Death by Protein Shake: ‘প্রোটিন শেক’ খেয়ে মৃত্যু! ভারতীয় বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ কিশোরের মৃত্যুতে উঠল স্বাস্থ্য সতর্কতা জারির দাবি

Death by Protein Shake: সিটি স্ক্যানে ধরা পড়ে, তার মস্তিষ্ক অস্বাভাবিকভাবে ফুলে গিয়েছে। চিকিৎসকরা জানান, অস্ত্রোপচার করা যাবে না। তাতে অত্যন্ত ঝুঁকি রয়েছে। ওই অবস্থায় তিনদিন লড়াই করেছিল রোহন, কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাকে বাঁচানো যায়নি।

Death by Protein Shake: ‘প্রোটিন শেক’ খেয়ে মৃত্যু! ভারতীয় বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ কিশোরের মৃত্যুতে উঠল স্বাস্থ্য সতর্কতা জারির দাবি
ছেলের হাতে প্রোটিন শেক তুলে দিয়েছিলেন বাবাইImage Credit source: Twitter
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jun 29, 2023 | 5:22 PM

লন্ডন: উঠতি বয়সের ছেলে, তবে অত্যন্ত রোগা-পাতলা। পেশি মজবুত হবে বলে সুপার মার্কেট থেকে ‘প্রোটিন শেক’ কিনে দিয়েছিলেন বাবা। সেই প্রোটিন শেক খাওয়ার পরই অসুস্থ হয়ে পড়েছিল ১৬ বছরের রোহন গোধানিয়া। তিনদিন পর, পশ্চিম লন্ডনের ইলিং এলাকার এক হাসপাতালের বিছানায় মৃত্যু হয়েছিল ভারতীয় বংশোদ্ভূত এই ব্রিটিশ কিশোরের। দিনটা ছিল ২০২০ সালের ১৫ অগস্ট। সেই সময় ঠিক কী কারণে আচমকা মৃত্যু হয়েছে রোহনের, তা জানা যায়নি। তাঁর অঙ্গ দান করে দেওয়া হয়েছিল। সম্প্রতি, রোহনের অদ্ভুত মৃত্যু নিয়ে বিচারবিভাগীয় তদন্ত হয়েছে। তদন্তে উঠে এসেছে, ওই প্রোটিন শেক থেকেই রোহনের একটি বিরল জিনগত সমস্যা তৈরি হয়েছিল। এর ফলে তার মস্তিষ্কের গুরুতর ক্ষতি হয়েছিল। যার শুশ্রুষা সম্ভব ছিল না।

বিচারবিভাগীয় তদন্তে জানা গিয়েছে, ‘অরনিথিন ট্রান্সকারবামাইলেজ’ বা ‘ওটিসি’ নামে একটি বিরল জিনগত রোগে আক্রান্ত হয়েছিল রোহন। ওই প্রোটিন শেক থেকেই রোগের উৎপত্তি। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, এই রোগ বংশগতভাবেই পেয়েছিল সে। এই রোগ হলে, শরীর অ্যামোনিয়া অণু ভাঙতে পারে না। ফলে রক্তপ্রবাহে ক্রমে অ্যামোনিয়া জমতে জমতে প্রাণঘাতী পর্যায়ে পৌঁছে যায়। রোহন যে প্রোটিন শেকটি খেয়েছিল, তাতে প্রোটিনের মাত্রা অত্যন্ত বেশি ছিল। তা থেকেই ওই রোগে আক্রান্ত হয়েছিল রোহন এবং গুরুতর ক্ষতি হয়েছিল তার মস্তিষ্কের।

তাঁর বাবা পুষ্প গোধানিয়া জানিয়েছেন, প্রোটিন শেকটি খাওয়ার পর প্রাথমিক ভাবে রোহন সুস্থই ছিল। দুপুরের খাবার খাওয়ার সময় সে জানিয়েছিল, তার পেটে ব্যথা করছে। তারপর থেকে সে আর কিছু খায়নি। সন্ধ্যার সময় সে দু-তিনবার বমি করেছিল। তখনও অবধি তার পরিবার নিশ্চিন্তই ছিল। কিন্তু পরদিনই পরিস্থিতি বদলে গিয়েছিল। গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েছিল রোহন। বিছানা থেকে উঠতে পারছিল না সে। তাঁকে দ্রুত ইলিং-এর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। সেখানেও তার স্বাস্থ্যের অবনতি হতে থাকে। ফলে, তাকে আইসিইউ-তে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল।

বাবা-মা এবং দিদির সঙ্গে রোহন

সিটি স্ক্যানে ধরা পড়ে, তার মস্তিষ্ক অস্বাভাবিকভাবে ফুলে গিয়েছে। চিকিৎসকরা জানান, অস্ত্রোপচার করা যাবে না। তাতে অত্যন্ত ঝুঁকি রয়েছে। ওই অবস্থায় তিনদিন লড়াই করেছিল রোহন, কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাকে বাঁচানো যায়নি। সেই সময় রোহনের বিভিন্ন অঙ্গ দান করে দিয়েছিলেন তার বাবা-মা। অঙ্গ প্রতিস্থাপনের প্রয়োজন যাদের, তাদের কাজে লাগবে বলে ভেবেছিলেন তারা। সেই কারণে, দেহের ময়না তদন্তের সময় মৃত্।যুর কারণ হিসেবে অরনিথিন ট্রান্সকারবামাইলেজ ধরা পড়েনি। তবে, যে ব্যক্তি তার অঙ্গ গ্রহণ করেছিল, ১৩ মাস পর তাকেও মারাত্মক খিঁচুনি-সহ হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়েছিল।

এই ঘটনা এক বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। ব্রিটিশ চিকিৎসকরা একযোগে দাবি তুলেছেন, প্রোটিন পানীয়ের প্যাকেজিংয়ে সময় এই বিষয়ে সতর্কতা জারি করা প্রয়োজন। এই বিষয়টি বাধ্যতামূলক করা উটিত নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষের। ওটিসি একটি বিরল রোগ। তবে, যাদের এটি থাকে, এই ধরনের পানীয় পান করলে তাদের গুরুতর ক্ষতি হতে পারে। তাই, প্যাকেজিংয়ে সতর্কবার্তা থাকা অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।