New Al-Qaeda chief: ছিলেন লাদেনের নিরাপত্তা প্রধান, জ়ওয়াহিরির পর আল কায়েদার মসনদে কি এই প্রাক্তন সেনা কর্তা?

New Al-Qaeda chief: জ়ওয়াহিরির মৃত্যু আল কায়েদা জঙ্গি সংগঠনটির পক্ষে এক বিশাল ধাক্কা। নেতৃত্বের ক্ষেত্রে বড়সড় শূন্যতা দেখা দিয়েছে। জ়ওয়াহিরির জায়গায় কে দায়িত্ব নেবেন?

New Al-Qaeda chief: ছিলেন লাদেনের নিরাপত্তা প্রধান, জ়ওয়াহিরির পর আল কায়েদার মসনদে কি এই প্রাক্তন সেনা কর্তা?
নয়া আল কায়েদা প্রধান তাঁর পূর্বসূরির তুলনায় অনেক বেশি নিষ্ঠুর হতে পারেন
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Aug 03, 2022 | 7:10 AM

কাবুল: গত সপ্তাহান্তে আফগানিস্তানের কাবুল শহরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এক ড্রোন হামলায় মৃত্যু হয়েছে আল কায়েদা সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠীর প্রধান আয়মান আল-জ়ওয়াহিরি। জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেওয়ার সময়, মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, “ন্যায়বিচার হয়েছে”। তিনি আশা প্রকাশ করেছিলেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ৯/১১ হামলায় মূল চক্রী জ়ওয়াহিরির মৃত্যু ওই হামলায় নিহত অন্তত ৩,০০০ মানুষের পরিবারবর্গকে “শান্তি” দেবে। নিঃসন্দেহে জ়ওয়াহিরির মৃত্যু লাদেনের হাতে গড়া জঙ্গি সংগঠনটির পক্ষে এক বিশাল ধাক্কা। নেতৃত্বের ক্ষেত্রে বড়সড় শূন্যতা দেখা দিয়েছে। জ়ওয়াহিরির জায়গায় কে দায়িত্ব নেবেন আল কায়েদার?

২০১১ সালে পাকিস্তানের অ্যাবটাবাদে মার্কিন নেভি সিল বাহিনীর হাতে মৃত্যু হয়েছিল আল কায়েদা সংগঠনের প্রাণপুরুষ ওসামা বিন লাদেনের। তারপর সংগঠনের মাথা হয়েছিলেন জ়ওয়াহিরি। মাঝে ওসামার ছেলে হামজা বিন লাদেনকে সংগঠনের প্রধান করা হতে পারে বলে শোনা যাচ্ছিল, তবে ২০১৯ সালে তাকেও নিকেশ করে মর্কিন সেনা। এই অবস্থায় জ়ওয়াহিরির স্থলাভিষিক্ত কে হবেন, সেই প্রশ্নটি বড় হয়ে উঠেছে। এই বিষয়ে কোনও আনুষ্ঠানিক ঘোষণা এখনও পর্যন্ত হয়নি। তবে সূত্রের খবর, একসময় গোটা বিশ্বকে ত্রস্ত করা এই জঙ্গি সংগঠনের নেতৃত্বের দায়িত্ব পেতে পারে প্রাক্তন মিশরীয় কর্নেল সইফ আল-আদেল।

মিডল ইস্ট ইনস্টিটিউটের মতে, আদেলই সম্ভবত আল কায়েদা গোষ্ঠীর পরবর্তী প্রধান হতে চলছে। কে এই সইফ আল-আদেল? মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থার মতে, সে একজন প্রাক্তন মিশরীয় সেনা কর্তা। সে আল কায়েদা গোষ্ঠীর প্রতিষ্ঠাতা সদস্যও বটে। আল কায়েদার আগে মকতব আল-খিদমত বা এমএকে নামে আরেক সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠী সঙ্গে যুক্ত ছিল। সেই গোষ্ঠীরও প্রতিষ্ঠাতা ছিল ওসামা বিন লাদেনই। গত শতাব্দীর আটের দশকে এমএকে প্রতিষ্ঠা করেছিল বিন লাদেন। এই গোষ্ঠীর কাজ ছিল বিশ্বজুড়ে সন্ত্রাসবাদীদের অর্থ প্রদান এবং যোদ্ধা নিয়োগ। সেই সময় আফগানিস্তানে সোভিয়েত রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ চলছে। এমএকে গোষ্ঠী হাজার হাজার যুবকদের আফগানিস্তানে যোদ্ধা হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছিল।

পরবর্তীকালে এই গোষ্ঠীর মধ্যে ভাঙন দেখা দিয়েছিল। বিন লাদেন ও তাঁর সাঙ্গপাঙ্গদের ক্রমবর্ধমান চরমপন্থী দৃষ্টিভঙ্গীর সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারছিলেন না দলের বাকিরা। পরে, ওসামা বিন লাদেনের নেতৃত্বে এমএকে-র একটা চরমপন্থী অংশ দল ভেঙে বেরিয়ে এসে নতুন সংগঠন আল কায়েদা স্থাপন করেছিল। আল কায়েদা গোষ্ঠীতে দারুণ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় ছিল সইফ আদেল। বিন লাদেনের নিরাপত্তা প্রধানের দায়িত্বে ছিল সে। ১৯৯৮ সালে কেনিয়া এবং তানজানিয়ার মার্কিন দূতাবাসে আল কায়েদার বোমা হামলার ঘটনায় তারই হাত ছিল বলে মনে করা হয়।

২০০১ সাল থেকে এফবিআই-এর মোস্ট ওয়ান্টেড তালিকায় রয়েছেন

বস্তুত, আল কায়েদা গঠনেরও অনেক আগে, ১৯৯৩ সাল থেকেই আদেলকে খুঁজছে মার্কিনিরা। ওই বছর সোমালিয়ার মোগাদিশুতে মার্কিন বাহিনী এবং তার একাধিক হেলিকপ্টারের উপর অতর্কিত হামলা চালিয়েছিল সে। ওই ঘটনায় ১৮ জন মার্কিন সেনাকর্মীর মৃত্যু হয়েছিল। সেই সময় আদেলের বয়স ছিল ৩০ বছর। এরপর, ২০০১ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আল কায়েদার হামলার পর, অন্যান্য আল কায়েদা নেতার সঙ্গেই তার নামও এফবিআই-এর ‘মোস্ট ওয়ান্টেড’ তালিকার অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল। এফবিআই তার মাথার দাম ধার্য করেছে ১ কোটি মার্কিন ডলার।

মার্কিন গোয়েন্দাদের দাবি, সাম্প্রতিক সময়ে সইফ আল-আদেলকে ইরানে অত্যন্ত সক্রিয় ভূমিকায় দেখা গিয়েছে। সেখান থেকে সিরিয়ায় অন্যান্য সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠীগুলিকে নিয়মিত টেলিগ্রামের মাধ্যমে বিভিন্ন নির্দেশ দিয়ে থাকে সে। সন্ত্রাসবাদ গবেষকদের মতে, সইফ আল-আদেল শেষ পর্যন্ত জ়ওয়াহিরির স্থালাভিষিক্ত হলে, নয়া আল কায়েদা প্রধান তাঁর পূর্বসূরির তুলনায় অনেক বেশি নিষ্ঠুর হতে পারেন। বিন লাদেনের মতো ক্যারিশ্মা তার নেই। তবে বিশ্লেষকদের আশঙ্কা, নিষ্ঠুরতা দিয়েই যুবদের জঙ্গি সংগঠনের প্রতি আকৃষ্ট করতে চাইবে সে।