Sandeshkhali: ‘আমাদের ভুল হয়েছে’, এতদিনে হাত জোড় করে ক্ষমা চাইছেন সন্দেশখালির নির্যাতিতারা, পা ধরে ক্ষমা চাইতেও প্রস্তুত!

Sandeshkhali: সেই মহিলা আবার মঙ্গলবার বললেন, "গতদিনের জন্য আমরা রেখার কাছে ক্ষমাপ্রার্থী। আমাদেরকে ভুল বোঝানো হয়েছিল। অন্য লোকের দ্বারা, অন্য পার্টির লোক আমাদের ভুল বোঝাচ্ছিল। আমরা সেটা বুঝেছি। আমরা রেখার পাশে রয়েছি।"

Sandeshkhali: 'আমাদের ভুল হয়েছে', এতদিনে হাত জোড় করে ক্ষমা চাইছেন সন্দেশখালির নির্যাতিতারা, পা ধরে ক্ষমা চাইতেও প্রস্তুত!
সন্দেশখালির আন্দোলনকারী মহিলারাImage Credit source: TV9 Bangla
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Mar 26, 2024 | 1:09 PM

সন্দেশখালি: বাচ্চা কোলে নিয়ে তিনি মুখ খুলেছিলেন। সন্দেশখালির নির্যাতিতাদের মুখ হয়ে উঠেছিলেন তিনি। নারী নির্যাতনের ভয়ঙ্কর অভিযোগে সোচ্চার হয়েছিলেন। অভিযোগ করেছিলেন, পুলিশের বেশে বাড়িতে ঢুকে অত্যাচার করা হয়েছে তাঁর ওপর। এমনকি বাদ যায়নি তাঁর কোলের সন্তানও। সংবাদমাধ্যমে এ খবর প্রকাশিত হওয়ার পর প্রশাসন নড়চড়ে বসে। ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় গোপন জবানবন্দির জন্য। সেই রেখা পাত্রকেই শাসকদলের বিরুদ্ধে লড়বার জন্য মুখ করেছে বিজেপি। বসিরহাটের বিজেপি প্রার্থী রেখা পাত্র। কিন্তু রেখা প্রার্থী হতেই সন্দেশখালিতে আবারও মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে বিক্ষোভ। সন্দেশখালির মহিলারাই আবার পথে নামে। পোস্টারে লেখা থাকে, ‘সন্দেশখালির আন্দোলনকারীরা রেখা পাত্রকে চায় না।’ আবার সে খবর শিরোনামে উঠে আসে। ২৪ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই আবার ভোলবদল। এবার সেই মহিলারাই বলছেন, “আমাদের ভুল বোঝানো হয়েছিল…”

সন্দেশখালির বিজেপি প্রার্থী রেখা পাত্রকে নিয়ে রাজনৈতিক টানাপোড়েন। প্রার্থী নাম ঘোষণা হতেই রেখা পাত্রের বিরুদ্ধে সোচ্চার হন সন্দেশখালিরই আন্দোলনকারী মহিলাদের একাংশ। তাঁদের অভিযোগ, প্রার্থী নাম ঘোষণা হতেই দুর্ব্যবহার করা শুরু করেছেন রেখা। এমনকি এলাকা ছেড়ে চলে গিয়েছেন। সন্দেশখালির ভোট তাঁর প্রয়োজন নেই বলেও বলেছেন বলে দাবি তাঁদের। দোলের দিন এই অভিযোগেই ফের উত্তপ্ত হয় সন্দেশখালি।

২৪ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই ভোলবদল করলেন রেখা পাত্রের প্রার্থীপদের বিরোধিতায় থাকা মহিলারা।  যে মহিলা সোমবার বলেছিলেন, “যে নিজের নামটুকুই সই করতে পারে না, সে লোকসভা কী বিধানসভা কোথাওই প্রার্থী হওয়ার যোগ্য নয়।” তিনিই রাতারাতি অবস্থান বদল করে বললেন, “‘আমরা রেখার পাশে আছি। আমাদের ভুল বোঝানো হয়ছিল। রেখা পাত্র আমাদের‌ই একজন। রেখা প্রার্থী হওয়ায় আমরা খুশি।”

বিরোধিতা করা এক মহিলা সোমবার বলেছিলেন, “আমরা পরিশ্রম করেছি বলেই ও আজকে এখানে। ওর কোনও যোগ্যতাই নেই।” সেই মহিলা আবার মঙ্গলবার বললেন, “গতদিনের জন্য আমরা রেখার কাছে ক্ষমাপ্রার্থী। আমাদেরকে ভুল বোঝানো হয়েছিল। অন্য লোকের দ্বারা, অন্য পার্টির লোক আমাদের ভুল বোঝাচ্ছিল। আমরা সেটা বুঝেছি। আমরা রেখার পাশে রয়েছি।”

আরেক বয়স্ক মহিলা সোমবার বলেন, “রেখার মতো প্রার্থী আমাদের দরকার নেই।” তিনি এদিন বলেন, “ওর সঙ্গে আমাদের অনেক পুরনো সম্পর্ক। আমরা প্রথম থেকেই ওর পাশে রয়েছি। আমাদের বাড়িতে লোক এসেছিল। ওরা বলেছিল, আমরা নাকি বিজেপিকে ভোট দিয়েছি। আমরা বললাম না. তারপরও আমাদের পার্টি অফিসে তুলে নিয়ে গেল।” আরেক মহিলা বললেন, “যাঁরা আমাদের ওর সম্পর্কে ভুলভাল বোঝাতে আসবে, ঝাঁটা মেরে বিদায় করব। প্রয়োজনে রেখার বাড়ি গিয়ে পায়ে ধরে ক্ষমা চাইব আমরা।”

তবে এখনও ক্ষোভ রয়েছে একাংশের মধ্যে। সন্দেশখালির আরও এক নেতা বললেন, “প্রার্থী পদ ঘোষণা হওয়ার পরই গ্রামে মা-বোনেদের প্রতি তার যে ব্যবহার, তা বলার মতো নয়। এর জন্য রেখা পাত্রই সম্পূর্ণ দায়ী। যাঁরা প্রার্থী হয়েছেন, তাঁরা লোকের দ্বারে দ্বারে যাচ্ছে ভোট ভিক্ষা করতে। আর রেখা পাত্র ভাগ্যবান। তাঁকে প্রার্থী করা হয়েছে। অথচ তিনিই এলাকা ছাড়া। তাঁকেই মানুষ খুঁজে বেড়াচ্ছে। আর রেখা পাত্র বলছেন, তাঁর সন্দেশখালির মানুষের ভোটের কোনও প্রয়োজন নেই। রেখা পাত্রকে অন্তত ৫০ বার ফোন করা হয়েছে। একবারও ফোন ধরেনি।”

এ প্রসঙ্গে অবশ্য রেখা পাত্রের বক্তব্য, “আমি শুনলাম আমি নাকি বলেছি, সন্দেশখালির ভোট আমার লাগবে না। আমি তো একথা বলতে পারি না। সন্দেশখালির মায়েরাই তো আমাকে এই অবধি পৌঁছেছে। তাই একথা আমি কোনওদিনও বলতে পারব না। সন্দেশখালির মুখ আমি। সন্দেশখালির যত মা রয়েছেন, সবাই প্রার্থী। “