উদ্ধারকার্যে বাধ সাধছে সুড়ঙ্গে জমে থাকা জল, মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৩২, এখনও নিখোঁজ ১৯৭

এক আধিকারিক জানান, ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে তপোবনে সুড়ঙ্গের মুখ খোলা সম্ভব হলেও সম্পূর্ণ সুড়ঙ্গটি পরিষ্কার করতে কত সময় লাগবে, তা আগেভাগেই জানানো সম্ভব নয়। সুড়ঙ্গের মধ্যে ২৫ থেকে ৩৫ জন শ্রমিক আটকে রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।

উদ্ধারকার্যে বাধ সাধছে সুড়ঙ্গে জমে থাকা জল, মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৩২, এখনও নিখোঁজ ১৯৭
আজ সকালে সুড়ঙ্গে প্রবেশ করে আইটিবিপি, সেনাবাহিনী ও এনডিআরএফের যৌথ বাহিনী।
Follow Us:
| Updated on: Feb 10, 2021 | 11:02 AM

জোশীমঠ: দুদিন কেটে গেলেও এখনও উদ্ধারকার্য জারি রয়েছে উত্তরাখণ্ডের জোশীমঠে (Joshimath)। সরকারি সূত্রে জানানো হয়েছে, এখনও অবধি মোট ৩২টি দেহ উদ্ধার হয়েছে। এখনও নিখোঁজ ১৯৭ জন। রবিবার নন্দাদেবী হিমবাহের একাংশ ভেঙে পড়ায় অলকানন্দা নদীতে যে হড়পা বান এসেছিল, তাতে শতাধিক মানুষ ও গবাদি পশু ভেসে যায়। ক্ষতিগ্রস্ত হয় এনটিপিসির তপোবন বিদ্যুৎ প্রকল্প ও ঋষিগঙ্গা হাইড্রো প্রজেক্ট।

জোশীমঠে বিপর্যয় নেমে আসার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই উদ্ধারকার্য শুরু হয়। ভারতীয় সেনাবাহিনী, ইন্দো-টিবেটিয়ান বর্ডার পুলিশ (ITBP), জাতীয় ও রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের মোট ৬০০ জন কর্মী উদ্ধারকার্য শুরু করে। জলের তোড়ে বিদ্যুৎ প্রকল্পের নির্মীয়মান সুড়ঙ্গগুলিতে যেসকল শ্রমিক আটকে পড়েছেন, তাদের উদ্ধার করার চেষ্টায় মাটি কাটার কাজ এখনও চলছে।

অন্যদিকে, উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী তিবেন্দ্র সিং রাওয়াত মঙ্গলবার টুইট করে আইটিবিপির জওয়ানদের ত্রাণ পৌঁছে দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ জানান। রবিবারের হড়পা বানে রেনি, প্যাং, লতা, সুকি, তোলমা, জুগজু, ভাঙ্গুলের মতো একাধিক গ্রামের সঙ্গো যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। আইটিবিপির জওয়ানরা সেখানে পায়ে হেঁটে এবং হেলিকপ্টারে করে ত্রাণ, প্রয়োজনীয় ওষুধ ও অন্যান্য অত্যাবশ্যকীয় সামগ্রী পৌঁছে দেন। এই কাজের জন্য মুখ্যমন্ত্রী ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, “আমি নিজেও দেখেছি যে আইটিবিপির জওয়ানরা দুর্গম অঞ্চলগুলিতে পাঁচ-ছয় কিলোমিটার পায়ে হেঁটে যাচ্ছেন ত্রাণ ও অত্যাবশকীয় সামগ্রী পৌঁছতে।”

আরও পড়ুন: গ্রেটাকে নিয়ে মন্তব্য, অধীরের বিরুদ্ধে স্বাধিকার ভঙ্গের প্রস্তাব বিজেপির

সেনাবাহিনী ও আইটিবিপির সঙ্গে বর্তমানে উদ্ধারকার্যে হাত লাগিয়েছে ভারতীয় নৌবাহিনীও। এক আধিকারিক জানান, ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে তপোবনে সুড়ঙ্গের মুখ খোলা সম্ভব হলেও সম্পূর্ণ সুড়ঙ্গটি পরিষ্কার করতে কত সময় লাগবে, তা আগেভাগেই জানানো সম্ভব নয়। সুড়ঙ্গের মধ্যে ২৫ থেকে ৩৫ জন শ্রমিক আটকে রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। বোল্ডার ভেঙে পড়ায় ও সুড়ঙ্গের জলস্তর বৃদ্ধি পাওয়ায় উদ্ধারকার্যে সমস্যা দেখা দিলেও অত্যাধুনিক যন্ত্র ব্যবহার করা হচ্ছে পাথর কাটতে।

আইটিবিপির মুখপাত্র জানান, গতকাল সারারাত ধরেই জমে থাকা পাথর ও কাদা সরানোর কাজ হয়েছে। এখনও অবধি ১২০ মিটার পথ পরিষ্কার করা সম্ভব হয়েছে। তবে সুড়ঙ্গে প্রবেশের একটিই মাত্র পথ থাকায় ও ইংরেজি “ইউ” আকার হওয়ায় কাজে সমস্যা দেখা দিচ্ছে। এখনও অবধি আটকে পড়া কোনও শ্রমিকের সাড়াশব্দ না মিললেও প্রাণের আশাতেই উদ্ধারকার্য চালানো হচ্ছে।

এদিকে, বিপর্যয়ের কারণ খুঁজতে মঙ্গলবারই দেরাদুনের ওয়াদিয়া ইন্সটিটিউট অব হিমালয়ান জিওলজির দুটি বিজ্ঞানী দল চামোলিতে গিয়েছে। গতকাল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহও রাজ্যসভায় জানান, লাগাতার উদ্ধারকার্য চালানো হচ্ছে। জোশীমঠে খোলা হয়েছে দুটি কন্ট্রোল রুম। উত্তরাখণ্ডে সরকার জানিয়েছে নীচু এলাকায় বন্যার কোনও সম্ভাবনা নেই, বেশির ভাগ জায়গায় বিদ্যুৎ সংযোগ ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে।

আরও পড়ুন: চিনকে সাহায্যের অভিযোগ! কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী-প্রাক্তন সেনাপ্রধান ভিকে সিং’কে বহিষ্কারের দাবি রাহুলের