লাল-নীলবাতি লাগানো গাড়ি চড়ে জালিয়াতদের ফুটানির দিন শেষ, নয়া নির্দেশিকা পরিবহন দফতরের
নিয়ম লঙ্ঘন করেই যেভাবে রং-বেরঙের বাতি লাগানো গাড়ির ব্যবহার বেড়েছে, তাতে অশনি সংকেত দেখতে শুরু করেছে রাজ্য।
কলকাতা: সাম্প্রতিক সময়ে শহর তথা গোটা রাজ্যে ভুয়ো আধিকারিকদের রমরমা উঠেছে তুঙ্গে। প্রায় প্রতিদিনই কোনও না কোনও ভুয়ো আধিকারিক ধরা পড়ছে পুলিশের জালে। বহু ক্ষেত্রেই দেখা যাচ্ছে, নীল বা লালবাতি গাড়ি ব্যবহার করে সহজেই সমাজের চোখে ধুলো দিয়ে দিচ্ছে ঠগ ও জালিয়াতরা। সে ভুয়ো আইএএস দেবাঞ্জন দেব হোক বা সনাতন রায়চৌধুরী। অনেকের ক্ষেত্রেই এই বাতি লাগানো গাড়িই প্রধান যোগসূত্র হয়ে উঠেছে। কারা এই গাড়ি ব্যবহার করতে পারেন, বা কারা পারেন না, এই নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের স্পষ্ট নির্দেশ রয়েছে। কিন্তু নিয়ম লঙ্ঘন করেই যেভাবে রং-বেরঙের বাতি লাগানো গাড়ির ব্যবহার বেড়েছে, তাতে অশনি সংকেত দেখতে শুরু করেছে রাজ্য।
এই অবস্থায় সোমবার রাজ্যের পরিবহন দফতরের পক্ষ থেকে এই নির্দেশিকা জারি করে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, কারা কোন রঙের বাতি লাগানো গাড়ি চড়তে পারবেন। এই তালিকায় মুখ্যমন্ত্রী থেকে শুরু করে মোট ১৯ ধরনের পদাধিকারীরা তাঁদের গাড়িতে কী ধরনের বাতি ব্যবহার করতে পারবেন তা বলা হয়েছে। বিজ্ঞপ্তি জারির মাধ্যমে বলা হয়েছে, রাজ্যপাল, মুখ্যমন্ত্রী, হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি, বিধানসভার স্পিকার, রাজ্যের পূর্ণমন্ত্রী, বিরোধী দলনেতা এবং হাইকোর্টের বাকি বিচারপতিরা ফ্ল্যাশ-সহ লালবাতি লাগানো গাড়ি ব্যবহার করতে পারবেন।
দ্বিতীয় তালিকায় রয়েছেন তাঁরা যাঁরা কেবল লালবাতি লাগানো গাড়ি ব্যবহার করবেন, কিন্তু সেই বাতিতে কোনও ফ্ল্যাশলাইট থাকবে না। এই তালিকায় রয়েছেন মন্ত্রিসভার প্রতিমন্ত্রীরা। এ বাদে বিধানসভার ডেপুটি স্পিকার, কলকাতা শহরের মেয়র এবং রাজ্য সরকারের মুখ্যসচিব এই গাড়ি ব্যবহার করতে পারবেন। তৃতীয় তালিকায় থাকা পদাধিকারীরা ফ্ল্যাশলাইট লাগানো নীলবাতি গাড়ি ব্যবহার করবেন। এই তালিকায় সংসদের সচিব, রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল, অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল, রাজ্যের নির্বাচন কমিশনার-সহ রাজ্যের একাধিক কমিশনের চেয়ারম্যান রয়েছেন।
সোমবার এই তালিকা নতুন করে পরিবহন দফতরের পক্ষ থেকে পাঠানো হয়েছে পুলিশের কাছে। ২০১৪ সালের বিজ্ঞপ্তি পুনরায় পুলিশকে পাঠিয়ে জানিয়ে দেওয়া হল যে, কারা কারা গাড়িতে লালবাতি বা নীলবাতি ব্যবহার করতে পারবেন। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশেই ২০১৪ সালে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছিল রাজ্যের পরিবহন দফতর। আরও পড়ুন: বিশ্লেষণ: আজ নীল রঙে মিশে গেছে ভেজাল…কারা চড়েন জেনে নিন