TMC Leader: দুই মেয়ে-জামাইয়ের চাকরি বাতিল, হরিশ্চন্দ্রপুরের তৃণমূল নেতার ‘প্রভাব’ নিয়ে উঠছে প্রশ্ন

প্রভাবশালী নেতার দুই মেয়ে এবং জামাইয়ের ঘরের কাছেই তিনটি স্কুলে গ্রুপ-সি ক্লার্ক পদে চাকরি হয়েছিল। হাইকোর্টের নির্দেশে তিনজনেরই চাকরি বাতিল।

TMC Leader: দুই মেয়ে-জামাইয়ের চাকরি বাতিল, হরিশ্চন্দ্রপুরের তৃণমূল নেতার 'প্রভাব' নিয়ে উঠছে প্রশ্ন
মালদার তৃণমূল নেতার মেয়ে-জামাইয়ের চাকরি বাতিল।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Mar 12, 2023 | 6:11 PM

হরিশ্চন্দ্রপুর: বাবা তৃণমূল নেতা। প্রভাবশালী। স্কুলের গ্রুপ-সি ক্লার্ক পদে চাকরি হয়েছিল একসঙ্গে দুই মেয়ে এবং জামাইয়ের। তাও আবার ঘরের কাছেই তিনটি স্কুলে। সম্প্রতি হাইকোর্টের নির্দেশে তিনজনের চাকরি বাতিল। এই ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে মালদার হরিশ্চন্দ্রপুরে। ফের শাসকদলের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে সরব হয়েছে মালদা জেলা বিজেপি নেতৃত্ব।

সম্প্রতি কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশের ভিত্তিতে SSC-র গ্রুপ-সি পদে কর্মরত ৮৪২ জনের চাকরি বাতিল হয়েছে। আর সেই তালিকায় নাম রয়েছে, হরিশ্চন্দ্রপুর-১ নম্বর ব্লকের কুশিদা গ্রাম পঞ্চায়েতের উত্তর রামপুর গ্রামের বাসিন্দা প্রকাশ দাসের দুই মেয়ে মাম্পি দাস,শম্পা দাস এবং জামাই বিপ্লব দাসের। তৃণমূল নেতা হিসাবে পরিচিত প্রকাশ দাসের দুই মেয়ে ও জামাইয়ের একই পদে ঘরের কাছে স্কুলে চাকরি পাওয়া এবং বর্তমানে চাকরি বাতিলের ঘটনায় প্রভাবশালী তত্ত্ব উঠে আসছে।

জানা গিয়েছে, প্রকাশ দাসের মেয়ে মাম্পি দাস হরিশ্চন্দ্রপুর হাই স্কুল, শম্পা দাস হরিশ্চন্দ্রপুর কিরণবালা বালিকা বিদ্যালয় এবং জামাই বিপ্লব দাস কনুয়া ভবানীপুর হাইস্কুলে ক্লার্ক পদে কর্মরত ছিলেন। সম্প্রতি হাইকোর্টের নির্দেশে স্কুল সার্ভিস কমিশন বেআইনিভাবে নিয়োগের চাকরি বাতিল করে যে ৮৪২ জনের তালিকা প্রকাশ করেছে, সেখানে এই তিনজনেরই নাম রয়েছে। ঘটনাটি জানাজানি হতেই শোরগোল পড়ে গিয়েছে এলাকায়। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, মোটা টাকার বিনিময়ে শুধুমাত্র তৃণমূল করার জন্য একই পরিবারের তিনজন চাকরি পেয়ে গিয়েছিল। আর এলাকার প্রকৃত মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীরা বেকার বসে রয়েছে। তাই হাইকোর্টের এই রায়কে স্বাগত জানিয়েছেন সকলে। এমনকি স্থানীয় এক মহিলা তৃণমূল কর্মীর দাবি, চাকরির জন্য প্রকাশ দাসের মেয়ে-জামাই ২৪ লক্ষ টাকা দিয়েছিলেন। গোটা ঘটনায় তৃণমূলের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে সরব হয়েছে বিজেপি।

শাসকদলের বিরুদ্ধে কটাক্ষের সুরে উত্তর মালদা বিজেপি সাংগঠনিক জেলা সম্পাদক রূপেশ আগরওয়াল বলেন, “বর্তমান শাসকদলের সময়ে প্রত্যেক ক্ষেত্রে ভুয়ো ধরা পড়ছে। সিভিক পুলিশ ভুয়ো, ডাক্তার ভুয়ো। আর স্কুল সার্ভিস কমিশনের পুরো প্যানেলটাই বাদ দিতে চাইছেন বিচারপতি। প্রকাশ দাস তো চুনোপুঁটি। বুথকর্মী থেকে ব্লক, জেলা, রাজ্য স্তরের নেতৃত্ব, এমনকি মন্ত্রীরাও কেউ দুর্নীতি থেকে বাদ দেননি। তৃণমূল পার্টিটাই দুর্নীতিতে ভরপুর। যাঁরা কাটমানি পায়নি তাঁরাই কেবল এই রায়কে স্বাগত জানাচ্ছে।” তাঁর আরও দাবি, “অযোগ্যরা চাকরি পেয়েছে, যোগ্যরা ৭০০ দিনের বেশি রাস্তায় অনশন করছে। এভাবে গণতন্ত্র চলতে পারে না। যে জনগণ তৃতীয়বারের জন্য এই সরকারকে ক্ষমতায় এনেছে, তারাই পঞ্চায়েত ভোটে রায় জানাবে। এই সরকারকে ডাস্টবিনে ছুঁড়ে ফেলবে।”

যদিও এই ঘটনার দায় নিতে নারাজ তৃণমূল নেতৃত্ব। মালদা জেলা তৃণমূল মুখপাত্র শুভময় বসু বলেন, “আমাদের বিচারব্যবস্থার প্রতি সম্পূর্ণ আস্থা আছে। কেউ বেআইনি কাজ করলে দল তার দায় নেবে না। দল কারও পাশে দাঁড়াবে না। তাই বিরোধীদের কথার জবাব দেওয়ার প্রয়োজন নেই। হাইকোর্ট যা বলছে আমরা করছি।”

এদিকে, দুই মেয়ে, জামাইয়ের চাকরি বাতিল কেন হল, কী ভাবে তাঁরা চাকরি পেয়েছিলেন, সে বিষয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া দিতে নারাজ প্রকাশ দাস বা তাঁর পরিবার। এমনকি, মাম্পি দাস, শম্পা দাস এবং বিপ্লব দাসের চাকরি বাতিল হওয়া প্রসঙ্গে ডিআই অফিস থেকে কোনও তথ্য আসেনি বলে তাঁদের স্কুল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন। কনুয়া ভবানীপুর হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক রাজা চৌধুরী বলেন, “ডিআই অফিস থেকে এখনও পর্যন্ত কোনও তথ্য আসেনি এই সংক্রান্ত। সংবাদমাধ্যম থেকে খবরটি শুনেছি। এর বেশি কিছু জানি না।”