেন।
  11. আমরা জনতার মাঝে গিয়ে সত্য়টা সামনে তুলে ধরব। এটা আমাদের দায়িত্ব।
  12.  ওঁরা সংসদ থেকে পালিয়ে গিয়েছে। কিন্তু দুঃখের বিষয় হল, এরা মণিপুরবাসীর সঙ্গে এত বড় বিশ্বাসঘাতকতা করল। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নিজে সমস্ত রাজনৈতিক দলকে চিঠি লিখে মণিপুর ইস্যু নিয়ে আলোচনার জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। এত সংবেদনশীল ঘটনা নিয়ে সমস্ত দল নির্বিশেষে আলোচনা হলে অনেক আগেই সমস্যার সমাধান হয়ে যেত। তাহলে মণিপুরের মানুষের ক্ষতে মলম লাগত। ওরা আলোচনা চায় না, কারণ ওরা জানে যে মণিপুরের সত্যতা সবথেকে বেশি ওদেরই গায়ে লাগত। সেই কারণে মণিপুর ইস্যু নিয়ে রাজনীতি শুরু করল, অনাস্থা প্রস্তাব আনল। একের পর এক দোষ দিয়েছে, মাথা-মুণ্ডুহীন অভিযোগ এনেছে।
  13. গণতন্ত্রে দায়িত্ব হল আলোচনায় অংশ নেওয়া। কিন্তু বিরোধীরা আলোচনার মাঝেই সদন ছেড়ে চলে যান। যাই-ই অজুহাত দেওয়া হোক না কেন, আসল সত্য়টা হল বিরোধীদের নিজের উপরই বিশ্বাস ছিল না। ওঁরা চাইছিলেন না যে ভোট হোক। কারণ ভোট হলে অহংকারীদের গঠবন্ধনের সত্য়তা সামনে চলে আসত।
  14. আমি সবসময় মানি, পূর্ব ভারত দেশের বিকাশের অন্যতম মজবুত স্তম্ভ। প্রাকৃতিক সম্পদ যেমন রয়েছে, তেমনই দক্ষ ও আত্মবিশ্বাসী মানুষেরও অভাব নেই। দু’দিন আগে আমরা সংসদে ১৪০ কোটি মানুষের সমর্থনে অনাস্থা ভোটে জয়ী হয়েছি বিরোধীদের হারিয়ে। দেশজুড়ে নেগেটিভিটি ছড়ানোর যে চেষ্টা চলছে, তারও কড়া জবাব দিয়েছি।
  15. পশ্চিমবঙ্গে স্থানীয় বিজেপি কর্মীদের সঙ্গে কথা বলতে পেরে খুব ভাল লাগছে। আমি যখন দলের কাজে আসি, কার্যকর্তাদের সঙ্গে কথা বলি, তখন নতুন করে কাজের উৎসাহ পাই। লক্ষ লক্ষ কার্যকর্তা কোনও পদের আশা না করেই ভারতমাতার জন্য কাজ করছেন। ওঁদের দর্শন থেকেই নতুন প্রেরণা পাই।