Gangarampur news: ফুচকা বিক্রির টাকায় স্মার্টফোন কিনে দিতে পারেননি বাবা, গলায় ফাঁস গিয়ে আত্মঘাতী কিশোর

Gangarampur news: মোবাইলের জন্য একাধিকবার বাবার কাছে বায়না করেছিল বছর সতেরোর উত্তম দাস। কিন্তু বাবার আর সামর্থ্য হয়নি ছেলেকে মোবাইল কিনে দেওয়ার। মোবাইল না পাওয়ায় এবার গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মঘাতী হল ওই কিশোর।

Gangarampur news: ফুচকা বিক্রির টাকায় স্মার্টফোন কিনে দিতে পারেননি বাবা, গলায় ফাঁস গিয়ে আত্মঘাতী কিশোর
গঙ্গারামপুরে আত্মঘাতী কিশোর
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: May 21, 2022 | 11:46 PM

গঙ্গারামপুর: সংসারে চরম আর্থিক অনটন। ফুচকা বিক্রি কোনওরকমে সংসার টানেন তপন দাস। কিন্তু এর মধ্যেও ছেলের শখ পূরণ করার কাজে কোনও খামতি রাখেননি তিনি। ছেলেকে একটি স্মার্টফোন কিনে দিয়েছিলেন। ১৮ হাজার টাকা দিয়ে। ফুচকা বিক্রি করে ১৮ হাজারের ফোন কেনার সামর্থ্য ছিল না তাঁর। তবুও ধার দেনা করে কোনও রকমে ছেলের জন্য ওই মোবাইলটি কিনে দিয়েছিলেন। কিন্তু সেই মোবাইলটি মাস চারেক আগে চুরি হয়ে যায়। তারপর থেকে মোবাইলের জন্য একাধিকবার বাবার কাছে বায়না করেছিল বছর সতেরোর উত্তম দাস। কিন্তু বাবার আর সামর্থ্য হয়নি ছেলেকে মোবাইল কিনে দেওয়ার। মোবাইল না পাওয়ায় এবার গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মঘাতী হল ওই কিশোর।

তপন দাসের বাড়ি দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার গঙ্গারামপুর থানার ৩/২ বেলবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের নারায়ণপুর লক্ষ্মীতলায়। শুক্রবার দুপুরে বাড়িতেই নিজের ঘরে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মঘাতী হয় তপন বাবুর ছেলে। পরে খবর দেওয়া হয় গঙ্গারামপুর থানায়। পুলিশ দেহটি উদ্ধার করে শনিবার ময়নাতদন্তের জন্য বালুরঘাট জেলা হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। জানা গিয়েছে, উত্তম দাস মাধ্যমিকের পরের আর পড়াশুনা করেনি৷ বাবার সঙ্গে ফুচকা বিক্রির ব্যবসাতে হাত লাগায় উত্তম। দুই জন মিলে ভালই ব্যবসা করছিলেন এলাকায়। এদিকে মাস পাঁচেক আগে ছেলে মোবাইলের বায়না ধরে৷ তার বন্ধুরা সব মোবাইলে গেম খেলত। সেই গেম খেলার জন্যই বাবার থেকে একটা স্মার্ট ফোনের আবদার করে সে৷

বাবা ধার দেনা করে ছেলেকে তার পছন্দ মতো মোবাইল কিনেও দেন। এদিকে মাস চারেক আগে তার সেই মোবাইলটি চুরি হয়ে যায়৷ চোখে লঙ্কার গুড়ো দিয়ে মোবাইল নিয়ে চম্পট দেয় দুষ্কৃতীরা। তারপর আবারও বাবার কাছে মোবাইলের বায়না ধরে। কিন্তু বাবার পক্ষে আর মোবাইল কিনে দেওয়া সম্ভব হয়নি। এদিকে মোবাইলে গেম খেলার নেশা ছিল উত্তমের৷ বন্ধুদের মোবাইলে সময় পেলে গেম খেলত সে। নিজের আর একটি মোবাইল কিনে দেওয়ার জন্য বারবার বাবাকে বলেছিল সে। পরিবারের অনুমান, সেই মোবাইল না পেয়েই আত্মঘাতী হয়েছে কিশোর।

মৃতের বাবা তপন দাস বলেন, “দীর্ঘদিন ধরে ছেলে মোবাইলের জন্য আবদার করেছিল। কিন্তু কয়েক মাস আগেই ছেলের পছন্দ মত একটি মোবাইল কিনে দিয়েছিলেন। কিন্তু সেটি চুরি হয়ে যায়। তারপর আর মোবাইল কিনে দেওয়া সম্ভব হয়নি।” গতকাল বুনিয়াদপুরে অর্ডারের ফুচকা দিতে যাওয়ার সময় দেখেন ছেলের ঝুলন্ত দেহ৷ তাঁদের অনুমান ছেলেকে মোবাইল না দিতে পারার জন্য হয়তো আত্মঘাতী হয়েছে সে। মৃতের প্রতিবেশী সাধন সরকার বলেন, প্রতিবেশী হিসেবে তাঁরা দেখতেন বাবা ও ছেলে ভালই ফুচকার ব্যবসা করতেন। তাদের সংসার ও বেশ ভালই চলছিল। হঠাৎ করে গতকাল দুপুরে শোনেন উত্তম আত্মঘাতী হয়েছে। পরে জানতে পারেন মোবাইল না পাওয়ার জন্য আত্মঘাতী হয়েছে সে।