Qutub Minar Row: কুতুব মিনার পূজা-পাঠের জায়গা নয়, আদালতে সাফ জানালো ‘এএসআই’
Qutub Minar Row: মঙ্গলবার দিল্লির সাকেত জেলা আদালতে কুতুব মিনার কমপ্লেক্স বিতর্ক মামলার বিরোধিতা করে, 'দ্য আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া' বা 'এএসআই' বলেছে, কুতুব মিনারের উপর কেউ মৌলিক দাবি জানাতে পারে না।
নয়া দিল্লি: ‘কুতুব মিনারের উপর কেউ মৌলিক অধিকার কায়েম করতে পারে না’। মঙ্গলবার (২৪ মে), দিল্লির সাকেত জেলা আদালতে কুতুব মিনার কমপ্লেক্স বিতর্ক মামলার বিরোধিতা করে, এ কথা সাফ জানিয়ে দিল ‘দ্য আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া’ বা ‘এএসআই’। তারা বলেছে, ‘কুতুব মিনার একটি স্মৃতিসৌধ। এর বর্তমান অবস্থা পরিবর্তন করা যাবে না।’ এর আগে হরিশঙ্কর জৈন নামে এক ব্যক্তি দাবি করেছিলেন, কুতুব মিনার কমপ্লেক্সে যে কুয়াত-উল-ইসলাম মসজিদ ছিল, তা ২৭টি হিন্দু ও জৈন মন্দির ধ্বংস করে তৈরি করা হয়েছিল। তিনি এই মন্দিরগুলির পুনরুদ্ধার এবং কুতুব মিনার কমপ্লেক্সে ফের পুজোআর্চা শুরুর অনুমতি চেয়ে আদালতদে আবেদন করেছিলেন।
এদিন আদালতে ‘এএসআই’ মেনে নিয়েছে যে, কুতুব মিনার চত্ত্বরের মধ্যে অনেকগুলি ভাস্কর্য ছিল। তবে, ১৯১৪ সালে এই স্মৃতিসৌধকে ‘প্রাচীন স্মৃতিসৌধ সংরক্ষণ আইন ১৯০৪’এর (Ancient Monuments Preservation Act 1904) তিনের তিন ধারার অধীনে সুরক্ষিত করা হয়েছে এবং রক্ষণাবেক্ষণ করা হচ্ছে। তাই, চলতি শুনানির আবেদনটি ‘প্রাচীন স্মৃতিসৌধ সংরক্ষণ আইন ১৯০৪’এর লঙ্ঘনকারী।
তাছাড়া, এএসআই উল্লেখ করেছে, ১৯১৪ সালে যখন এই আইনের অধীনে সুরক্ষিত করা হয়েছিল কুতুব মিনারকে, সেই সময় কোনও সম্প্রদায়ই ওই স্থানে ধর্মীয় ক্রিয়াকলাপ অনুশীলন করতেন না। তাই, কুতুব মিনারের উপর কেউ মৌলিক অধিকার জানাতে পারেন না। আদালতে এই মামলা খারিজ করার আবেদন জানিয়েছে এএসআই।
অন্যদিকে, সাকেত জেলা আদালতের বিচারকও বলেছেন, ‘দেবদেবীরা ৮০০ বছর ধরে কোনও পূজাপাঠ ছাড়াই দিব্য আছেন। তাঁদের সেভাবেই থাকতে দিন।’ আদালত এদিন আরও বলেছে, ‘যদি এই অনুমতি দেওয়া হয়, তাহলে সংবিধানের বুনোট ও ধর্মনিরপেক্ষ চরিত্র ক্ষতিগ্রস্ত হবে’।
কুতুব মিনার চত্ত্বর নিয়ে সাম্প্রতিক এই বিতর্কের সূচনা হয়েছে, এএসআই-এর প্রাক্তন আঞ্চলিক ডিরেক্টর ধরমবীর শর্মার এক চাঞ্চল্যকর দাবি থেকে। তিনি দাবি করেছেন, কুতুবুদ্দিন আইবক নয়, কুতুব মিনার তৈরি করেছিলেন হিন্দু রাজা বিক্রমাদিত্য। কুতুব মিনার চত্বরে হিন্দু দেব-দেবীর মূর্তি রয়েছে বলেও দাবি করেছিলেন তিনি।
এর আগে বিশ্ব হিন্দু পরিষদের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছিল, আজকের কুতুব মিনার একসময় পরিচিত ছিল ‘বিষ্ণুস্তম্ভ’ হিসাবে। তারা আরও দাবি করেছিল, ২৭টি হিন্দু ও জৈন মন্দির ভেঙে যে সামগ্রী পাওয়া গিয়েছিল, তাই দিয়েই তৈরি করা হয়েছিল কুতুব মিনার বা তাদের দাবি অনুযায়ী ‘বিষ্ণুস্তম্ভ’। সপ্তাহ দুয়েক আগেই, ইউনাইটেড হিন্দু ফ্রন্ট এবং রাষ্ট্রবাদী শিবসেনা নামে দুটি অতি ডানপন্থী সংগঠন কুতুব মিনার চত্বরের সামনে, এই ,স্মৃতি সৌধের নাম বদলে ‘বিষ্ণুস্তম্ভ’ করার দাবিতে বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন। ওই ঘটনায় ৪৪ জনকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ।