কেন বাড়ছে বজ্রপাত? ওই সময় কী করবেন আর কী করবেন না

ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরোর রিপোর্ট বলছে, ২০১৯ সালে বাংলায় ১৪৭ জনের মৃত্যু হয়েছে বজ্রাঘাতে। ২০১৯ সালে সারা দেশে বাজ পড়ে মৃত্যু হয়েছে ২,৮৭৬ জনের।

কেন বাড়ছে বজ্রপাত? ওই সময় কী করবেন আর কী করবেন না
প্রতীকী চিত্র
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jun 08, 2021 | 6:08 PM

কলকাতা: সোমবার বজ্রপাতে রাজ্যে মৃত্যু হয়েছে ২৭ জনের। বর্ষার আগমনে দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে আগামী কয়েকদিন ঝড়বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে হাওয়া অফিস। এই প্রেক্ষিতে মানুষের কাছে নয়া আতঙ্ক হয়ে উঠেছে বজ্রপাত।

কিন্তু কেন এত বজ্রপাত?

বিশেষজ্ঞদের মতে, এর মূলে রয়েছে কিউমিউলোনিম্বাস মেঘের আনাগোনা। যা দূষণ এবং উষ্ণতা বৃদ্ধির জন্য তৈরি হয়। এই কিউমিউলোনিম্বাস মেঘই বজ্রপাতের কারণ। আর বাংলায় বজ্রপাতের নেপথ্যে রয়েছে ছোটনাগপুর মালভূমি অঞ্চলে বজ্রগর্ভ মেঘের সঞ্চার। এর প্রবাবেই বাংলা-সহ বিহার, ঝাড়খণ্ড, ওড়িশা রাজ্যে বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টিপাত ঘটে। মূলত গ্রামীণ এলাকাগুলিতে বাজ পড়ে মৃত্যুর সংখ্যা বেশি।

ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরোর রিপোর্ট বলছে, ২০১৯ সালে বাংলায় ১৪৭ জনের মৃত্যু হয়েছে বজ্রাঘাতে। দেশ জুড়ে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে যত সংখ্যক মানুষ মারা যান, তার মধ্যে বাজ পড়ে মৃত্যুর সংখ্যাটা কিন্তু অবহেলা করার মতো নয়। ২০১৯ সালে সারা দেশে বাজ পড়ে মৃত্যু হয়েছে ২,৮৭৬ জনের।

thunderstorm

অলঙ্করণ: অভিজিৎবিশ্বাস

বজ্রপাতে বড় বিপর্যয়

বাজে মৃত্যুর বেশিরভাগই গ্রামাঞ্চলের মানুষ। মূলত ফাঁকা মাঠে কৃষিকাজ করার সময় তাঁরা বজ্রস্পৃষ্ট হচ্ছেন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এখন চাষের জন্য অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি এসেছে। এগুলিতে বিদ্যুৎ আকৃষ্ট হচ্ছে বেশি। কিন্তু এসবে মধ্যে বাজ পড়ার সময় কী করবেন আর কী করবেন না, দেখে নেওয়া যাক সেটাই।

কী ধরনের সতর্কতা নেবেন?

১) বাজ পড়ার সম্ভাবনা যেখানে রয়েছে বা যেখানে ঝড়ের সঙ্গে বাজ পড়া শুরু হয়েছে, ফাঁকা জায়গায় না থেকে কোনও কংক্রিটের বাড়িতে আশ্রয় নিতে পারলে ভালো হয়। ফাঁকা মাঠ থেকে দৌড়ে এসে কোনও বড় গাছের নীচে আশ্রয় নেবেন না। এরাই বিদ্যুৎ আকর্ষণ করে বেশি।

২) বাজ পড়ার সময় ইলেকট্রিক পোস্টের কাছাকাছি থাকা এড়িয়ে চলুন। বজ্রপাতের সময় মোটরবাইকে ঘুরবেন না। তবে চারচাকার গাড়িতে থাকলে দরজা জানলা বন্ধ করে রাখুন। তবে সবচেয়ে ভালো হয় কোনও কংক্রিটের আচ্ছাদনে আশ্রয় নেওয়া।

৩) যদি খোলা জায়গায় থাকেন এবং সেখান থেকে চটজলদি কোনও নিরাপদ আশ্রয়ে পৌঁছনো না যায়, তবে বজ্রপাতের সময় মাটিতে সঙ্কুচিত বসে অথবা শুয়ে পড়তে হবে।

বাজ পড়ার সময় যা করবেন না

১) ঝড়-বৃষ্টি থেকে বাঁচতে বড় গাছের তলায আশ্রয় নেবেন না। কাঁচা বাড়িতেও থাকা বিপদের।

২) বজ্রপাতের সময় জলে থাকা বিপজ্জনক। তাই ঝড়-বৃষ্টি ও বজ্রপাতের সময় মৎস্যজীবীদের সমুদ্র ও নদীতে যেতে নিষেধ করা হয়। পুকুর বা বড়ো জলাশয় থেকেও দূরে থাকুন এই সময়।

৩) বিদ্যুতের ঝলক দেখা আর শব্দ শোনার মধ্যে অন্তত ৩০ সেকেন্ড অন্তরায় থাকলে পরের আধ ঘণ্টা বাইরে বেরবেন না।

৪) বজ্রপাতের সময় ফোনে চার্জে বসিয়ে কথা বলা বা ব্যবহার করা একেবারে নয়। পাইপবাহিত জল, জানলার রড, এবং বিদ্যুৎ পরিবাহী এমন কোনও জিনিস স্পর্শ করবেন না।

আরও পড়ুন: ‘মদনও গোপাল, উনিও নাড়ু খান,’ টিপ্পনী গোপালের

আগামী কয়েকদিন হালকা থেকে ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। রয়েছে বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টির আশঙ্কা। তাই সাবধানতা জরুরি।