প্রধানমন্ত্রী ও অমিত শাহের স্কেচ: অভিব্যক্তি, অনুভূতি, অবিস্মরণীয় মুহূর্তের কাহিনি
'হোয়াট ইন্ডিয়া থিঙ্কস টুডে'র মঞ্চে দেশ-দুনিয়ার বিভিন্ন বিশিষ্টজনরা উপস্থিত ছিলেন। কিন্তু আমার জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে তাঁদের স্কেচ উপহার দেওয়া এক অবিস্মরণীয় অনুভূতি হয়ে রয়ে গিয়েছে। যা কোনওদিন ভোলা সম্ভব নয়।
![প্রধানমন্ত্রী ও অমিত শাহের স্কেচ: অভিব্যক্তি, অনুভূতি, অবিস্মরণীয় মুহূর্তের কাহিনি প্রধানমন্ত্রী ও অমিত শাহের স্কেচ: অভিব্যক্তি, অনুভূতি, অবিস্মরণীয় মুহূর্তের কাহিনি](https://images.tv9bangla.com/wp-content/uploads/2024/02/Large-Image-PM-Narendra-Modi.jpg?w=1280)
সন্তোষ নায়ার, এডিটর – নেটওয়ার্ক কোঅর্ডিনেশন, টিভি নাইন
দেশের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করা যে কারও জন্যই এক অবিস্মরণীয় মুহূর্ত। জানুয়ারির শুরুর দিক থেকে আমরা টিভি নাইন গ্লোবাল সামিটের বিষয়ে আলোচনা শুরু করি। যখন জানতে পারলাম, সামিটে প্রধানমন্ত্রীর সান্নিধ্য পাব, তখন থেকেই তাঁর একটি ছবি আঁকার ভাবনা মনের মধ্যে জেগে ওঠে। গুগল থেকে তাঁর প্রায় এক হাজার ছবির মধ্যে থেকে ১০টি ছবিকে শর্টলিস্ট করেছিলাম। তারপর সেখান থেকে একটি ছবি বেছে নিয়েছিলাম।
জানুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে আমি প্রধানমন্ত্রীর ছবি আঁকতে শুরু করি। ৩০০ ঘণ্টার তপস্যার পর আমি বলতে পারি যে, আমার জীবনের সবথেকে শ্রেষ্ঠ চেষ্টা সফল হয়েছে। ছবিটা আঁকতে আঁকতে অনেক সময় আমার এমনও মনে হয়েছে যেন আমি কোনও অন্য দুনিয়ায় পৌঁছে গিয়েছি… একটা সময়ের পর ছবিটা যেন আমার সঙ্গে কথা বলতে শুরু করে দিল যে কোথায় কোথাও আরও সুন্দরভাবে ফোটানোর সুযোগ রয়েছে। আমি ছবিতে আঁকা মোদীজির সঙ্গে কথা বলতে থাকলাম, আর তিনি যেভাবে বলতে থাকলেন, আমি সেভাবে করতে লাগলাম।
আমি মনে করি ছবি আঁকার সময় যে কোনও শিল্পীর মনের মধ্যে যে আনন্দের অনুভূতি জন্মায়, সেটাই তাঁর পারিশ্রমিক। বাকি সব তো বোনাস। আমার ধারণা, আমরা কিছুই করি না। যা কিছু করার, সব ওই অদৃশ্য শক্তি আগে থেকেই স্থির করে রেখেছে। একটা হলিউড সিনেমার একটি দৃশ্যের কথা আমার বার বার মনে পড়ে যাচ্ছিল, যেখানে মুখ্য চরিত্রে রয়েছেন একজন ভাস্কর। তিনি তাঁর অনবদ্য শিল্পকলার জন্য চার দিক থেকে প্রশংসিত হচ্ছিলেন। তখন তিনি বলেন, আমি তো শুধু পাথর থেকে ধুলো সড়িয়েছি। মূর্তি তো আগে থেকেই সেই পাথরে ছিল।
প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ
