ভ্যাকসিন না কিনে সেন্ট্রাল ভিস্তায় ২০ হাজার কোটি টাকা ঢেলেছেন মোদী? খোলসা করল কেন্দ্র

স্বাস্থ্যখাত থেকে কি সেন্ট্রাল ভিস্তায় টাকা গিয়েছে? এই প্রশ্নের উত্তরে কেন্দ্র সাফ জানিয়েছে...

ভ্যাকসিন না কিনে সেন্ট্রাল ভিস্তায় ২০ হাজার কোটি টাকা ঢেলেছেন মোদী? খোলসা করল কেন্দ্র
ফাইল চিত্র
Follow Us:
| Updated on: Jun 06, 2021 | 7:34 PM

নয়া দিল্লি: সেন্ট্রাল ভিস্তা (Central Vista) নিয়ে লাগাতার বিরোধিতার মুখে পড়েছে কেন্দ্র। কেন করোনাকালে এই প্রজেক্ট চলছে সেই প্রশ্ন বাণের মতো বিঁধেছে কেন্দ্রের কাছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় উঠে আসছে একাধিক কথা। কেন্দ্র না কি ভ্যাকসিন না কিনে ২০ হাজার কোটি টাকা সেন্ট্রাল ভিস্তায় ঢেলেছে। এই প্রশ্নের মুখে পড়ে বিষয়টি খোলসা করেছে নরেন্দ্র মোদীর সরকার। বিবৃতি দিয়ে বাস্তব ও চলতি কথার মধ্যে ফারাক তৈরির চেষ্টা করেছে কেন্দ্রীয় সরকার।

যেখানে স্পষ্ট করে বলা রয়েছে, কেন্দ্র ২০ হাজার কোটি টাকা সেন্ট্রাল ভিস্তায় প্রয়োগ করেনি। মোট সেন্ট্রাল ভিস্তা প্রজেক্টের আনুমানিক খরচ ২০ হাজার কোটি টাকা। তার মধ্যে কাজ শুরু হয়েছে স্রেফ দু’টি প্রজেক্টের। প্রথমটি নতুন সংসদ ভবন নির্মাণ, দ্বিতীয়টি সেন্ট্রাল ভিস্তা অ্যাভিনিউর পুনর্গঠন। যার মধ্যে নতুন সংসদ ভবনের টেন্ডার হয়েছে ৮৬২ কোটি টাকায় ও সেন্ট্রাল ভিস্তা অ্যাভিনিউর পুনর্গঠনের টেন্ডার হয়েছে ৪৭৭ কোটি টাকায়।

কেন্দ্র কী জানিয়েছে?

সেন্ট্রাল ভিস্তার সম্পর্কে একাধিক পয়েন্ট তুলে ধরেছে আবাসন মন্ত্রক। যেখানে তাদের দাবি,  এই প্রকল্পের যথেষ্ট প্রয়োজনীয়তা আছে। এবং আনুমানিক ধারণা ছাড়া এই ২০ হাজার কোটি টাকার কোনও বাস্তবে প্রয়োগ নেই। ২০১২ সালে লোকসভার মাননীয়া স্পিকার মীরা কুমার, ২০১৫ সালে স্পিকার সুমিত্রা মহাজন ও  ২০১৯ সালে স্পিকার ওম বিড়লা নতুন সংসদ ভবনের জন্য সরকারকে অনুরোধ করেছিলেন।

করোনার আগেই সিদ্ধান্ত: কেন্দ্র সাফ জানিয়েছে, সেন্ট্রাল ভিস্তার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর মাসে। তখনও দেশে থাবা বসায়নি মারণ ভাইরাস।

দীর্ঘমেয়াদী প্রকল্প: সেন্ট্রাল ভিস্তা ডেভেলপমেন্ট বা রিডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট একটি লম্বা প্রজেক্ট। এতে ৬ বছরেরও বেশি সময় লাগবে। অর্থাৎ নরেন্দ্র মোদীর সরকার পুনরায় নির্বাচিত হয়ে না আসে তাহলেও এই প্রজেক্ট চলবে।

আনুমানিক ধারণা ২০ হাজার কোটি: কেন্দ্র এ বিষয়ে স্পষ্ট জানিয়েছে মোট সেন্ট্রাল ভিস্তা প্রজেক্টের আনুমানিক খরচ ধরা হয়েছে ২০ হাজার কোটি টাকা। এই ২০ হাজার কোটি টাকায় তৈরি হবে নতুন সংসদ ভবন, সেন্ট্রাল ভিস্তা অ্যাভিনিউ, কেন্দ্রীয় সচিবদের ১০টি ভবন, সেন্ট্রাল কনফারেন্স সেন্টার, জাতীয় আর্কাইভের জন্য অতিরিক্ত ভবন। নতুন আইজিএনসিএ ভবন, নিরাপত্তারক্ষীদের ভবন, প্রধানমন্ত্রী বাসভবন, প্রধানমন্ত্রী অফিসের এনক্লেভ, নর্থ ব্লক, সাউথ ব্লকের ভবন-সহ আরও একাধিক কাজ রয়েছে এই প্রকল্পের আওতায়। এই প্রকল্পে মোট কত টাকা খরচ হবে তা জানা যাবে প্রত্যেকটির টেন্ডার হওয়ার পর। যা এখনও হয়নি।

স্বাস্থ্যখাত থেকে কি সেন্ট্রাল ভিস্তায় টাকা গিয়েছে? এই প্রশ্নের উত্তরে কেন্দ্র সাফ জানিয়েছে চলতি বাজেটে স্বাস্থ্যখাতে বিপুল বরাদ্দ করেছে তারা। করোনাকালে স্বাস্থ্যখাতে নির্দিষ্ট লক্ষ্য নিয়েই মাঠে নেমেছে কেন্দ্র। কেন নতুন সংসদ ভবন গড়ে উঠছে তাও স্পষ্ট জানিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। প্রথমত, ব্রিটিশ আমলের তৈরি এই বাড়ির শক্তি কমেছে। নেই অধিক সংখ্যক আসনও। তাই নতুন সংসদ ভবন তৈরি করতে বাধ্য হচ্ছে কেন্দ্র।

উল্লেখ্য, সেন্ট্রাল ভিস্তার বিরোধিতার মামলা এর আগে আদালতে পর্যন্ত গড়িয়েছে। সেখানে দিল্লি হাইকোর্ট সাফ জানিয়েছিল, এই প্রজেক্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও প্রয়োজনীয়। তাই বন্ধ করার কোনও প্রশ্নই ওঠে না। কয়েকদিন আগে আবাসন মন্ত্রী হরদীপ সিং পুরি জানিয়েছেন, নতুন সংসদ ভবনের কাজ ২০২২ সালের মধ্যে শেষ করার চেষ্টা হচ্ছে যাতে স্বাধীনতার ৭৫-তম বর্ষ উদযাপন করা যায়।

আরও পড়ুন: লক্ষদ্বীপে উন্নয়নের নামে ‘অকাজ’ হচ্ছে, প্রধানমন্ত্রীকে পত্রবাণ ৯৩ প্রাক্তন আমলার