AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

Pavlov Hospital: পাভলভে আবাসিকদের পরিষেবায় বরাদ্দ হচ্ছে লাখ লাখ টাকা, কিন্তু যাচ্ছে কোথায়?

Pavlov : খাবার থেকে চিকিৎসা, পদ্ধতি থেকে প্রক্রিয়া, সবেই রাশি রাশি বেনিয়মের অভিযোগ। বরাদ্দ অর্থ কোথায়, হিসেব নেই কারও কাছে।

Pavlov Hospital: পাভলভে আবাসিকদের পরিষেবায় বরাদ্দ হচ্ছে লাখ লাখ টাকা, কিন্তু যাচ্ছে কোথায়?
পাভলভে 'বেনিয়মের' অভিযোগ
| Edited By: | Updated on: Jun 19, 2022 | 6:53 PM
Share

কলকাতা : মানসিক রোগীদের জন্য রাজ্যের প্রথম সারির হাসপাতাল পাভলভ। কিন্তু সেই হাসপাতালেরই বেহাল দশা। শিউরে ওঠার মতো ছবি শনিবারই প্রকাশ্যে এনেছে TV9 বাংলা। তুলে ধরা হয়েছিল, কী ভীষণ ‘নরক যন্ত্রণা’র মধ্যে থাকতে হচ্ছে পাভলভের আবাসিকদের। জীবনযুদ্ধ থেকে ছিটকে গিয়েছেন ওরা। তলিয়ে গিয়েছেন অন্ধকারের অতলে। কিন্তু সেই অন্ধকারের মধ্যেও আলো পৌঁছে দেওয়ার জন্য দুনিয়াজুড়ে আপ্রাণ লড়ে যাচ্ছেন মনোরোগ বিশেষজ্ঞ এবং মনোবিদদের একাংশ। এগিয়ে চলেছে চিকিৎসা বিজ্ঞানও।

তবে খাস কলকাতার গোবরায় রাজ্যের প্রথম সারির মানসিক হাসপাতাল পাভলভে কি সেই চিত্র প্রতিফলিত হচ্ছে? স্বাস্থ্য আধিকারিকদের রিপোর্ট থেকেই স্পষ্ট, কী কঠিন নরক যন্ত্রণার মধ্যে দিন গুজরান করছেন এখানকার আবাসিকরা। এখানে প্রতিটি বিল্ডিং, প্রতিটি ওয়ার্ড, প্রতিটি করিডরে ওৎ পেতে রয়েছে দেদার বেনিয়ম আর অব্যবস্থা। খোদ স্বাস্থ্য ভবনের একাংশ মানছে এপ্রিল এবং মে মাসে দুই দফায় স্বাস্থ্য কর্তা সরেজমিনে পরিদর্শনের পর যে রিপোর্ট উঠে এসেছে, তাতে স্পষ্ট পাভলভ এখন ঘুঘুর বাসা। খাবার থেকে চিকিৎসা, পদ্ধতি থেকে প্রক্রিয়া, সবেই রাশি রাশি বেনিয়মের অভিযোগ। বরাদ্দ অর্থ কোথায়, হিসেব নেই কারও কাছে।

