Hooghly: স্কুলে যাওয়ার পথে ৬০০ মিটার গলিতেই লুকিয়ে আসল কারণ, বছরের ৩ মাসই ক্লাস করতে যায় পড়ুয়ারা, বাকি ৯ মাস আসতে বারণ করেন শিক্ষিকা খোদ
Hooghly: গ্রামের প্রধান রাস্তার সঙ্গে আইসিডিএস সেন্টারের একটি সংযোগকারী রাস্তা রয়েছে। আর যত বিপত্তি সেখানেই। কারণ ওই ৬০০-৮০০ মিটার রাস্তাই সর্বদা কর্দমাক্ত। স্থানীয় বাসিন্দাদের কথায়, হাঁটু সমান কাদা থাকে বছরের বেশিরভাগ সময়েই।
হুগলি: দিদিমনি রয়েছেন, রয়েছেন সহায়িকাও। আশপাশ গ্রামের থেকে খুদে পড়ুয়াদেরও স্কুলমুখী করা সম্ভব হয়েছিল। তবুও বছরের তিন মাসই চালানো সম্ভব হয় আইসিডিএস সেন্টার। বাকি ৯ মাস থাকে বন্ধ। কেন? তার কারণ বড় অদ্ভুত। অভিভাবক থেকে শুরু করে স্কুলের শিক্ষিকারও একই বক্তব্য, গ্রামের যে প্রান্তে আইসিডিএস সেন্টার, সেখানে আসার একটা সরু রাস্তা রয়েছে। সে রাস্তা মাটির। বছরের বেশিরভাগ দিনই সে রাস্তায় জল, প্রায় হাঁটু সমান কাদা। তাই সে রাস্তা উজিয়ে আর পড়ুয়ারা আসে না আইসিডিএস কেন্দ্রে। আরও বড় ব্যাপার, স্কুলের ভবনই নেই, নেই রান্নাঘর। তাই বাধ্য হয়ে বাকি যে তিন মাস চলে, তাতে অন্যের বাড়ির উঠানে ত্রিপল টাঙিয়ে চলছে আইসিডিএস কেন্দ্র। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে চলে রান্নাবান্না। কথা হচ্ছে হুগলির পুরশুড়া ২০১ নম্বর বলরামপুর অঙ্গনওয়াড়ি সেন্টারের।
বলরামপুর গ্রামের পূর্ব কোণে ওই আইসিডিএস সেন্টার! নাহ, কোনও সরকারি ভবন নয়। গ্রামেরই এক বাসিন্দার বাড়ির উঠোনে চলে সেই সেন্টার। গ্রামের ৬০ জন পড়ুয়া পড়ে ওই কেন্দ্রে। আর রয়েছেন ৪৪ জন গর্ভবতী মহিলা। গ্রামের প্রধান রাস্তার সঙ্গে আইসিডিএস সেন্টারের একটি সংযোগকারী রাস্তা রয়েছে। আর যত বিপত্তি সেখানেই। কারণ ওই ৬০০-৮০০ মিটার রাস্তাই সর্বদা কর্দমাক্ত। স্থানীয় বাসিন্দাদের কথায়, হাঁটু সমান কাদা থাকে বছরের বেশিরভাগ সময়েই।
তাই মাত্র ৩ মাস মতো পড়ুয়ারা আসে পড়াশোনা করতে। বাকি ৯ মাস তাদের ছুটি। আর যে তিন মাস আসে, তাতেও রান্নাবান্নার একটা বড় সমস্যা রয়েছে। অভিভাবকদের দাবি. অবিলম্বে রাস্তাটি উঁচু করা হোক ও নির্দিষ্ট স্থানে সরকারি খরচে তৈরি করা হোক অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র। এক অভিভাবক বললেন, “পরিস্থিতি খারাপ। দিদিমনিরাই আসতে বারণ করে দেয়। সারা বছরই রাস্তা খারাপ। ত্রিপল খাটিয়ে ক্লাস হয়। কী করে বাচ্চাদের পাঠাই। দিদিমনি বলে দেন, বাড়িতেই পড়াশোনা করে। ”
স্কুলের শিক্ষিকা পিয়ালি মুখোপাধ্যায় বলেন, “অপরের বাড়িতে স্কুল চলে। ৯ বছর ধরে আমাদের অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রটি চলছে। আমি গ্রামের বিভিন্ন জায়গা থেকে বাচ্চা নিয়ে এসেছিলাম স্কুলে। কিন্তু এখানে বাচ্চাদের পড়ানোর মতো পরিস্থিতি নেই। কোনও বাথরুম নেই, জলেরও সমস্যা। তাই বাচ্চারা আর এখন স্কুলে আসে না। শুধু এসে খাবার নিয়ে যায়। আমি বারবার সিডিপিও ও বিডিও সাহেবের কাছে অনুরোধ করেছি। এখন দেখা যাক।”
জায়গার সমস্যার কথা স্বীকার করে নিয়েছে প্রশাসনও। পুরশুড়া পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ খোকন মল্লিক বলেন, “ওখানে অন্যের একটা জায়গায় চলছে। সরকারি জায়গা পাওয়ার একটা সমস্যা রয়েছে। আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে এই নিয়ে আলোচনা করেছিলাম। আলোচনায় যেটা উঠে এসেছে, আমরা নতুন জায়গা তাড়াতাড়ি পাওয়া যায়, ওখানেই ভবন তৈরি হবে। ফান্ড তৈরি রয়েছে। জায়গা পাওয়া গেলেই দ্রুত টেন্ডার করে কাজ শুরু করে দেওয়া হবে।”