Fake Police: আই কার্ডই ছিল তাঁর ‘অপারেশনের’ মূল হাতিয়ার! লালবাজারের অপরাধ দমন শাখার ‘কর্তার’ পর্দাফাঁস

Fake Police Officer: সোমবার সকালেই বরনগর থানায় অনিরুদ্ধ দত্তর নামে প্রতাভরণার অভিযোগ দায়ের করেন রথীন। বরনগর থানার পুলিশ গোপন সূত্রে খবর পেয়ে অনিরুদ্ধ দত্তকে গ্রেফতার করে।

Fake Police: আই কার্ডই ছিল তাঁর 'অপারেশনের' মূল হাতিয়ার! লালবাজারের অপরাধ দমন শাখার 'কর্তার' পর্দাফাঁস
বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে ভুয়ো পুলিশ কর্তার উর্দি ও আই কার্ড (নিজস্ব চিত্র)
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Sep 14, 2021 | 7:40 AM

উত্তর ২৪ পরগনা: ভুয়ো সিরিজে নয়া সংযোজন। নিজেকে লালবাজার (Labazaar) পুলিশের অপরাধ দমন শাখার ইন্সপেক্টর পরিচয় দিয়ে মানুষের থেকে টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগে গ্রেফতার এক যুবক (Fake Police Officer)। বরানগর এমএনকে রোড থেকে ভুয়ো পুলিশ অফিসার অনিরুদ্ধ দত্তকে গ্রেফতার করে বরানগর থানার পুলিশ।

পুলিশ জানিয়েছে, অনিরুদ্ধ দত্ত নিজেকে লালবাজার পুলিশের অপরাধ দমন শাখার ইন্সপেক্টর পরিচয় দিয়ে পায়রাডাঙ্গার বাসিন্দা রথীন মল্লিকের কাছ থেকে টাকা নেন। পুলিশের কাছে রথীন জানিয়েছেন, তিনি ব্যবসা করেন। সেই সূত্রে অনিরুদ্ধর সঙ্গে পরিচয়। তবে চাপ দিয়ে তাঁর কাছ থেকে টাকা আদায় করেছিলেন অনিরুদ্ধ। পরে সন্দেহ হয় রথীনের। খোঁজ খবর নিয়ে রথীন জানতে পারেন এই নামে কোন অফিসার লালবাজারের অপরাধ দমন শাখায় কর্মরত নন।

তারপর সোমবার সকালেই বরনগর থানায় অনিরুদ্ধ দত্তর নামে প্রতাভরণার অভিযোগ দায়ের করেন রথীন। বরনগর থানার পুলিশ গোপন সূত্রে খবর পেয়ে অনিরুদ্ধ দত্তকে গ্রেফতার করে। অনিরুদ্ধকে জেরা করে পুলিশ জানতে পেরেছে, যে সে নকল পরিচয় পত্র ও নকল উর্দি পরে একাধিক ব্যক্তির কাছ থেকে টাকা তুলেছেন।

মঙ্গলবার আদালতে পেশ করা হবে অনিরুদ্ধকে। পুলিশ সাত দিনের হেফাজত চেয়ে ব্যারাকপুর আদালতে আবেদন জানাবে। পুলিশ জানিয়েছে, অনিরুদ্ধর কাছ থেকে উর্দি ভুয়ো আই কার্ড উদ্ধার হয়েছে। সেগুলি তিনি কোথা থেকে পেয়েছিলেন, ঠিক কত জনের সঙ্গে প্রতারণা করেছেন, কত টাকার প্রতারণা করেছেন, তা জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তার হাত ঠিক কতদূর লম্বা, তার সঙ্গে কোনও প্রভাবশালী যোগ রয়েছে কিনা, তা খতিয়ে দেখা পুলিশ। যদিও অনিরুদ্ধর এই ঘটনায় কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।

উল্লেখ্য, চলতি মাসেই ৯ তারিখে ভুয়ো ডিএসপি ধরা পড়েন চন্দননগরে। ধৃত সিদ্ধার্থ চক্রবর্তী চন্দননগরের বক্সি গলির বাসিন্দা। তাঁর গ্রেফতারিতে ছিল অবশ্য চরম নাটকীয়তা। সেদিন রাত পৌনে বারোটা নাগাদ চন্দননগর স্ট্যান্ড রোডে রানিঘাটের কাছে একটি সাদা স্করপিও গাড়িকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখেন পুলিশ আধিকারিকরা। গাড়িটির নম্বর WB 19J 7988, তাতে আবার নীলবাতি ও হুটার লাগানো ছিল। সামনে গভর্নমেন্ট অফ ওয়েস্ট বেঙ্গল-এর স্টিকার লাগানো ছিল। গাড়িটি দেখেই সন্দেহ হয় পুলিশের।

রানিঘাট থাকে ঢিল ছোড়া দূরত্বে চন্দননগর থানা। পুলিশ গিয়ে গাড়িটিকে আটক করে। গাড়ির মধ্যে পুলিশের পোশাক পড়া একজনকে বসে থাকতে দেখা যায়। জিজ্ঞাসা করলে তিনি নিজেকে ডিএসপি পরিচয় দিয়ে প্রথমে পুলিশ অফিসারদেরল ধমকানো চমকানোর চেষ্টা করেন। আবার তাঁর উর্দির কাঁধ বরাবর তিনটে স্টার দেখে এক মুহূর্তের জন্য ওই পুলিশ কর্মীরাও ভেবে নিয়েছিলেন তিনি সত্যিই অফিসার। তার পর যুবকের বুকে নেমপ্লেট লাগানো আছে। যা দেখে সন্দেহের কোনও অবকাশই থাকতে পারে না।

তবে তাঁর সঙ্গে কথা বলতে যেতেই ‘ডিএসপি’-র মুখ থেকে তীব্র অ্যালকোহলের গন্ধ পান পুলিশকর্মীরা। রাস্তার মাঝখানে গাড়ি রেখে মদ্যপান করছেন দুই সঙ্গীর সঙ্গে। এতেই সন্দেহ দানা বাঁধে পুলিশের। একজন ডিএসপি এত রাতে স্ট্যান্ডে মদ্যপান করছেন, আবার সঙ্গে দু’জন সঙ্গী নিয়ে! তাঁকে থানায় নিয়ে গিয়ে জেরা করতেই বেরিয়ে এল আসল সত্য।

মূলত, কসবার দেবাঞ্জন দেব, বরানগরের সনাতন রায় চৌধুরী, বেলঘরিয়ার রাজর্ষি ভট্টাচার্য – ভুয়ো আইএএস, ভুয়ো সিবিআই কৌসুলী, ভুয়ো আইপিএস- ‘ঠগ’দের এই তালিকায় এখন নবতম সংযোজন এই যুবক। এখন দেখার ওই ব্যক্তির হাত কতটা লম্বা!

আরও পড়ুন: Shootout at Kolkata: ‘নির্বিবাদী’, পাড়ার ‘ভালো ছেলে’ পঙ্কজকে কেন গুলি? মিন্টো পার্ক শুটআউটের নেপথ্যে কী কারণ?