Ranthambore National Park: পাহাড়-সমুদ্র নয়, এবার শীতে ঘুরে আসুন জনপ্রিয় ও রোমাঞ্চকর রণথম্বোর ন্যাশানাল পার্কে! কিন্ত কেন?
প্রতি বছর অক্টোবরের মাঝামাঝি সময় থেকে খোলা হয় এই পার্ক। পরিবার ও বন্ধুবান্ধবদের নিয়ে সুন্দপ জঙ্গল সাফারি করার জন্য এই অসাধারণ অভয়ারণ্যে একবার অন্তত ঘুরে আসুন।
এই শীতে কোথাও ঘুরতে যেতে মন চেয়েছে, কিন্তু ভ্রমণের জন্য সুন্দর জায়গা কোনটি, তার পরিকল্পনা শেষ করে উঠতে পারছেন না। অ্যাডভেঞ্জার, রোমাঞ্চকর ও প্রকৃতির কোলে যদি এবার জীবনের সেরা অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করতে চান. তাহলে চলে যানে রাজস্থানের আইকনিক রণথম্বোর ন্যাশানাল পার্কে। পরিবার ও বাচ্চাদের সঙ্গে দুর্দান্ত সফর তৈরি করতে এই চেয়ে ভাল জায়গা আর হয় না।
রাজস্থানের মাধোপুর এখন সকলেরই চেনা। বলিউডের দুই লাভ বার্ড ক্যাটরিনা ও ভিকির বিলাসবহুল বিয়ের আসর বসেছিল সেইখানেই। ফলে মাধোপুর ও রণথম্বোর এখন বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।
এবার প্রশ্ন জাগতেই পারে, দেশে এত জাতীয় সংরক্ষিত অভয়ারণ্য থাকতে শেষে সুদূর রাজস্থানের রণথম্ভোর ন্যাশনাল পার্ক পরিদর্শন করবেন কেন? ভ্রমণের জন্য মনোরম আবহাওয়ার কারণে অক্টোবর ও মার্চের মধ্যে শীতকালকেই পার্কটিকে ঘুরে দেখার সেরা সময়। এই সময় তাপমাত্রা তাকে ১০ থেকে ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে। অন্যদিকে শীতের সময় বন্যপ্রাণীরাও দিনের বেলায় সূর্যের আলোয় গা ভাসাতে ভালবাসে।
শীতকালে রণথম্ভোর জাতীয় উদ্যান কেন ভ্রমণে সেরা গন্তব্যস্থল, তার কয়েকটি কারণ এখানে দেওয়া রইল,
১. পরিযায়ী পাখীদের সেরা গন্তব্যস্থল- এই বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ কেন্দ্রে ফ্ল্যামিঙ্গো, ফ্লাইক্যাচার, ওয়াটারফাউল, সারস ক্রেন, গ্রে হর্নবিল, কর্মোরান্ট, সর্পেন্ট ঈগল, ব্রোঞ্জ-ডানাওয়ালা জাকানা, পেইন্টেড স্পারফাউল এবং নাইটজারের মতো সুন্দর সুন্দর প্রজাতির পাখির দেখা মেলে। পার্কের বিশাল জলাশয়ের কাছে পরিযায়ী মাখির ঝাঁক আপনাকে মুগ্ধ করবে।
২. শীতকালে বন্যপ্রাণীরা অবাধে বিচরণ করে- এই ন্যাশানাল পার্কের মধ্যে দিয়ে সাফারি করার সময় খুব সামনে থেকে রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার কিংবা চিতাবাঘ দেখার সুযোগ পেতে পারেন। শীতের মরসুমে গভীর জঙ্গেলে তারা অবাধে বিচরণ করে। সূর্যের আলোয় গা ভাসাতে তারা ঘুরে ঘুরে বেড়ায়। জলাশয়ের ধারে বিশেষ করে দেখা যায়। এই অভয়ারণ্যেই রয়েছে বেশি সংখ্যক বাঘ। এছাড়া রয়েছে নীলগাই, বুনো শুয়োর, সাম্বার, রুফাস লেজযুক্ত খরগোশ, টোডি ক্যাটস, স্লথ বিয়ার, কুমির প্রভৃতি।
৩. জঙ্গলের চারিধারে রয়েছে দপর্দান্ত পর্বতমালা ও হ্রদ- আরাবল্লি ও বিন্ধ্য পর্বতের রেঞ্জগুলি এই বন্যপ্রাণী সংরক্ষণের মধ্যেই পড়ে। পদম তালাও, মালিক তালাও, রাজবাগ তালাও এবং সুরওয়াল লেকের মতো অত্যাশ্চর্য হ্রদগুলির মন্ত্রমুগ্ধ দৃশ্যে চোখে পড়বে। পার্বত্য এলাকায় জৈন মন্দির, কালা গৌর মন্দির এবং অমরেশ্বর মহাদেবের মতো অনেক প্রাচীন মন্দিরও রয়েছে।
৪. প্রাচীন বটগাছ- যাঁরা সোশ্যাল মিডিয়া নিয়ে বেশি নাড়াচড়া করেন, ইনস্টা-রিল করতে বেশি আগ্রহী, তাঁদের জন্য এই জায়গা একেবারে পারফেক্ট। রণথাম্বোর জাতীয় উদ্যানে একটি বিশাল বটগাছ রয়েছে। পদম তালাও হ্রদের কাছে অবস্থিত এই বিশাল বটগাছটি ভারতের দ্বিতীয় বৃহত্তম বটগাছ হিসাবে পরিচিত।
৫. গভীর জঙ্গলের মধ্যিখানে রয়েছে রণথম্বোর দূর্গ- এই অভয়ারণ্যের নামকরণ হয়েছে ১০ শতকের তৈরি রণথম্বোর দূর্গের নামে। পাহাড়ের চূড়ায় অবস্থিত এই দূর্গটি পার্কের একেবারে মধ্যিখানে অবস্থিত। চৌহানদের নেতৃত্বে এই দূর্গটি নির্মাণ হয়েছিল। ১৩শ শতাব্দীতে দিল্লি সালনাচার এই দূর্গ দখল করে নেন। বর্তমানে এই দূর্গটি প্রাচীনের ভারতের একটি স্থাপত্যের ধ্বংসাবশেষে পরিণত হয়েছে।
প্রসঙ্গত, প্রতি বছর অক্টোবরের মাঝামাঝি সময় থেকে খোলা হয় এই পার্ক। পরিবার ও বন্ধুবান্ধবদের নিয়ে সুন্দপ জঙ্গল সাফারি করার জন্য এই অসাধারণ অভয়ারণ্যে একবার অন্তত ঘুরে আসুন।
আরও পড়ন: Winter Treks in India: অ্যাডভেঞ্চার আপনার নেশা? নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে বেড়িয়ে পড়ুন ট্রেকে