উপেক্ষিত রবীন্দ্রনাথ, একুশের ভোটে সস্ত্রীক প্রার্থী বেচারাম মান্না

একুশের ভোটে সিঙ্গুর থেকে TMC প্রার্থী বেচারাম মান্না (Becharam Manna), স্ত্রী করবী (Karabi Manna) পেলেন হরিপালের টিকিট  

উপেক্ষিত রবীন্দ্রনাথ, একুশের ভোটে সস্ত্রীক প্রার্থী বেচারাম মান্না
ফাইল ফটো
Follow Us:
| Updated on: Mar 05, 2021 | 11:33 PM

হুগলি: গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে জেরবার হয়ে কয়েক মাস আগে বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন তিনি। পরে অবশ্য দলের শীর্ষ নেতৃত্বের হস্তক্ষেপে পদত্যাগপত্র প্রত্যাহার করে নেন হুগলির হরিপালের বিদায়ী বিধায়ক বেচারাম মান্না (Becharam Manna)। সেই বেচারামকে একুশের ভোটে (West Bengal Election 2021) সস্ত্রীক প্রার্থী করল তৃণমূল (TMC)। বেচারাম পেলেন সিঙ্গুরের আসন আর তাঁর স্ত্রী করবী মান্না (Karabi Manna) কে দেওয়া হল হরিপাল কেন্দ্রের টিকিট।

সিঙ্গুরের মাস্টারমশাই রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্যকে এবার প্রার্থী করেনি তৃণমূল (TMC)। যা নিয়ে ক্ষুব্ধ রবীন্দ্রনাথ বলছেন, মমতা ডাকলেও প্রচারে যাবেন না আর। এদিকে তাঁর কেন্দ্রেই একুশের ভোটে প্রার্থী করা হল বিরোধী গোষ্ঠীর নেতা বলে পরিচিত আর এক বিদায়ী বিধায়ক বেচারাম মান্নাকে। শুধু‘মাস্টারমশাই’-এর আসন থেকে বেচারামকেই দাঁড় করানো হয়েছে তা নয়, হুগলির হরিপাল কেন্দ্র থেকে তাঁর স্ত্রী করবীকেও টিকিট দিল তৃণমূল।

২০১১ সালে তৃণমূল সরকার ক্ষমতায় আসার পরে মন্ত্রী হন রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য। যদিও পরে দলের সঙ্গে অনেকটাই ব্যবধান তৈরি হয়েছিল তাঁর। মন্ত্রিত্বও দেওয়া হয় না তাঁকে। এদিকে বেচারাম মান্নার সঙ্গে তাঁর মতবিরোধও প্রকাশ্যে আসে বারবার। একসময় দল ছাড়ার ইঙ্গিত তিনি নিজেই দিয়েছিলেন। কখনও অভিযোগ করেছিলেন, যেমন খুশি কমিটি বদল করে কাজের নেতাদের বাদ দেওয়া হচ্ছে। কখনও বলেছেন, তিনি ‘সম্মান’ পাচ্ছেন না। দলের কৃষক ও ক্ষেতমজুর সংগঠনের নেতা বেচারাম মান্নার নাম করেই তাঁকে বলতে শোনা যায়, স্বয়ং মমতা প্রশাসনিক সভায় বলে গিয়েছিলেন বেচারাম, মাস্টারমশাইকে সম্মান দিয়ে কাজ কর। কিন্তু তার পরেও কিছু পরিবর্তন হয়নি।  রাজনৈতিক মহলের একাংশের মতে, একদিকে বয়স অন্যদিকে বার বার দলকে বিড়ম্বনায় ফেলাতেই এবার আর টিকিট দেওয়া হয়নি রবীন্দ্রনাথকে।

এদিকে অভিমান করে মাস কয়েক আগে বেচারাম মন্ত্রিত্ব থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন। তবে দ্রুত তাঁকে তৃণমূল ভবনে ডেকে পাঠান দলের রাজ্য সভাপতি তথা সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক সুব্রত বক্সি। সেখানে বেচারামকে তিনি ‘ধমক’ দেন বলেও শোনা যায়। সেই কথোপকথনেই মান ভাঙে বেচারামের। নেতৃত্বের নির্দেশে তিনি ইস্তফা প্রত্যাহার করে নেন। তৃণমূল কংগ্রেসের কিষান খেতমজুর সংগঠনের রাজ্য সভাপতি হিসাবেও দায়ভার সামলেছেন তিনি। এবার সস্ত্রীক বেচারামকে একুশের ভোটে টিকিট দিল তৃণমূল।

গোষ্ঠীকোন্দলে জেরবার হয়ে যে বেচারাম তাঁর নিজের কেন্দ্রেই টিকিট পাবেন কিনা সেটাই কয়েক হাজার টাকার প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছিল। যেখানে তাঁর জায়গায় মাস্টারমশাই ঘনিষ্ঠ মহাদেব দাসকে টিকিট দেওয়া হতে পারে বলে তৃণমূল সূত্রে খবর ছড়িয়েছিল সেই রবীন্দ্রনাথ নিজেই এবার প্রার্থী হতে পারলেন না। পাশাপাশি বেচারামের বাড়িতে ঢুকল জোড়া টিকিট।

আরও পড়ুন: ‘হারা’ সিটে বিজেপি’কে রুখতেই তৃণমূলের তারকা-তাস?

এ নিয়ে বেচারামের মুখে হাসি ফুটলেও অভিমান করেছেন বর্ষীয়ান বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ। আর রবীন্দ্রনাথের অনুগামীরা বলছেন, আখেরে এতে বিজেপিকেই সুযোগ করে দিল।