যত কাণ্ড পাভলভে

  • স্বাস্থ্য দফতরের সূত্র বলছে, প্রতি মাসে ৬৪০ জন আবাসিকের জন্য খাওয়া বাবদ গড়ে ১৫ লাখ টাকা বরাদ্দ। তাও খাবারের পরিমাণ এবং খাবারের মান নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। মনিটরিং কমিটি, টেস্টার সেলের রিপোর্ট ছাড়াই অনুমোদন দেওয়া হচ্ছে মোটা টাকার বিলে।
  • যে সব আবাসিক সুগারের রোগী, তাঁদের জন্য ডায়েটে রুটির বন্দোবস্ত নেই। আবাসিকদের সন্ধে ৬ টা পর পরবর্তী মিল জোটে পরের দিন সকাল ৮ টায়। স্ট্রং ডোজ়ের ওষুধের মধ্যেই দীর্ঘক্ষণ উপোস করিয়ে রাখার অভিযোগ।
  • পোশাক বাবদ প্রতি বছর আবাসিকদের জন্য বরাদ্দ হয় ১ কোটি ৩০ লাখ টাকা। এরপরও কেন পর্যাপ্ত পোশাক পান না আবাসিকরা? সেই প্রশ্নও উঠছে। অভিযোগ রয়েছে কাপড়ের মান নিয়েও। ছেঁড়া ফাটা, ফিনফিনে, রঙ চটা পোশাকেই দিন কাটে আবাসিকদের।
  • হাসপাতালের বিল বলছে, রোগীদের চুল কাটা বাবাদ প্রতি বছর খরচ হয় দেড় লাখ টাকা। তাও কোনওরকমে কামিয়ে দেওয়া চুলে স্পষ্ট অযত্ন এবং অপরিচ্ছন্নতার ছাপ।
  • বায়ো মেডিক্যাল ওয়েস্ট অপসারণের প্রতি মাসে খরচ লক্ষাধিক টাকা। অথচ অভিযোগ উঠছে, বর্জ্র অপসারণের কোনও পরিকাঠামোই নেই হাসপাতালে। প্রশ্ন উঠছে, তাহলে লক্ষাধিক টাকা যাচ্ছে কোথায়?

বিশিষ্ট সমাজকর্মী রত্নাবলী রায় এই বিষয়ে জানিয়েছেন, এই গাফিলতি তো একদিনে হয়নি। এই ধরনের গাফিলতি নিশ্চয়ই ধারাবাহিকভাবে চলেছে। সুতরাং, এগুলি তাঁদের চোখ এড়াল কেন? একটি গ্যাপ নিশ্চিতভাবে প্রশাসনিক স্তরে রয়েছে। নেতৃত্বের অভাব রয়েছে, গাফিলতি রয়েছে, তাচ্ছিল্য় রয়েছে… সেই সঙ্গে কিছু কমিটির ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে।”

প্রশ্নের মুখে হাসপাতালের চিকিৎসা পদ্ধতিও

  • মানসিক রোগীদের অনেক ক্ষেত্রেই থেকে থেকে উত্তেজিত হয়ে ওঠার প্রবণতা থাকলেও রিপোর্ট বলছে হাসপাতালে নিয়মিত সিবিজি ইসিজি পরীক্ষার ব্যবস্থা নেই।
  • মানসিক রোগীর চিকিৎসাকেন্দ্র। অথচ সেখানে অমিল লোরাজিপাম, হেলোপেরিডল, ফেনারগান, ফ্লুইডস সহ একাধিক আবশ্যিক ওষুধ। কারণ নাকি সরবরাহের ঘাটতি।থার্মোমিটার, ক্যাথিটার, ওজন মাপার যন্ত্র, পালস অক্সিমিটারেরও জোগানে টান।
  • এছাড়া একই রোগীর একই প্রেসক্রিপশনে বছরের পর বছর ধরে চিকিৎসা চলছে বলেও অভিযোগ। রোগ এবং রোগীর নিয়মিত মনিটরিং নেই বললেই চলে।

বছর চারেক আগে রাজ্যের মানসিক হাসপাতালগুলির প্রেসক্রিপশন অডিট করার জন্য কমিটি গঠন করেছিল স্বাস্থ্য ভবন। সেই কমিটির অন্যতম সদস্য চিকিৎসক রঞ্জন ভট্টাচার্য। তাঁর বক্তব্যে শোনার পর পাভলভের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ আরও জোরালো হচ্ছে। TV9 বাংলাকে তিনি জানিয়েছেন, “প্রেসক্রিপশন অডিটে (অন্তর্বিভাগের জন্য) আমরা দেখতে পেয়েছিলাম, একজন মানসিক রোগীর জন্য প্রতিদিন রাউন্ড দেওয়া প্রয়োজন। সেটা হয়ত কয়েক জায়গায় পরিলক্ষিত হয়নি। এছাড়া রুটিন বেসিক ইনভেস্টিগেশনও করা হয় না। বেশ কিছু ক্ষেত্রে অনেকদিন ধরেই ব্লাড সুগার বা হিমোগ্লোবিন টেস্ট করা হয়নি।”