এসবের মধ্যেই এসে গেল ২৬ জানুয়ারি। যেটা আমার জীবনের সবথেকে বড় দিন ছিল। সন্ধে তখন প্রায় আটটা। আমাদের সংস্থার সব সম্পাদক ও শীর্ষ ব্যক্তিত্বরা তখন প্রধানমন্ত্রী মোদীকে স্বাগত জানাতে অশোকা হোটেলের লবিতে অপেক্ষা করছিলেন। ঘড়ির কাঁটায় ঠিক সন্ধে আটটায় প্রধানমন্ত্রীর গাড়ি পোর্টিকোয় এসে থামল। সংস্থার সব শীর্ষ স্থানীয় ব্যক্তিত্বরা তখন উপস্থিত ছিলেন সেখানে। কাকতালীয়ভাবে আমি ছিলাম লাইনের শুরুর দিকে। সবার সঙ্গে দেখা করার পর প্রধানমন্ত্রী আমাদের মাঝে এসে বসেন এবং আমাদের সবার সঙ্গে একটি গ্রুপ ছবি তোলেন।
এরপর আমার জীবনে আসে সেই অবিস্মরণীয় মুহূর্ত। যখন আমি আমার সাধনার ফসল, সেই স্কেচটিকে প্রধানমন্ত্রীর হাতে তুলে দিই। তিনি সেটি দেখলেন, তারপর আমার দিকে তাকিয়ে বললেন, বাহ, এটা করতে আপনার কত দিন সময় লেগেছে। আমি বললাম, ৩০০ ঘণ্টা। তিনি আবার তাকালেন ছবিটির দিকে। তারপর আমার দিকে তাকিয়ে হেসে বললেন, খুব সুন্দর… শিল্পীদের মধ্যে আলাদাই একটা ব্যাপার থাকে। এরপর আবার তাঁর সঙ্গে একটি ছবি তুলি আমরা এবং তারপর তিনি এগিয়ে যান। এতেই আমি আমার এই প্রচেষ্টাকে সার্থক বলে বলে মনে করছি। দেশের প্রধান সেবক মৃদু হেসে আমাকে আশীর্বাদ করলেন। এখানেই আমার এতদিনের সব ক্লান্তি দূর হয়ে গিয়েছে।
ছবি আঁকা আমার শখ। গত তিন দশক ধরে আমি ছবি আঁকি। কিন্তু দেশের সবথেকে জনপ্রিয় ব্যক্তিত্বের ছবি আঁকা, তাও আবার সেটি তাঁকে উপহার দেওয়ার জন্য… তখন মনের মধ্যে কোথাও না কোথাও একটা চাপ থেকেই যায়। হ্যাঁ, তবে আজ আমি এটা বলতে পারি যে, হয়ত আমার মধ্যে এই শিল্পগুণটি এই জন্যই দেওয়া হয়েছে যাতে আমি এই কাজটা করতে পারি। আমার মনের দীর্ঘদিনের একটি ইচ্ছা পূরণ হল এবং জীবনে চলার পথের একটি বড় মাইলফলক পার করলাম।
বিলক্ষণ শাহ
প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা, তাঁর হাতে আমার আঁকা ছবি তুলে দেওয়া… এই অপূর্ব অভিজ্ঞতার রেশ থেকে বেরনোর আগেই এসে গেল পরের দিন। এবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর সঙ্গে দেখা হওয়ার সুযোগ হল। এই সাক্ষাৎ আমার কাছে শুধু অবিস্মরণীয়ই নয়, আমার মনে এক গভীর ছাপও ফেলে গিয়েছে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, যিনি একজন অভিজ্ঞ রাজনীতিক, দক্ষ প্রশাসক ও বুদ্ধিদীপ্ত ব্যক্তি হিসেবে পরিচিত। গত মঙ্গলবার যখন তাঁর সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে দেখা করার সুযোগ পেলাম, তখন তাঁর ব্যক্তিত্বের অনেক অজানা দিকগুলি জানার সুযোগ পেয়েছি।
