নিয়ম মেনে নাম জমা মিতার, লক্ষ্মীর ‘কৃপাধন্যা’ অন্য মিতা!
Laxmi Bhandar: লক্ষ্মী ভাণ্ডারে নাম লেখালেন এক মিতা, সুবিধা পেলেন আরেক মিতা! অবাক ঘাটালবাসী
পশ্চিম মেদিনীপুর: এ যেন ‘লাভের লক্ষ্মী নামে খায়’! নিয়ম মেনে নিজের নাম লক্ষ্মীর ভাণ্ডারে (Laxmi Bhandar) নথিভুক্ত করিয়েছিলেন মিতা। সমস্ত নথি যাচাইয়ের পর দুয়ারে সরকার শিবির থেকেই সরকারি আধিকারিকেরা জানিয়েছিলেন যথাসময়ে টাকা পাওয়া যাবে। কিন্তু, আচমকাই বদলে গেল চিত্রপট। সকলে লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের (Laxmi Bhandar) উপভুক্তিকরণের বার্তা পেলেও সেই বার্তা এসে পৌঁছয়নি ঘাটাল ব্লকের দিঘা-আনন্দপুরের বাসিন্দা মিতা ঘোষের কাছে। বরং তাঁর নথিতে সেই সরকারি সুবিধা পেয়েছেন অন্য আরেক মিতা নামের মহিলা! এমনই আজব ঘটনা ঘটেছে ঘাটালে।
ঠিক কী অভিযোগ মিতা ঘোষের? তিনি বলেছেন, “আমি দুয়ারে সরকার শিবির থেকে ফর্ম নিয়েছি। সেখানেই ফর্ম ভরে প্রয়োজনীয় সমস্ত নথিপত্র নিয়ে গত ১৬ তারিখেই সব জমা দিয়েছি। আমার লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্পের জন্য অনলাইনে রেজিস্ট্রেশনও করিয়েছি। সেখানে অনলাইন নম্বরও দেওয়া হয়েছিল। শুধু আমি নই, আমার এলাকার অনেকেই এই অনলাইন নম্বর পেয়েছিল। সময়েই সকলে টাকার ব্য়াপারে বা প্রকল্প চালু হওয়ার বিষয়ে মেসেজ পেতে থাকলেও আমি সেই মেসেজ পাইনি। পরে আমি, দেখি আমার কাগজে অন্য মিতার নামে নাম এন্ট্রি হয়েছে।”
মিতা ঘোষের জামাইয়ের কথায়, “আমার শাশুড়ি মায়ের নাম মিতা ঘোষ। আমাদের পাশের বাড়ির প্রতিবেশীর নামও মিতা। তবে পদবী আলাদা। এখন আমার শাশুড়ির ডকুমেন্টস নিয়ে ওই মহিলার নামে এন্ট্রি করা হয়েছে। ওই প্রতিবেশীনীর কেবল নামটা এক। বাকি সবই আলাদা। তারপরেও কী করে এই ঘটনা ঘটল তা নিয়ে চিন্তা করছি। তবে আমরা মহকুমা শাসককে লিখিতভাবে জানিয়েছি। আশা করছি দ্রুত এই সমস্যার সমাধান হবে। তবে এই ধরনের ভুল সরকারি প্রকল্পে হওয়া সমীচীন নয়।” ঘটনায় মহকুমা শাসক জানিয়েছেন তিনি অভিযোগ পেয়েছেন। গোটা ঘটনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার’ (Laxmi Bhandar) প্রকল্পে বেনিয়ম এই প্রথম নয়। সরকারিভাবে প্রকল্প চালু হওয়ার কথা ঘোষণার পর থেকেই ধূপগুড়ি, মালদা-সহ একাধিক এলাকায় এই দুর্নীতির ছবি সামনে এসেছে। এমনকী, লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের ফর্ম তুলতে গিয়ে পদপিষ্ট হয়েছেন এই ছবিও ধরা পড়েছে। কোথাও বা প্রকল্পের সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার নাম করে মোটা টাকা নেওয়ার অভিযোগও সামনে এসেছে। সম্প্রতি, বিজেপি রাজ্য় সভাপতি দিলীপ ঘোষ রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়ে বলেছেন, “বাংলার মানুষকে ভিখারি বানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। ৫০০ টাকার জন্য মানুষ লাইনে দাঁড়াচ্ছে। মারপিট করছে। পদপিষ্ট হচ্ছে।”
লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের ফর্ম নিয়ে যাতে কোনওরকম দুর্নীতি না হয় সে প্রসঙ্গে আগে থেকেই হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন মুখ্য়মন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কোনভাবেই সেই ফর্ম ফোটোকপি করা যাবে না একথাও জানিয়েছিলেন মমতা। প্রত্য়েক ফর্মে নির্দিষ্টি ইউনিক কোড থাকবে। সেই ইউনিক কোড প্রত্যেক ফর্মের ক্ষেত্রে আলাদা হবে। পাশাপাশি, গ্রাহকদের স্বাস্থ্যসাথী কার্ডও থাকতে হবে তবেই মিলবে ফর্ম এমনই নির্দেশ দিয়েছিল রাজ্য সরকার। লক্ষ্মীর ভাণ্ডারকে কেন্দ্র করে দুর্নীতির একাধিক ছবি সামনে আসায় নড়েচড়ে বসেছে সরকার। সরকারি কর্মচারি ও সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে মঙ্গলবার বৈঠক করতে পারেন তৃণমূল মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়। আরও পড়ুন: ‘বিরুদ্ধস্বর হলেই …’, সাসপেন্ড হওয়া ৩ পড়ুয়াকে সরাসরি বরখাস্ত! প্রশ্নের মুখে বিশ্বভারতীর উপাচার্য