‘ডাক্তাররা মেরে ফেলবে’ বলে ছটফট করছিলেন হাসপাতালে, ফিরেই আত্মঘাতী করোনা আক্রান্ত
প্রথমবার দিন ১৫-র মধ্যে সুস্থ হয়ে গিয়েছিলেন মামনি। এ বার ফের আক্রান্ত হন তিনি। আর তারপর থেকেই ভুগছিলেন মানসিক অবসাদে।
বারাসত: করোনা শুধু শারীরিক নয়, মানসিক ‘সংক্রমণ’ও ঘটাচ্ছে। আর তারই জেরে আত্মহত্যার প্রবণতা বাড়ছে আক্রান্তদের। করোনা আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন মামনি। চিকিৎসাও চলছিল তাঁর। কিন্তু স্বামীকে বারবার ফোন করে বলতে থাকেন, ডাক্তাররা তাঁকে মেরে ফেলবে। বাড়ি ফিরে এসে আত্মঘাতী হলেন দেগঙ্গার বাসিন্দা ওই মহিলা। এর আগেও একবার করোনা আক্রান্ত হয়েছিলেন তিনি। এ বার দ্বিতীয়বার সংক্রামিত হন মামনি মণ্ডল নামে ওই মহিলা। হাসপাতালে থাকাকালীনই তিনি মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন বলে মনে করছেন চিকিৎসকেরা।
দেগঙ্গার বিশ্বনাথপুর পদ্মরাজ পাড়া এলাকার ঘটনা। শুক্রবার রাতে হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফিরে আত্মঘাতী হন তিনি। তাঁর স্বামী কুশ মণ্ডল জানিয়েছেন স্ত্রী মামনি দু’বার করোনায় আক্রান্ত হন। প্রথমবার আক্রান্ত হওয়ার ১৫ দিনের মধ্যে তিনি সুস্থ হয়ে ওঠেন। মঙ্গলবার করোনা পরীক্ষা করার পরে জানা যায় তিনি আবারও করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। শ্বাসকষ্ট শুরু হওয়ায় বুধবার বারাসতের কদম্বগাছি জি এনআরসির কোভিড হাসপাতালে তাঁকে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালে থেকে তিনি মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন। এই পরিস্থিতিতে শুক্রবার চিকিৎসকেরা তাঁকে ছুটি দেন। দুপুরেই কুশ মন্ডল তাঁর স্ত্রী’কে নিয়ে বাড়ি ফেরেন।
কুশ মণ্ডল জানিয়েছেন, বাড়ি ফিরে তিনি বাজারে ওষুধ আনতে যান। বেশ কিছুক্ষণ পর ফিরে দেখেন ঘরের দরজা বন্ধ। প্রতিবেশীরা ছুটে আসে। তারপরে দেখা যায় মামনি মন্ডল গলায় দড়ি দিয়ে আত্মঘাতী হয়েছেন। কুশ মন্ডল জানান, হাসপাতালে থেকেই মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন মামনি। বারবার ফোন করে বলছিলেন যে চিকিৎসকরা তাঁকে মেরে ফেলবে। এই আতঙ্কে ছটফট করছিলেন তিনি। তাই তাঁকে নিয়ে বাড়ি ফেরেন তাঁর স্বামী।
আরও পড়ুন: বলেছিলেন ‘হাঁপিয়ে যাচ্ছি’, আজ ফেসবুক থেকে বিদায় নেওয়ার কথা বললেন বিধায়ক
সম্ভবত মানসিক অবসাদেই আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছেন মামনি। দুই সন্তানকে রেখে আত্মঘাতী হয়েছেন তিনি। এই ঘটনায় শোকের ছায়া নেমেছে প্রতিবেশীদের মধ্যে। দেগঙ্গা থানার পুলিশ মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে।