Daspur Drainage system: খাল কেটে কুমির এনেছে দাসপুর! সেচ দফতরের গাফিলতির জেরে জমির পর জমি বন্ধ্যা
Paschim Medinipur: বিঘার পর বিঘা এই জমিতে কী কী চাষ হত? আলু, পটল, মুলো, বেগুন, ঝিঙে, পাট, তিল, গাঁদা, গোলাপ, পাট, পেঁয়াজ...বাদ নেই কিছুই। খাল কাটার পর থেকেই এমন উর্বর জমি যেন জলাভূমিতে পরিণত হয়েছে।
কী অভিযোগ চাষিদের? খুকুড়দহে উত্তর-দক্ষিণ-পূর্ব-পশ্চিম যেদিকে চোখ যায়, সেদিকেই কেবল ধূ ধূ করছে আগাছার জঙ্গল। গত সাত মাস ধরে থমকে রয়েছে চাষবাস। কৃষকদের অভিযোগ, সাত মাস আগেই খাল কেটেছে রাজ্য সেচ দফতর। তারপর থেকে কার্যত বন্ধ হয়ে গিয়েছে চাষের কাজ। খালই গিলেছে ফসল। চাষের জমি জল-কাদায় ভর্তি।
কেন এমন পরিস্থিতি? এলাকারই এক কৃষকের কথায়, “খাল তো কাটা হয়েছে। জমিতে কাদা ফেলেছে। কিন্তু নিকাশি ব্যবস্থাই বন্ধ করে দিয়েছে। খালে জল বাড়ছে। কিন্তু জল বেরনোর আর রাস্তা নেই।” অন্য আরেক কৃষক বলেছেন, “আগে মাঠের অতিরিক্ত জল ড্রেনের মাধ্যমে নদীতে চলে যেত। খাল কাটার পর থেকে ড্রেনটাই বন্ধ হয়ে গিয়েছে। ফলে আর জল বেরতে পারছে না। জমিতেই জমছে।”
কিন্তু বিঘার পর বিঘা এই জমিতে কী কী চাষ হত? আলু, পটল, মুলো, বেগুন, ঝিঙে, পাট, তিল, গাঁদা, গোলাপ, পাট, পেঁয়াজ…বাদ নেই কিছুই। খাল কাটার পর থেকেই এমন উর্বর জমি যেন জলাভূমিতে পরিণত হয়েছে। কিন্তু, প্রশাসনের কাছে কি এর কোনও খবর নেই? প্রশ্ন শুনেই রেগে যান এক চাষি। তাঁর কথায়, “প্রশাসন! প্রশাসনকে বলে বলে কী হয়েছে! বিডিওকে যখনই বলেছি, বিডিও খালি বলেছে, ‘এ বাবা, তোমার কথাটা বলতে ভুলেই গিয়েছি’ এভাবেই দিন কাটিয়ে গিয়েছে। আমরা এখন দিনভিখারি। আমাদের কোনও চাকরি নেই। আয় নেই।”
খুকুড়দহে কান পাতলে শোনা যায়, খাল কাটা নিয়ে আপত্তি জানিয়েছিলেন গ্রামের কৃষকরা। কিন্তু সেচ দফতরের ঠিকাদার নাকি পাল্টা আশ্বস্ত করেছিলেন, কাজ মিটলে জমি সমতল করে দেওয়া হবে। যাতে জল না জমে। কিন্তু কোথায় কী! সে কথা যে মানা হয়নি তা স্পষ্ট পঞ্চায়েত প্রধানের কথায়।
খুকুড়দহের পঞ্চায়েত প্রধান তপতী মণ্ডল বলেন, “খাল কাটা নিয়ে আমি বাধা দিয়েছিলাম। বিডিও এসডিও-কে বলেছিলাম। লাভ হয়নি। বলা হয়েছিল জমি সমতল করে দেওয়া হবে। কিন্তু তা হয়নি।” সেচমন্ত্রী অবশ্য আশ্বাস দিয়েছেন, সবকিছু নজরে রয়েছে। মন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্রের কথায়, “আমাদের সবদিকে নজর রয়েছে। আমরা ঠিক সময়ে ঠিকভাবে কাজ করব। সব সমস্যা মিটিয়ে ফেলা হবে।”
কিন্তু সেচমন্ত্রীর আশ্বাসের পরেও ঘুম নেই খুকুড়দহের চাষিদের। তাঁদের দাবি, প্রশাসনের আঠারো মাসে বছর। সেখানে কী করে তাঁরা আশ্বস্ত হবেন! সম্প্রতি বন্যা পরিস্থিতি কাটিয়ে উঠেছে দাসপুর। তারপর এভাবে জমির বেহাল দশা। আপাতত প্রশাসনের দিকেই তাকিয়ে কৃষকেরা।
দেখুন ভিডিয়ো: