Cristiano Ronaldo: আবির্ভাবেই জোড়া গোল রোনাল্ডো, ওল্ড ট্র্যাফোর্ডের স্লোগান, কিং ইজ় ব্যাক

Man Utd vs Newcastle: ২০০৯ সালে শেষবার খেলেছিলেন ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডের হয়ে। রাজার ঘরে ফেরা যেন স্মরণীয় করে রাখল ওল্ড ট্র্যাফোর্ড। সাত নম্বর জার্সিতে ছেয়ে গিয়েছে গ্যালারি। পোস্টার, স্লোগানও তাঁকে ঘিরে।

Cristiano Ronaldo: আবির্ভাবেই জোড়া গোল রোনাল্ডো, ওল্ড ট্র্যাফোর্ডের স্লোগান, কিং ইজ় ব্যাক
Cristiano Ronaldo: আবির্ভাবেই জোড়া গোল রোনাল্ডো, ওল্ড ট্র্যাফোর্ডের স্লোগান, কিং ইজ় ব্যাক (সৌজন্যে- ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেড টুইটার)
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Sep 12, 2021 | 7:55 AM

ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেড-৪ : নিউ ক্যাসল-১ (রোনাল্ডো ৪৫+২ ও ৬২, ব্রুনো ৮০, লিংগার্ড ৯০+২) (ম্যানকুইলো ৫৬)

রিটার্ন অফ দ্য কিং!

সকাল থেকে লন্ডনের সব রাস্তা বোধহয় মিশে গিয়েছিল ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে। মাঠের সামনে দুপুর থেকেই ভিড়। রাজা ফিরছেন ঘরে। এক যুগ পর আবার পুরনো ক্লাবের হয়ে খেলতে দেখা যাবে তাঁকে। মাঠে নামার আগে একঝলক দেখা যাবে না তাঁকে? তাই হয় নাকি! টিম বাস থেকে নেমে রাজা হাত নাড়ালেন। যেন অভয় দিলেন, আমি এসে গিয়েছি তো! যেন ভরসা দিলেন, এ বার আনব ট্রফি!

কিং ইজ় ব্যাক!

সপ্তাহ দুয়েক আগেই প্যারিসে অভিষেক হয়েছে মেসির। ফরাসি লিগের ভিউয়ারশিপ হঠাত্‍ করে আকাশ ছুঁয়ে ফেলেছিল লিওনেল মেসির ছোঁয়ায়। বার্সেলোনা থেকে প্যারিস সাঁজায় এসেছেন তিনি। ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোর (Cristiano Ronaldo) ঘরে ফেরা যেন আরও ঝলমলে, আরও বর্ণময়, আরও আবেগের, আরও আবেদন মিশে থাকল। যে ক্লাবে কেরিয়ার শুরু করেছিলেন, যে ক্লাব থেকে তৈরি করেছিলেন একান্ত নিজস্ব সাম্রাজ্য, যেখান থেকে কিংবদন্তির সরণিতে হাঁটতে শুরু করা, সেখানেই আবার ফিরছেন রাজা। হোক না তাঁর বয়স ৩৬। রোনাল্ডো নামছেন মানে সব হিসেব উল্টে দেবেন। পাল্টে দেবেন ক্লাবকে। নিউ ক্যাসলের বিরুদ্ধে মাঠে নেমেই যেন স্বপ্নের ঝাড়বাতি জ্বালিয়ে দিলেন। প্রথমার্ধের ইনজুরি টাইমে গোল করে। নিউ ক্যাসলের কিপার ম্যাসন গ্রিনউডের বুকে লেগে বেরিয়ে আসে বল। গোলের সামনে ওঁত পেতে ছিলেন রোনাল্ডো। ১-০ করার জন্য সময় নষ্ট করেননি সিআর সেভেন।

২০০৯ সালে শেষবার খেলেছিলেন ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডের হয়ে। রাজার ঘরে ফেরা যেন স্মরণীয় করে রাখল ওল্ড ট্র্যাফোর্ড। সাত নম্বর জার্সিতে ছেয়ে গিয়েছে গ্যালারি। পোস্টার, স্লোগানও তাঁকে ঘিরে। তাঁর এক সময়ের কোচ স্যার আলেক্স ফার্গুসনও পর্যন্ত হাজির গ্যালারিতে। গোল করার পর ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে সেই পুরনো সেলিব্রেশন রোনাল্ডোর। প্রথমার্ধে কেমন খেললেন তিনি? বলে ৩০বার ছোঁয়া ছিল সিআর সেভেনের। প্রথম পঁয়তাল্লিশ মিনিট নিউ ক্যাসলের কোচ ডিফেন্সকে এমন ভাবে সাজিয়েছিলেন, তেমন সুযোগই পাচ্ছিলেন না রোনাল্ডো। ২৩ মিনিটে প্রথম শট নিয়েছিলেন তিনি। মোট ৫টা শট। যার একটা থেকে গোল। আর দ্বিতীয়ার্ধে?

যে কোনও গল্পে খুব কমই মোড় থাকে। আর যে সব গল্পে থাকে, চিরস্মরণীয় হয়ে যায়। রোনাল্ডোর মতো প্রত্যাবর্তনের মতো। বিরতির পর নিউ ক্যাসল দুরন্ত ফিরে এসেছে। ৫৬ মিনিটে ম্যানকুইলোর গোলে। ওল্ড ট্র্যাফোর্ড তখন আশঙ্কায় ভুগছে, টেনশনে ছন্নছাড়া। ঠিক তখনই সিআর সেভেন ঝলসে উঠলেন। যেমন উঠতেন রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে। যেমন উঠতেন জুভেন্তাসে। তেমনই আবার জ্বলে উঠলেন রোনাল্ডো। পোগবা পাসটা ধরেই থেকে লুক শ-র বল বাড়ান। রোনাল্ডো ছোট বক্সের দিকে ছুটতে ছুটতে জায়গা তৈরি করছিলেন তখন। একই সঙ্গে ভেঙে ফেলছিলেন ক্যাসলের ডিফেন্স। বিভ্রান্তও করছিলেন। সেখান থেকে বল ধরে বাঁ পায়ের শটে ২-১। রোনাল্ডোরই জাতীয় টিমের সতীর্থ ব্রুনো ফের্নান্ডেজ ৩-১ করলেন। ৪-১ লিংগার্ডের। কিন্তু সিআর সেভেনের প্রত্যাবর্তনের দিনে এ সব কে আর মনে রাখে! আসলে রোনাল্ডোই জোড়া গোল করে টিমের আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে দিয়েছিলেন।

১২ বছর ১১৮ দিন পর প্রত্যাবর্তন। ১২ বছর ১২৪ দিন পর আবার ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডের হয়ে গোল ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোর। ২০০৯ সালে ইপিএলে শেষবার গোল করেছিলেন ম্যাঞ্চেস্টার সিটির বিরুদ্ধে। ইপিএলে ম্যাঞ্চেস্টারের হয়ে ৮৫তম গোল করে ফেললেন তিনি। প্রত্যাবর্তনের এমন রেকর্ড কার থাকে? রোনাল্ডো ছাড়া! নিউ ক্যাসলের বিরুদ্ধে শেষবার ইপিএলের ম্যাচে হ্যাটট্রিক করেছিলেন সিআর সেভেন। এই ম্যাচে নিজের পুরনো রেকর্ডকে ছুঁতে পারলেন না পর্তুগিজ তারকা। না হোক, প্রত্যাবর্তনেই তো প্রত্যাশা বাড়িয়ে দিয়েছেন বহুগুন।

জার্সির রং সাদা, কালো কিংবা লাল হোক না কেন, রোনাল্ডো একই রকম বিধ্বংসী। ম্যাচের পর তিনি হাঁটছেন ওল্ড ট্র্যাফোর্ড। বহু বছর পর এমন তৃপ্তিমাখা হাঁটা তাঁর। বহু বছর পর এমন তৃপ্তিদায়ক রাত ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে। গ্যালারির উদ্দেশে হাত নাড়াচ্ছেন রোনাল্ডো। সারা গ্যালারি তখন স্বপ্নে একাকার!