Asansol: ‘নরমাল ডেলিভারি’র জন্য ফেলে রাখা হল! ভয়ঙ্কর পরিণতি প্রসূতি ও গর্ভস্থ সন্তানের

Asansol: সালানপুরের চিতলডাঙার বাসিন্দা বছর তেইশের আন্না রায় প্রসব বেদনা নিয়ে মঙ্গলবার পিঠাকিয়ারি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন।

Asansol: 'নরমাল ডেলিভারি'র জন্য ফেলে রাখা হল! ভয়ঙ্কর পরিণতি প্রসূতি ও গর্ভস্থ সন্তানের
চিকিত্সার গাফিলতিতে প্রসূতি মৃত্যু ঘিরে উত্তেজনা (নিজস্ব ছবি)
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Sep 24, 2021 | 8:03 AM

আসানসোল: কর্তব্যের গাফিলতিতে গর্ভস্থ সন্তান সহ প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগ তুলে হাসপাতালে রোগীর বিক্ষোভ। ঘটনাকে ঘিরে উত্তেজনা আসানসোল (Asansol) সালানপুর ব্লক পিঠাকিয়ারি হাসপাতালে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় সালানপুর থানা ও রূপনারায়নপুর ফাঁড়ির পুলিশ।

সালানপুরের চিতলডাঙার বাসিন্দা বছর তেইশের আন্না রায় প্রসব বেদনা নিয়ে মঙ্গলবার পিঠাকিয়ারি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁর পরিবারের লোকেদের জানিয়েছিলেন, ‘নরমাল ডেলিভারি’ হবে। সেজন্য অপেক্ষা করতে হবে। কিন্তু পরিবারের লোকজনদের অভিযোগ, মঙ্গলবার পেরিয়ে বুধবার হয়ে গেলেও আন্নার ডেলিভারি হয়নি। উপরন্তু নানা রকম শারীরিক অসুবিধা শুরু হয়।

বিষয়টি হাসপাতালে নার্সদের জানান তাঁরা। কিন্তু নার্সরাও আরও অপেক্ষা করার পরামর্শ দেন। যদিও বুধবার দুপুরের দিকে হাসপাতাল থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়, আন্নাকে তাঁরা আসানসোলে অন্যত্র হাসপাতালে নিয়ে যেতে চাইলে নিয়ে যেতে পারেন। শেষমেশ বুধবার বিকেলের দিকে আসানসোল জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।

সেখানে চিকিত্সকরা পরীক্ষা করে দেখেন, গর্ভস্থ সন্তানের আগেই মৃত্যু হয়েছে। আন্নাকে সেখানে ভর্তি করা হয়। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। কিছুক্ষণ চিকিত্সার পর মৃত্যু হয় তাঁরও। এরপরই গ্রামবাসীরা ক্ষোভে ফেটে পড়েন। বৃহস্পতিবার বহু মানুষ দুপুরের পর থেকে হাসপাতালে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন।

মূল অভিযোগ, আসানসোলে রেফার করতে দেরি হওয়ার জন্যই তাঁদের মেয়ের মৃত্যু হল। হাসপাতালের পরিষেবা আরও উন্নত করার দাবি জানান তাঁরা। ওয়ার্ডে কী হচ্ছে তা দেখার জন্য সিসিটিভি বসানোর দাবি জানান তাঁরা। ব্যাপক বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন রূপনারায়ণপুর চিতলডাঙার বাসিন্দারা।

রোগীর এক আত্মীয় বলেন, “আমাদের মেয়ে ধীরে ধীরে অসুস্থ হয়ে পড়ছে, আমরা বুঝতে পারছিলাম। অনেকবার চিকিত্সক, নার্সদের বলি। আমাদের অপেক্ষা করতে বলেন। এদিকে অপেক্ষা করতে করতে আরও খারাপ হতে থাকে পরিস্থিতি। শেষমেশ তাঁরা বলেন, আসানসোলে নিয়ে যেতে পারেন। আমরা নিয়ে গেলাম তড়িঘড়ি। কিন্তু ততক্ষণে সব শেষ! বাচ্চাটা আগেই শেষ হয়ে গিয়েছিল। ওখানে যখন চিকিত্সা হবেই না আগেই রেফার করে দিতে পারতেন।”

পরিস্থিতি সামাল দিতে হাসপাতালে যায় সালানপুর থানা ও রূপনারায়নপুর ফাঁড়ির পুলিশ। তড়িঘড়ি গ্রামবাসীদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক চিকিত্সক সুব্রত সিট, সালানপুর থানার ইন্সপেক্টর ইনচার্জ পবিত্র গঙ্গোপাধ্যায়। বিক্ষোভকারীদের দাবি মতো উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিলে বিক্ষোভ শেষ পর্যন্ত উঠে যায়।

প্রথমদিকে নিজেদের অভিযোগ মানতে না চাইলেও শেষ পর্যন্ত সমস্ত দাবি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ মেনে নেন। ভবিষ্যতে আরও সতর্ক থাকবেন বলে জানিয়েছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এমনকি ব্লকস্বাস্থ্য আধিকারিক রোগী পরিবারের কাছে মৃত্যুর ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করলেও ক্যামেরার সামনে সেরকম কিছুই বলতে চাননি। তবে গর্ভস্থ সন্তান ও প্রসূতি মায়ের মৃত্যুতে হাসপাতালকে সচেতন করা হয়।

আরও পড়ুন: Firhad Hakim: কলকাতার জলযন্ত্রণার জন্য দায়ী উত্তরাখণ্ড!