vegetarian: কেন ভারতের অধিকাংশ মানুষ এখনও মাংসের তুলনায় বেশি নিরামিষ আহারের দিকে ঝোঁকেন?

benefits of vegetarian: শরীরের জন্য নিরামিষ এবং আমিষ উভয়ই প্রয়োজন। তবে শুধু নিরামিষ খেলেই শরীর ভাল থাকবে এমন ভাবনা ঠিক নয়

vegetarian: কেন ভারতের অধিকাংশ মানুষ এখনও মাংসের  তুলনায় বেশি নিরামিষ আহারের দিকে ঝোঁকেন?
নিরামিষ ও আমিষের মধ্যেও ভারসাম্য বজায় রাখা জরুরি
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Dec 12, 2021 | 4:40 PM

বিশেষজ্ঞরা সব সময় ব্যালেন্সড ডায়েটের কথা বলেন। সুস্থ থাকতে খাদ্য তালিকায় মাছ-মাংস-ডিম সবই রাখা উচিত। প্রোটিন, ফ্যাট, কার্বোহাইড্রেট শরীরের জন্য সবটাই জরুরি। ভারতের মত খাবারে এই বৈচিত্র্য কিন্তু আর কোথাও দেখা যায় না। আমাদের এখানে এক এক প্রদেশে এক এক রকম খাবার জনপ্রিয়। আর সেই তালিকায় আমিষ নিরামিষ দুই রয়েছে। যদিও পাল্লা ভারী আমিষেকই। ভারতীয়রা যত কায়দায় মাছ, মাংসের নানা পদ রান্না করতে পারে, তেমনটা আর কোথাও কেউ করতে পারে না।

চিকেন কাবাব, কোপ্তা, কোর্মা, কষা থেকে চিলি চিকেন- দেশের সর্বত্রই মালে এই খাবার। দেশের বিভিন্ন প্রদেশে মাছের ঝোলের মধ্যেও কিন্তু প্রকারভেদ রয়েছে। খুব কম রাজ্য আছে আমাদের দেশে যেখানে সিংহভাগ মানুষই নিরামিষ খাবারে ভরসা করেন। তবে নিরামিষ খেলে শরীর বেশিদিন সুস্থ থাকে, একথা অনেক বিশেষজ্ঞই বলে থাকেন।

তবে আজকাল ভারতের অধিবাসীদের মধ্যে অনেকেই মাছ, মাংসের তুলনায় বেশি পছন্দ করছেন সবজি, পনির এবং নিরামিষ খাবার। মারস ছেড়ে রেস্তোরাঁতেও তাঁরা পছন্দ করছেন কোনও নিরামিষ পদই। আজকাল মোট জনসংখ্যার প্রায় ৭০ শতাংশ কিন্তু ফ্লেক্সিটারিয়ান হিসেবেই পরিচিত। আর তাই সোয়া চপ, মাশরুম, টোফু ইত্যাদি খাবারের চল বেড়েছে বর্তমানে। আর স্বাস্থ্যের খাতিরেই কিন্তু বর্তমানে জিভের স্বাদ বদলাতে উদ্যোগী হয়েছেন ভারতীয়রা। কিন্তু এই সব নিরামিষ পদও কিন্তু রান্না করা হচ্ছে আমিষের কায়দাতেই। চিলি মাশরুম, চিলি পনির তো আছেই সেই সঙ্গে রীতিমত মশলা কষিয়েও আজকাল এই সব পদ রান্না করা হচ্ছে। যাঁদের মাছ কিংবা মাংসের স্বাদ পছন্দ নয় তাঁরাও কিন্তু এই পদ্ধতি মেনে রান্না করে খেতেই পারেন।

সেই সঙ্গে মাংসের তুলনায় পনির ক্ংবা টোফুর মধ্যে ক্যালোরি কম থাকে। সেই সঙ্গে প্রোটিন বেশি। কার্বোহাইড্রেটও কম। যাঁরা হাই প্রেসার কি্ংবা কোলেস্টেরলের সমস্যায় ভুগছেন তাঁরা কিন্তু খাদ্যতালিকাতে রাখতেই পারেন এই সব খাবার। এতে যেমন জিভের স্বাদ মিটবে তেমনই কিন্তু শরীর উপযুক্ত পুষ্টিও পাবে। রান্নার পদ্ধতিও প্রায় একই রকম।

কিন্তু কেন এই সব খাবারের প্রতি আজকাল ঝোঁক বাড়ছে?

কোভিড পরবর্তী সময়ে আজকাল অনেকেই স্বাস্থ্য, খাওয়া-দাওয়া এসব নিয়ে বেশি মাথা ঘামাচ্ছেন। যে কারণে আজকাল নিরামিষভোজী কিংবা ভেগানের সংখ্যা বেড়েছে অনেকখানি। কোভিডের সময়ে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে বিশেষজ্ঞরা সব সময়ই জোর দিতে বলেছিলেন খাবারে। প্রোটিন বেশি করে খাওয়ার কথা বলেছেন।

এছাড়াও আজকাল সকলেই পরিবেশ নিয়েও যথেষ্ট সচেতন। যে কারণে প্রাণীজ প্রোটিনের থেকে উদ্ভিজ প্রোটিনকেই বেশি করে বেছে নিচ্ছেন। অত্যধিক প্রাণী হত্যা যে ইকো সিস্টেমের ভারসাম্যে ব্যঘাত ঘটায় তা আমরা সকলেই জানি। কোভিড-লকডাউনে যে ভাবে স্বাস্থ্যবিধি এবং জীবনযাত্রার উপর জোর দেওয়া হয়েছে, যে তারপর থেকে সকলেই অনেক সচেতন হয়েছেন।

১৯৬০ এর গোড়ার দিক থেকেই মাংসের উৎপাদন, আমদানি-রপতানি বৃদ্ধি পায়। মানুষও পছন্দ করতে শুরু করেন। এখন জনসংখ্যা বেড়েছে, মানুষের আয়ও বেড়েছে। সামর্থ থাকা সত্ত্বেও অনেকে মাংস এড়িয়ে চলছেন। বরং বিশ্বের অন্যান্য দেশ ভারতের তুলনায় অনেক বেশি মাংস প্রধান। এখনও ভারতীয় জনসংখ্যার ৮০ শতাংশ ভোগেন প্রোটিনের ঘাটতিতে। শুধু তাই নয়, প্রোটিন শরীরের জন্য যে কতটা গুরুত্বপূর্ণ সে বিষয়ে এখনও অনেকেই সঠিক তথ্য জানেন না। অনেকর ধারণা, মাছ মাংস খাওয়ার খরচ অনেক বেশি। তুলনায় নিরামিষ আহার সস্তা, কিছু টাকা বাঁচবে। এই মানসিকতা থেকেও কিন্তু অনেকে নিরামিষ খান ভারতে। আর এর জন্য দায়ী কিন্তু বিভিন্ন বিজ্ঞাপনী সংস্থাও।