Maldah Crime News: বাইক থেকে ছিটকে পড়তেই ব্যাগের মুখটা ফাঁক হয়ে যায়, যুবককে উদ্ধার করতে গিয়ে যা দেখতে পান গ্রামবাসীরা…
Maldah Crime News: মনসুর ও তফিজুল যে কোনও দুষ্কর্মের সঙ্গে জড়িত, তাতে নিশ্চিত পুলিশ। তা না হলে ব্যাগে পাইপগান নিয়ে কেন ঘুরবে তারা?
মালদা: বাইক দুর্ঘটনার পর আহত দুই যুবককে উদ্ধার করতে গিয়ে চক্ষু চড়কগাছ উদ্ধারকারী গ্রামবাসীদের। কাঁধে ব্যাগের ভিতর থেকে উঁকি দিচ্ছে পাইপগানের মুখ! একটু এপাশ থেকে ওপাশ হলেই গুলি ফুঁড়ে যাবে উদ্ধারকারীদের বুক! মালদার চাঁচলের খেমপুরের কালীগঞ্জ এলাকায় ভয়ঙ্কর ঘটনা। দুর্ঘটনাগ্রস্ত বাইক আরোহীদের থেকে উদ্ধার হল গুলিভর্তি পাইপগান।
পুলিশ জানায়, সোমবার সকালে গ্রামের সরু রাস্তা দিয়েই দ্রুতগতিতে বাইক নিয়ে যাচ্ছিল মনসুর শেখ নামে এক যুবক। আচমকাই নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টে যায় বাইকটি। ছিটকে পড়ে যায় মনসুর ও তার পিছনের সিটে বসে থাকা এক সঙ্গী। স্থানীয় বাসিন্দারা দেখতে পেয়ে ছুটে আসেন তাদের উদ্ধার করতে।
রক্তাক্ত দুই যুবককে উদ্ধারের সময়ে তাদের ব্যাগের পিছনে রাখা অস্ত্র দেখতে পেয়ে যান তাঁরা। উদ্ধারকারীদের মধ্যেই এক জন লুকিয়ে পুলিশে খবর দেন। খবর পেয়ে এলাকায় পৌঁছয় চাঁচল থানার পুলিশ। মনসুর ও তার সঙ্গী তফিজুলের ব্যাগে তল্লাশি চালায় পুলিশ। আশঙ্কা সত্যি করেই উদ্ধার হয় গুলি ভর্তি পাইপগান। জানা গিয়েছে, ধৃত মনসুর রহমান ও তফিজুল শেখের বাড়ি হরিশ্চন্দ্রপুর এলাকায়।
তবে এই ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশের হাতে উঠে আসে আরও বিস্ফোরক তথ্য। তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, চাঁচল এলাকায় এক মহিলাকে উত্ত্যক্ত করেছিল ওই দুই যুবক। সেসময় স্থানীয় বাসিন্দারা তা দেখতে পেয়ে যান। তখনই তাদের ধাওয়া করেন ওই এলাকার বাসিন্দারা। বাইক নিয়ে দ্রুত গতিতে পালানোর সময়ই নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে মনসুর।
তবে মনসুর ও তফিজুল যে কোনও দুষ্কর্মের সঙ্গে জড়িত, তাতে নিশ্চিত পুলিশ। তা না হলে ব্যাগে পাইপগান নিয়ে কেন ঘুরবে তারা? অস্ত্র কোথা থেকে পেয়েছিল, কে তাদের অস্ত্র দিয়েছিল, আদৌ কোনও মহিলার শ্লীলতাহানি করেছে কিনা তারা, সবই খতিয়ে দেখছে পুলিশ। চাঁচলের এসডিপিও শুভেন্দু মণ্ডল জানিয়েছেন, স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন। সব দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
তবে মালদায় সীমান্তবর্তী এলাকাগুলিতে যে অস্ত্র পাচারকারিরা সক্রিয় হয়ে উঠছে, তা গত কয়কদিনে পুলিশি ধরপাকড়েই প্রমাণ মিলছে। চলতি মাসের শুরুতেই শোভানগর গ্রাম পঞ্চায়েতের চন্ডিপুর ব্রিজ এলাকায় হানা দিয়ে আব্দুল বারিক নামে এক আগ্নেয়াস্ত্র পাচারকারিকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তার বাড়ি চাঁচল থানা এলাকায়। আগ্নেয়াস্ত্র-গুলি বিক্রি করাই ছিল তার কাজ। তার কাছ থেকে উদ্ধার হয় তিনটি আগ্নেয়াস্ত্র।
গত নভেম্বরেই সফিকুল ইসলাম নামে এক আগ্নেয়াস্ত্র পাচারকারিকে গ্রেফতার করে পুলিশ। বাড়ি কালিয়াচকের রাজনগরের কাঁঠালবাড়ি। তাঁর কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে তিনটি সেভেন এমএম পিস্তল। একটি পাইপ গান। সাতটি ম্যাগাজিন। ২০ রাউন্ড কার্তুজ। এছাড়াও মিলেছে একটি মোবাইল।
নভেম্বরেই মালদার সীমান্তবর্তী ভাকশালা গ্রামে একটি বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে আগ্নেয়াস্ত্র ও কার্তুজ-সহ ২ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। উদ্ধার হয় কয়েকটি পাইপগান সহ কার্তুজ। ওই বাড়িতেই আগ্নেয়াস্ত্র তৈরি হত বলে প্রাথমিক তদন্তে অনুমান পুলিশের।