Mirror Work: জনপ্রিয় মিরর ওয়ার্কের উৎপত্তি কোথায়, কীভাবেই তা জনপ্রিয় হল ভারতে?
Ancient Craft: ইতিহাস ঘাঁটলে দেখা যায় ১৩ শতকে পারস্যে এই মিরর ওয়ার্কের প্রচলন ছিল। পরবর্তীতে মুঘলদের হাত ধরে মুঘল যুগে এই হ্যান্ডওয়ার্ক ভারতে প্রবেশ করে। বলা হয় ইসলামিক বিশ্বাস থেকে এই মিরর ওয়ার্কের উৎপত্তি
রঙিন সুতো আর ছোট্ট কাচের টুকরোকে দক্ষতার সঙ্গে গেঁথে কাপড় ভরছে বাহারি নকশায়। কখনও বাঁধনির সঙ্গে, কখনও সুতোর কাজের সঙ্গে আবার কখনও পুরো পোশাক জুড়েই থাকছে সুন্দর কাঁচ চুমকির কাজ। এই কাজ এমব্রয়ডারি নামেই পরিচিত। শাড়ি, চুড়িদার, ওড়না, কুশান কভারে বিশেষ করে থাকে এই কাচের কাজ। রাজস্থানি ঘাঘরা, গুজরাটি স্টিচের কাজের সঙ্গে বিশেষ ভাবে চলে এই মিরর ওয়ার্ক। মিরর ওয়ার্ক করা পোশাক দেখতেও ভীষণ জমকালো। একটা সময়ে রাজপরিবারে এই জরি-চুমকি দেওয়া পোশাকের বিশেষ প্রচলন ছিল।
তবে আয়নার কাজের উৎপত্তি কোথায়?
ইতিহাস ঘাঁটলে দেখা যায় ১৩ শতকে পারস্যে এই মিরর ওয়ার্কের প্রচলন ছিল। পরবর্তীতে মুঘলদের হাত ধরে মুঘল যুগে এই হ্যান্ডওয়ার্ক ভারতে প্রবেশ করে। বলা হয় ইসলামিক বিশ্বাস থেকে এই মিরর ওয়ার্কের উৎপত্তি। বলা হয় আয়না খারাপ বা নেগেটিভ এনার্জিকে ধারে কাছেও ঘেঁষতে দেয় না। জৈন ধর্মেও উল্লেখ রয়েছে এই আয়নার। পরবর্তীতে এই দুই ধর্মের জ্বারা প্রভাবিত হয়্ই মন্দিরের সামনে আয়না ঝোলানোর রীতি প্রচলিত হয়। তবে এখন যে আয়নার কাজ আমরা দেখি তা উদ্ভূত হয় ১৭ শতকে। ঐতিহ্যবাহী বেলুচি মিররের কাজ পাপড়ি, ফুল আর পাতার সঙ্গেই নকশার মাধ্যমে তুলে ধরা হত। রাজস্থান, গুজরাত, হরিয়ানাতে এই মিরর ওয়ার্ক বিশেষ ভাবে জনপ্রিয়। সূচ সুতোয় সূক্ষ কাজ ভারতের এই প্রদেশগুলিতেই হয়ে থাকে।
মূলত সিল্ক আর মখমলের কাপড়ের উপরই এই মিরর ওয়ার্কের বেশি প্রচলন রয়েছে। তবে যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে রেয়নেও এই কাজ যাতে ফুটিয়ে তোলা যায় তার চেষ্টা চলছে। ব্লক প্রিন্টের দৌলতে হ্যান্ড এমব্রয়ডারি প্রায় হারিয়েই যেতে বসেছে। রাজস্থান, লখনউ, হরিয়ানাতে হাতে গোনা ১০-১২ জন শিল্পী এই মিরর ওয়ার্কের কাজ করছেন। মিরর ওয়ার্ক খুবই ক্লাসিক। বলা হয় এই মিরর ওয়ার্ক আমাদের সুন্দর প্রকৃতিরই প্রতিনিধিত্ব করে। জ্যামিতিক প্যাটার্ন, ফুলকারি, জরির কাজ, হলুদ, কমলা, সবুজ, নীল, লাল এ সব উজ্জ্বল রঙের উপরই মিরর কাজ বেশি করা হয়। ব্লাউজের ডিজাইন, ব্যাকলেস লেহঙ্গা চোলি, ওড়নাতে এই মিরর ওয়ার্ক বেশি প্রাধান্য পায়।