আমাদের টিভি নাইন ভারতবর্ষের বিশেষ অনুষ্ঠান সত্তা সম্মেলনের মঞ্চকে আলোকোজ্জ্বল উপস্থিতির মাধ্যমে আলোকিত করতে এসেছিলেন প্রধানমন্ত্রী মোদীর সেনাপতি তথা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। সেখানে অমিত শাহকে আমি তাঁর একটি স্কেচ উপহার দিয়েছি। কয়েকশো ঘণ্টার চেষ্টায় আমি এই ছবিটি এঁকেছি। ছবিটি দেখে তিনি যা বললেন, তাতে আমি একেবারে বাকরুদ্ধ। অবাক হয়ে ভাবলাম, দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীরও স্কেচ সম্পর্কে এত গভীর জ্ঞান ও উপলব্ধি কীভাবে থাকে। পরে আমার সিনিয়র ও সহকর্মীদের থেকে জানলাম ইতিহাস, আধ্যাত্মিকতা ও ভারতীয় দর্শনের বিভিন্ন বিষয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পারদর্শিতার বিষয়ে।
তাঁর ছবি দেখে সহাস্য মুখে অমিত শাহ আমাকে বললেন, ‘ভাই, আমি কখনও এমন গম্ভীর মুখে থাকি না।’ অনুষ্ঠানে উপস্থিত বিদ্বজ্বনেরা তখন তাঁকে বলেন, দেশ তথা বিশ্বের সবাই ভাবেন, আপনি অত্যন্ত ধৈর্যশীল ও গম্ভীর ব্যক্তি। তাঁর ছবির ধরনে কিছুটা বদল আনার জন্যও অনুরোধ করা হয়। যদিও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সে কথা শুনে বলেন, ‘না ভাই, এটাই ঠিক আছে। কারণ এতে অপর ধরনের লোকেরা আমার থেকে দূরেই থাকেন।’
![Amit Shah Sketch](https://images.tv9bangla.com/wp-content/uploads/2024/02/Amit-Shah-Sketch.jpg)
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর হাতে স্কেচ তুলে দিচ্ছেন টিভি নাইনের এডিটর (নেটওয়ার্ক কোঅর্ডিনেশন) সন্তোষ নায়ার
এরপর যা হল, তাতে আরও অবাক হয়ে গেলাম আমি। উপস্থিত সকলের সামনে অমিত শাহজি আমাকে একটি ঘটনার কথা শোনালেন। ইতিহাসের এই দিকটি আমার কাছে একেবারেই নতুন ছিল। তিনি বলেন, ইতিহাসে সম্রাট বিন্দুসারের ১৬ কন্যা ও ১০১ পুত্রের উল্লেখ রয়েছে। তাঁদের মধ্যে অশোকের জেষ্ঠ্য ভ্রাতা ছিলেন সুসীম। যখন পরবর্তী সম্রাটকে বেছে নেওয়ার সময় এল, তখন তিনি চাণক্যকে ডেকে পাঠান। জানতে চান, তাঁর চার পুত্রের মধ্যে কাকে উত্তরাধিকারী হিসেবে বেছে নেওয়া হবে। তখন চাণক্য একজন শিল্পীকে ডেকে ওই চার পুত্রের ছবি আঁকতে বলেন। যখন শিল্পী সেই আঁকা সম্পূর্ণ করেন, তখন ছবিগুলি দেখে চাণক্য সম্রাটকে বলেছিলেন অশোককে বাদ দিয়ে বাকিদের মধ্যে কাউকে উত্তরাধিকারী হিসেবে বেছে নেওয়ার জন্য। রাজা তখন কারণ জানতে চাইলে চাণক্য তাঁকে বলেছিলেন, অশোকের চোখে বিরক্তির ভাব রয়েছে, যা যে কোনও সময়ে জেগে উঠতে পারে।
কিন্তু ভাগ্যের চাকায় অন্য কিছু লেখা ছিল… পরে অশোকই সম্রাট হন। তিনি দিগ্বিজয়ী, কিন্তু পরে সব কিছু ছেড়ে অশোক সন্ন্যাস নিয়ে নেন। সেই কারণে তাঁর পুরো সাম্রাজ্য ও ভারতবর্ষ একশো বছর পিছনে চলে গিয়েছিল।
অমিত শাহের ব্যক্তিত্বের এই বিষয়টি আমার কাছে একেবারে নতুন ছিল। শেষে আমি এই সিদ্ধান্তে এসেছি যে তিনি এমন একজন ব্যক্তিত্ব যিনি প্রতিটি বিষয়ে অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে অধ্যয়ন করেন। দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর পাণ্ডিত্যের এই আভাস ওই পাঁচ মিনিটের স্বল্প সাক্ষাতেই আমি পেয়ে গিয়েছিলাম। ছবি আঁকার মতো বিষয়ে এত গভীর উপলব্ধি ও জ্ঞান, সেটিকে দ্রুত সমসাময়িক বিষয়ের সঙ্গে জুড়ে দেওয়া এবং উপস্থিত সকলের মনে ছাপ রেখে যাওয়া… এটাই আমাদের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
এই দু’টি স্কেচের গল্পই আমার জীবনের জন্য এক অবিস্মরণীয় মুহূর্ত। এই অভিজ্ঞতাগুলি আমাকে জীবনের দুই সবথেকে অমূল্য স্মৃতি দিয়েছে এবং একইসঙ্গে সেই অভিজ্ঞতা শেয়ার করে নেওয়ার সাহস জুগিয়েছে।
![বর্ষাকালে প্রতিদিন শ্যাম্পু করা ঠিক নাকি ভুল? বর্ষাকালে প্রতিদিন শ্যাম্পু করা ঠিক নাকি ভুল?](https://images.tv9bangla.com/wp-content/uploads/2024/07/shampoo-9.jpg?w=670&ar=16:9)
![চিংড়ি খেলেই দূরে থাকবে ক্যানসার, কমবে ওজন, বাড়বে ত্বকের উজ্জ্বলতাও? চিংড়ি খেলেই দূরে থাকবে ক্যানসার, কমবে ওজন, বাড়বে ত্বকের উজ্জ্বলতাও?](https://images.tv9bangla.com/wp-content/uploads/2024/07/Untitled-design-4-1.jpg?w=670&ar=16:9)
![পুজোয় ওজন কমাতে রোজ খান লেবু-হলুদ জল, রয়েছে হাজারো গুণ পুজোয় ওজন কমাতে রোজ খান লেবু-হলুদ জল, রয়েছে হাজারো গুণ](https://images.tv9bangla.com/wp-content/uploads/2024/07/cropped-lemonhalud3.jpg?w=670&ar=16:9)
![৪ উপায় মানলেই পাবেন বলি সুন্দরীর মতো নরম, গোলাপি ঠোঁট! ৪ উপায় মানলেই পাবেন বলি সুন্দরীর মতো নরম, গোলাপি ঠোঁট!](https://images.tv9bangla.com/wp-content/uploads/2024/07/Untitled-design-3-4.jpg?w=670&ar=16:9)
![দিনে কটা আমন্ড খেলে কমবে রক্তচাপ, থাকবেন ফিট? দিনে কটা আমন্ড খেলে কমবে রক্তচাপ, থাকবেন ফিট?](https://images.tv9bangla.com/wp-content/uploads/2024/07/Untitled-design-2-5.jpg?w=670&ar=16:9)
![বাথরুমকে চকচকে করে তুলুন এভাবে বাথরুমকে চকচকে করে তুলুন এভাবে](https://images.tv9bangla.com/wp-content/uploads/2024/07/Bathroom-9.jpg?w=670&ar=16:9)