U19 World Cup 2022 Final: ফাইনালেও বাংলার রবির চমক অব্যাহত, উচ্ছ্বসিত বাবা-কোচ
Ravi Kumar: বাংলার ছেলে রবি যখন ভারতকে অনুর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপের ফাইনালের শুরুতেই জোড়া উইকেট এনে দিলেন, টিভি নাইন বাংলা যোগাযোগ করল তাঁর বাবা রাজেন্দ্র সিং ও ছেলেবেলার কোচ অরবিন্দ ভরদ্বাজের সঙ্গে। অ্যান্টিগায় ভারত-ইংল্যান্ডের হাইভোল্টেজ ম্যাচ চলছে, টেলিভিশনের পর্দায় চোখ রেখেছেন রবির বাবা-কোচও।
সঙ্ঘমিত্রা চক্রবর্ত্তী
নতুন বল হাতে নিয়েই ফাইনালে চমক দেখালেন বাংলার ছেলে রবি কুমার (Ravi Kumar)। অ্যান্টিগায় ছোটদের বিশ্বকাপে (U19 World Cup) নিজের প্রথম ওভারের পঞ্চম বলেই তিনি পেলেন উইকেট। শুরুতেই বাঁ হাতি পেসার ধাক্কা দিলেন ইংল্যান্ডকে (England)। এবং দ্বিতীয় উইকেটটা এল রবির দ্বিতীয় ওভারের তৃতীয় বলে। ইংলিশ অধিনায়ক টম প্রেস্টকে ফিরিয়ে দিয়ে রীতিমতো ঝটকা দেন রবি। ইংল্যান্ডের ব্যাটিংয়ের অন্যতম ভরসা ছিলেন ক্যাপ্টেন প্রেস্ট। স্বাভাবিকভাবেই শুরুতেই রবির আগুনে বোলিংয়ে বড় ক্ষতি হল ইংল্যান্ডের। বাংলার ছেলে রবি যখন ভারতকে (India) অনুর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপের ফাইনালের শুরুতেই জোড়া উইকেট এনে দিলেন, টিভি নাইন বাংলা যোগাযোগ করল তাঁর বাবা রাজেন্দ্র সিং ও ছেলেবেলার কোচ অরবিন্দ ভরদ্বাজের সঙ্গে। অ্যান্টিগায় ভারত-ইংল্যান্ডের হাইভোল্টেজ ম্যাচ চলছে, গোটা বিশ্ব চোখ রেখেছে টেলিভিশনের পর্দায়। রবির বাবা-কোচও দেখছেন তাঁর খেলা।
রবির বাবা রাজেন্দ্র সিং সিআরপিএফে চাকরি করেন। পোস্টিং অনুযায়ী বিভিন্ন রাজ্যে ঘুরতে হয়ে তাঁকে। তাঁর যখন কলকাতায় পোস্টিং ছিল, তখন জন্ম হয় রবি কুমারের। বাবার বদলির চাকরির জন্য পরে উত্তরপ্রদেশের আলিগড়ে চলে যান রবি। আলিগড়েই রবির বড় হওয়া। সেখানেই টেনিস বলে ক্রিকেটে হাতেখড়ি হয় তাঁর। রবির ছেলেবেলার কোচ অরবিন্দ ভরদ্বাজ। মহমেডানের হয়ে ১৮ বছর খেলেছিলেন অরবিন্দ। সাই বিহার কলোনির জেডিএসই অ্যাকাডেমিতে ভরদ্বাজ আবিষ্কার করেন রবিকে। সেখানে দেখেই রবিকে ভালো লেগে যায় ভরদ্বাজের। তাঁর পরামর্শেই বদলে যায় রবির জীবন। রবি কলকাতায় ফিরে আসেন ক্রিকেটের জন্য। উত্তরপ্রদেশের ছেলে কলকাতায় এসে যে সাফল্য পেল, এটা যেমন সত্যি, তেমনই এটাও সত্যি যে রবিকে কিন্তু বাংলার ছেলেই বলা যায়। তাঁর জন্ম যে এই মহানগরীতেই।
ফাইনালে ছাত্রের খেলা দেখতে দেখতে অরবিন্দ ভরদ্বাজ টিভি নাইন বাংলাকে বলেন, “ওকে প্রথম দিন দেখেই মনে হয়েছিল, ছেলেটাকে যদি ঘষামাজা যায়, তা হলে ও অনেক দূর যাবে। ওর আর্ম ওয়ার্ক রান আপ নিয়ে দিনের পর দিন খেটেছি। ছেলেটার একটা বড় গুণ হচ্ছে যে, ও দ্রুত শিখতে পারে। সেই গুণটাই ওকে এতটা উপরে তুলে নিয়ে এসেছে।”
যুব বিশ্বকাপের ফাইনালের আগে ছাত্রের সঙ্গে তাঁর কথা হয়েছিল কিনা, সেই প্রশ্নের উত্তরে অরবিন্দ বলেন, “অবশ্যই কথা হয়েছে। প্রতি ম্যাচের আগে এবং পরে নিয়মিত ওর সঙ্গে কথা হয়। ফাইনালের আগে ওকে একটা কথাই বলেছি। লাইন ধরে বল করতে, যেন ব্যাটসম্যান কোনও রুম না পায়। ওর একটা বিশেষত্ব হল একই সঙ্গে ও বল ভেতরে নিয়ে যেতে পারে আর বাইরেও নিয়ে যেতে পারে। ও প্রথম উইকেটটাও ওইরকম একটা বলে পেল। ও যদি এই ছন্দটা ধরে রাখতে পারে, তা হলে অনেক দূর যাবে।”
রবির কোচ অরবিন্দ ভরদ্বাজই তাঁকে পরখ করে দেখার পর, কলকাতায় প্রথম খেলতে পাঠান। হাওড়া ইউনিয়নের সেকেন্ড ডিভিশনে খেলা শুরু করেন রবি। সেখানে ভালো পারফর্ম করার পর এখন রবি বালিগঞ্জ ইউনাইটেডের হয়ে খেলেন।
রবির বাবা রাজেন্দ্র সিং এখন কর্মসূত্রে ওড়িশায় রয়েছেন। সিআরপিএফ ক্যাম্পে বসেই ফাইনালে ছেলের খেলা দেখছেন। ছেলের সঙ্গে ফাইনালের আগেও কথা বলেছেন। আর তাতেই রবি বাবাকে আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে জানান, বিশ্বকাপ নিয়েই দেশে ফিরব আমরা। রবির সেই আত্মবিশ্বাসের ঝলক দেখা যাচ্ছে ফাইনালের হাইভোল্টেজ ম্যাচের পারফরম্যান্সে।
ওড়িশায় সিআরপিএফ ক্যাম্পে বসে, রবির খেলা দেখতে দেখতে তাঁর বাবা রাজেন্দ্র সিং টিভি নাইন বাংলাকে বলছিলেন, “আমি তো কর্মসূত্রে কখনও এই শহরে থাকি তো কখনও অন্য শহরে থাকি। ফলে আমি ছেলেকে দেখার সুযোগ কিন্তু খুব একটা পাই না। আমি ওর কোচ অরবিন্দ ভরদ্বাজের কাছে ভীষণ কৃতজ্ঞ। উনি না থাকলে রবি এতদূর যেত না।”
বাংলা টেলিভিশনে প্রথমবার, দেখুন TV9 বাঙালিয়ানা