Dilip Ghosh On Mukul Roy: ‘শেষ জীবনে এত কষ্ট পাওয়া, অপমানিত হওয়া…’ মুকুলের বেফাঁস মন্তব্য প্রসঙ্গে দিলীপের অন্য তত্ত্ব
Dilip Ghosh On Mukul Roy: মুকুল প্রসঙ্গে দিলীপ ঘোষ বলেন, "এমনিতেই শারীরিক অবস্থা ঠিক ছিল না ওঁর। যেভাবে তাঁকে অপব্যবহার করা হয়েছে. অপমান করা হয়েছে, আমার মনে হচ্ছে শেষ জীবনে এটা ঠিক নয়।"
কলকাতা: “যেটা সবাই জানত, সেটা এখন তাঁর ছেলে বলে দিয়েছেন।” এবার মুকুল রায়ের বেফাঁস মন্তব্যে প্রতিক্রিয়া বিজেপির সর্ব ভরতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষের।
মুকুল প্রসঙ্গে দিলীপ ঘোষ বলেন, “এমনিতেই শারীরিক অবস্থা ঠিক ছিল না ওঁর। যেভাবে তাঁকে অপব্যবহার করা হয়েছে. অপমান করা হয়েছে, আমার মনে হচ্ছে শেষ জীবনে এটা ঠিক নয়। ওঁ একজন সিনিয়র মানুষ। ওঁর শেখা উচিত। শেষজীবনে এটা ওঁর বোঝা উচিত। শেষ জীবনে এত কষ্ট পাওয়া, এত অপমানিত হওয়া… আমার মনে হয় যাঁরা এই ধরনের রাজনীতি করেন, তাঁদের বোঝা উচিত।”
শুক্রবার অনুব্রত মণ্ডলের পাশে দাঁড়িয়ে বেফাঁস মন্তব্য করেন মুকুল রায়। মুকুল রায় শান্তিনিকেতনে দাঁড়িয়ে শুক্রবার বলেছেন, এই পুরসভা নির্বাচনে সারা বাংলায় বিপুল ভাবে ভারতীয় জনতা পার্টি জয়ী হবে।’ কথাগুলি যখন বলেছেন, পাশে দাঁড়ানো সকল তৃণমূল কর্মী-নেতা তখন স্তম্ভিত, বিস্মিত। তাঁদের মধ্যে কয়েকজন তাঁকে ‘তৃণমূল’ বলে ভুল ধরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। সে সময় তিনি সংযোজন করেন আরও একটি উক্তি। বলেন, “হ্যাঁ, ভারতীয় জনতা পার্টি মানেই তৃণমূল।” তাতে বিভ্রান্তি, জটিলতা বাড়ে আরও।
মুকুল রায়ের শারীরিক অবস্থা যে ভালো নয়, তা স্বীকার করে নিয়েছেন ছেলে শুভ্রাংশু রায়ও। TV9 বাংলাকে শুভ্রাংশু রায় বলেছেন, “বাবা সত্যি শারীরিক ভাবে অসুস্থ। ওঁ বিভিন্ন রকম কথা বলে ফেলছেন। পার্টি যা সিদ্ধান্ত নেবে তাই হবে।”
মুকুলের বক্তব্য নিয়ে এই প্রথম প্রতিক্রিয়া দেয় তৃণমূলও। দলের তরফে পার্থ চট্টোপাধ্যায় বিবৃতি দিয়ে জানান, “বোলপুরে মুকুল রায় যা বলেছেন, তাঁকে দল অনুমোদন দেয় না। ওঁ শারীরিক ভাবে সুস্থ নন। ভারসাম্যহীন। শারীরিক সুস্থতার কামনা করি । তাঁর কথার অনুমোদন দেয় না দল। শারীরিক অবস্থা খারাপ হলে উনি পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটিতে না থাকতে চাইলে দল বিচার করবে।”
পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের কথায় জল্পনা তুঙ্গে । তবে কি এবার মুকুল রায়কে পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটি থেকে সরাতে চলেছে তৃণমূল? এর আগে যখন মুকুল রায় বিতর্কিত মন্তব্য করেছিলেন, তখন কিন্তু তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্ব কোনও প্রতিক্রিয়া দেননি বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা। এবার সেটাই দিলেন। সুতরাং মুকুল রায়ের এই বক্তব্যকে একেবারেই হেলায় উড়িয়ে দিতে চাইছেন না শীর্ষ নেতৃত্ব।
প্রসঙ্গত, এর আগেও কৃষ্ণনগরের তৃণমূলের সাংগঠনিক সভায় গিয়ে বলেছিলেন, “ভারতীয় জনতা পার্টির পক্ষ থেকে আমি বলতে পারি তৃণমূল পর্যুদস্ত হবে। এই কৃষ্ণনগরে স্বমহিমায় নিজেদের প্রতিষ্ঠা করবে বিজেপি। নিজের ক্ষমতায় নিজেদের প্রতিষ্ঠা করবে বিজেপি।” পরক্ষণেই তিনি ভুল বুঝতে পারেন। তবে মুখ থেকে বেরিয়ে ‘বাণ’ তখন বেরিয়ে গিয়েছে। আর তার সাতদিন পরই আবার ‘ভুল’! তিনি বলেছিলেন, কৃষ্ণনগর উত্তর কেন্দ্রে ফের প্রার্থী হলে তিনিই জিতবেন বিজেপির টিকিটে। তৃণমূলের হয়ে দাঁড়ালে কী হবে তা মানুষ ঠিক করবে! এই কথাটি আবার বলেছিলেন বিধানসভার বাইরে দাঁড়িয়েই।
মুকুল রায় একজন বিচক্ষণ রাজনীতিবিদ। তাতে রাজনীতির বিশ্লেষকরা চাণক্য উপাধি দিয়েছেন। তাই চাণক্যর মস্তিষ্কপ্রসূত বিভিন্ন রাজনৈতিক ‘পাজল গেম’ তাঁর অবস্থান নিয়েই ধন্দ তৈরি করছে! ধোঁয়াশা নাকি বিভ্রান্তি নাকি না বুঝে ভুল বুঝছেন না ভুল করে বলছেন? এসব একাধিক প্রশ্ন ঘোরাফেরা করছে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মাথায়।