Rice-wheat nutrition: গরিবের ভাত-রুটিতেও ‘বিষ’! হতে পারে ক্যানসার-হার্ট অ্যাটাক, চাঞ্চল্যকর রিপোর্ট

Rice-wheat nutrition: কৃষি বিজ্ঞানীদের বক্তব্য, সবুজ বিপ্লবের লক্ষ্য ছিল সঙ্কর প্রজাতির ফসল তৈরি করা। এই প্রজাতির শস্যের ফলন যেমন বেশি, তেমনই কীট প্রতিরোধক। তার ফলে দেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়েছে ঠিকই, কিন্তু শস্যের পুষ্টিগুণের দিকে সেভাবে নজর দেওয়া হয়নি। বিপত্তিটা ঘটেছে সেখানেই।

Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Dec 14, 2023 | 12:08 PM

কলকাতা: ভাত ছাড়া বেশির ভাগ বাঙালির একটা দিনও চলে না। তবে স্বাস্থ্যরক্ষায় এখন অনেকেই রুটিতেও অভ্যস্ত হয়ে পড়ছেন। কিন্তু এক থালা ভাত হোক বা দুটো গরম রুটির মধ্যেই যে বিপদের হাতছানি রয়েছে, সেই তথ্য এবার প্রকাশ্যে এল। আমাদের কাকা-জেঠারা যে চাল-গম খেতেন তার অর্ধেক পুষ্টিও আমাদের পেটে ঢুকছে না। উল্টে জমছে বিষ।

ভারতে উত্‍পাদিত চাল এবং গমের বিভিন্ন জাত প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য-বান্ধব খনিজগুলো হারিয়েছে। তার বদলে পরতে পরতে জমছে বিষাক্ত উপাদান। এমনই বিপদবার্তা দিলেন কৃষি বিজ্ঞানীরা। গবেষণায় দেখা গিয়েছে ভয়ঙ্কর মাত্রায় পুষ্টিগুণ কমছে চাল-গমের। বাংলার এক দল গবেষক-বিজ্ঞানী, ১৯৬০ থেকে ২০১০ পর্যন্ত পঞ্চাশ বছরে যেসব ধান ও গমের ব্যাপকভাবে চাষ হয়েছে তাদের নমুনা নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালান। পরীক্ষায় দেখা গিয়ে ছে, এখন যে ধান-গম চাষ হচ্ছে তাতে …

ক্যালসিয়াম, আয়রন এবং জিঙ্ক-সহ প্রয়োজনীয় উপাদানগুলির ঘনত্ব মাত্রাতিরিক্ত কম

১৯৬০ সালের তুলনায় ১৯ থেকে ৪৫ শতাংশ কম

খুঁটিনাটি পরীক্ষায় দেখা গিয়েছে,

২০০০-এর দশকে চাষ করা ধানে গড় ক্যালসিয়ামের মাত্রা ১৯৬০-এর দশকের তুলনায় ৪৫ শতাংশ কম ছিল

আয়রনের মাত্রা ছিল ২৭ শতাংশ কম,  জিঙ্কের মাত্রা ছিল ২৩ শতাংশ কম

২০১০-এর দশকে চাষ করা গমে ক্যালসিয়ামের মাত্রা ৫০ বছর আগের তুলনায় ৩০ শতাংশ কম

আয়রনের মাত্রা ১৯ শতাংশ এবং জিঙ্কের মাত্রা ২৭ শতাংশ কম

বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা,  প্রয়োজনীয় খনিজের মাত্রা কমে আসাটা স্বাস্থ্যের ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে। কারণ, হাড় গঠনের জন্য ক্যালসিয়াম, হিমোগ্লোবিনের জন্য আয়রন, এবং প্রজনন ও স্নায়বিক স্বাস্থ্যের জন্য জিঙ্ক গুরুত্বপূর্ণ

পাঁচ দশকে কী এমন হল যে এদেশে ধান, গমের পুষ্টিগুণে এত বিশাল বদল ঘটে গেল?

কৃষি বিজ্ঞানীদের বক্তব্য, সবুজ বিপ্লবের লক্ষ্য ছিল সঙ্কর প্রজাতির ফসল তৈরি করা। এই প্রজাতির শস্যের ফলন যেমন বেশি, তেমনই কীট প্রতিরোধক। তার ফলে দেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়েছে ঠিকই, কিন্তু শস্যের পুষ্টিগুণের দিকে সেভাবে নজর দেওয়া হয়নি। বিপত্তিটা ঘটেছে সেখানেই।

কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক অভিজি নন্দী বলেছেন, “হাইব্রিড ভ্যারাইটে পুষটিগুণ থাকছে না। তাই ব্রিডিংয়ের সময় পুষ্টিগুণ কীভাবে রাখা যায় তা ভাবতে হবে।”

কমছে পুষ্টি, বাড়ছে ‘বিষ’

শুধু পুষ্টিগুণ কম হলেও না হয় মেনে নেওয়া যেত। না হয় শরীরে পুষ্টি একটু কম ঢুকবে। কিন্তু বিপদ তো অন্য জায়গায়। বাংলার কৃষি বিজ্ঞানীদের করা সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, সারা দেশে চাষ করা কিছু জনপ্রিয় ধানের দানায় ৬-এর দশকের শস্যের তুলনায় প্রায় ১৬ গুণ বেশি আর্সেনিক এবং ৪ গুণ বেশি ক্রোমিয়াম রয়েছেপ্রতিদিন ভাতের সঙ্গে আমাদের পেটে আক্ষরিক অর্থে বিষ ঢুকছে। আর্সেনিক শরীরের সমস্ত সিস্টেমকে আক্রমণ করে। ক্ষতিগ্রস্ত হয় কিডনি, লিভার ও ফুসফুস। হতে পারে ক্যানসারও বেড়ে যায় হার্ট অ্যাটাকের সম্ভাবনা। হাত বা পায়ের অংশ পচে যেতে পারে। সংক্রমণ ঘটে শরীরের নার্ভাস সিস্টেমেও।

আশঙ্কার বিষয়টি ইতিমধ্যে কেন্দ্রীয় কৃষি গবেষণা সংস্থার কানে তুলেছেন বাঙালি গবেষকরা। অনেকেই বলছেন, এই বিপদ থেকে রক্ষা পেতে আরও একটা কৃষি বিপ্লবের প্রয়োজন হয়ে পড়েছে আমাদের দেশে। তাহলে কী উপায়? পুষ্টিবীদ সঞ্চিতা শীল বলেন, “ব্রাউন রাইস অনেক বেশি জনপ্রিয়। অন্যান্য চালের থেকে এই চালে অনেক বেশি মিনারেলস থাকে। এর মধ্যে থাকে আয়রন থাকে। এর মধ্যে প্রচুর পুষ্টি।”