Digha Child Death: লাগাতার বমি, অম্বলের ওষুধ খাওয়ানোর পরও কমেনি, দিঘায় গিয়ে মর্মান্তিক পরিণতি নাবালকের
Digha: জানা গিয়েছে, মৃত ওই নাবালকের নাম মহাদেব রানা। বাড়ি পটাশপুর থানার রামচকে। টেপরপাড়া শশীভূষণ জুনিয়ার হাইস্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্র ছিল সে।
দিঘা: স্কুল পড়ুয়ার মৃত্যুকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা। চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগে চিকিৎসক, নার্স এবং কর্মীদের হেনস্থার অভিযোগ উঠল মৃতের আত্মীয়দের বিরুদ্ধে। ঘটনার জেরে উত্তেজনা ছড়াল হালপাতালে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি সামাল দেয় দিঘা মোহনা কোস্টাল থানার পুলিশ। ভাঙচুরের ব্যাপারে রোগীর পরিবারের লোকজনের বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ লিখিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
জানা গিয়েছে, মৃত ওই নাবালকের নাম মহাদেব রানা। বাড়ি পটাশপুর থানার রামচকে। টেপরপাড়া শশীভূষণ জুনিয়ার হাইস্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্র ছিল সে। এদিন বাবা-মা, প্রতিবেশী ও আত্মীয় পরিজনের সঙ্গে নিজস্ব গাড়িতে করেই এদিন দিঘা বেড়াতে আসে মহাদেব। সকাল সাড়ে ৮ টা নাগাদ দিঘা এসে পৌঁছায় ৩৫ জনের দলটি। দিঘা পৌঁছেই বমি করতে শুরু করে মহাদেব। অম্বলের ওষুধ খাওয়ানোর পরও বমি না থামায় বাড়ির লোকজন তাকে নিয়ে আসেন দিঘা হাসপাতালে।
মৃতের জেঠু অনন্ত কুমার রানা বলেন,”সকালে বাড়ি থেকে চা-বিস্কুট খেয়ে বেরিয়েছিল ছেলেটা। দিঘা পৌঁছেই বমি করতে শুরু করে। অম্বলের ওষুধ খাওয়ানোর পরও বমি না থামায় আমরা হাসপাতালে নিয়ে আসি। যদি হাসপাতাল থেকে ছুটি দিয়ে দিত,তা হলেও বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে উপযুক্ত চিকিৎসার বব্যস্থা করতে পারতাম। সমস্যা গুরুতর কি না আমরা বারবার জিজ্ঞাসা করেছি। কিন্তু ডাক্তারবাবু আমাদের বলেছিলেন, কোথাও নিয়ে যেতে হবে না। সামান্য গ্যাস,অম্বলের সমস্যা। আমরা ঠিক করে দেব। ডাক্তারবাবুর কথায় ভরসা করে আমরা এখানে রোগীকে রেখে দিই। তারপর বিকেলে এই অবস্থা।’
চিকিৎসায় গাফিলতি ছিল কি না তা জানতে মৃতদেহের ময়নাতদন্ত করা হবে বলে জানিয়েছেন হাসপাতাল সুপার সন্দীপ বাগ। তিনি বলেন,’শুক্রবার সকাল ৯ টা ৫০ নাগাদ ১৫ বছরের একজন বাচ্চাকে নিয়ে হাসপাতালে আসেন জনাদশেক। বাচ্চাটির বমির সমস্যা ছিল। ভর্তি হওয়ার পর ডাক্তারবাবু বাচ্চাটিকে দেখেন এবং যা যা চিকিৎসা করার করেন। হঠাৎ করে বাচ্চাটার খিঁচুনি শুরু হয় এবং শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটে। ডাক্তারবাবু তাঁর মতো করে চেষ্টা করেন। তা সত্বেও আমরা বাচ্চাটিকে বাঁচাতে পারিনি। বিকেল ৩ টা ৫ নাগাদ তার মৃত্যু হয়। তারপরই তার বাড়ির লোকজন হাসপাতালে ভাঙচুর করেছে। ৩ টি অক্সিজেন কনসেনট্রেটর মেশিন আছড়ে ভেঙে দেওয়া হয়েছে এবং পুরুষ বিভাগের নার্সিং স্টেশনের সমস্ত কিছু ভাঙচুর করা হয়েছে। ডাক্তারবাবু, নার্স দিদিমণিদের অকথ্য গালিগালাজ এবং মারধর করেছে। এ ব্যাপারে ডাক্তারবাবুরা আমার কাছে অভিযোগ জানিয়েছেন। তবে বাড়ির লোকেরা অবশ্য কোনও অভিযোগ জানায়নি। ”
‘মহাদেবের বাবা বিষ্ণুপদ বলেন,’আমার উপস্থিতিতেই যাবতীয় টেস্ট করানো হয়েছিল। সব রিপোর্টই ঠিক ছিল। পরপর ৪ টা সেলাইন দেওয়া হয়। তারপর কাঁপুনি দিয়ে জ্বর আসে। তখন ইঞ্জেকশন দেওয়া হয়। তারপর ১০ মিনিটের মধ্যে আবার দুটো সেলাইন দেওয়া হয়। এর পর পুরো শরীরটা ঠাণ্ডা হয়ে যায়। তখন আর একটা ইঞ্জেকশন দেওয়ার পরেই ছেলের মৃত্যু হয়।’
এমন ঘটনার পর রোগী মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়তেই পাড়া-প্রতিবেশী ও আত্মীয়স্বজন হাসপাতালে ভিড় করেন। এর পরেই উত্তেজিত হয়ে তাঁরা হাসপাতালের পুরুষ বিভাগে ভাঙচুর চালান এবং চিকিৎসক, নার্স ও কর্মীদের হেনস্থা করেন।